সততার সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করুন- রাষ্ট্রপতি
মাদারীপুর। রাষ্ট্রপতি বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী দেশ বর্তমানে যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তা থেকে উত্তরণের জন্য নিজ নিজ দায়িত্ব আন্তরিকতা ও সততার সাথে পালনের জন্য আজ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। হাওলাদার জুট মিল অঙ্গনে এক সংবর্ধনা সভায় রাষ্ট্রপতি চৌধুরী সকল স্তরে উৎপাদন বাড়ানাের জন্য আহ্বান জানান। সংবর্ধনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী শ্রী ফণি ভূষণ মজুমদার, বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিমন্ত্রী জনাব ওবায়দুর রহমান, সাবেক মন্ত্রী এবং বর্তমানে এমপি জনাব মােল্লা জালাল উদ্দিন এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব আবদুর রাজ্জাক। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ত্যাগ তিতিক্ষার সঙ্গে সর্বশক্তি নিয়ােগ করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, ডাক্তার ও অন্যান্য সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এরাই সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এবং সরকার নির্ধারিত সঠিক পথে সাধারণ মানুষকে পরিচালনার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। তিনি বলেন, দেশ এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক পশ্চাদমুখী হতে পারে কিন্তু এর জন্য উদ্বিগ্ন হবার কোনাে কারণ নেই। কারণ আমাদের পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। দেশের উন্নয়ন সম্পূর্ণভাবেই নির্ভর করে জনশক্তির ও প্রাকৃতিক সম্পদকে সঠিক ও সদ্ব্যবহারের উপর। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি চৌধুরী বলেন, এই পরিকল্পনা সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মধ্যে সত্যিকার সােনার বাংলা প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য যান্ত্রিক চাষাবাদ ও কঠোর পরিশ্রমের প্রয়ােজনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে দুইটি রৌপ্য নির্মিত নৌকা ও একটি পদ্ম উপহার দেন। পরে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী হেলিকপ্টার যােগে গােপালগঞ্জে এসে পৌঁছলে তাঁকে আন্তরিক সংবর্ধনা জানানাে হয়। রাষ্ট্রপতিকে হেলিকপ্টারে উঠে রাজনৈতিক, সামাজিক ও ছাত্র নেতৃবৃন্দ মাল্যভূষিত করেন। রাষ্ট্রপতিকে দেখার জন্য হেলিপাের্ট থেকে মিউনিসিপাল হল পর্যন্ত বিপুল লােকের সমাগম হয়।১১
রেফারেন্স: ৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ