ব্যাংক ডাকাতির সাথে কর্মচারীদের যােগসূত্রের কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না – তাজউদ্দীন আহমদ
অর্থ ও পাট বিষয়ক মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ রবিবার ঢাকায় বলেন যে, দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ব্যাংক ডাকাতি ও ক্যাশ ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে ব্যাংকের এক শ্রেণির কর্মচারীর যােগাযােগ থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ রবিবার ঢাকার কারিগরি মিলনায়তনে পূবালী ব্যাংক অফিসার কল্যাণ সমিতির প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভা ও অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভাষণ দিচ্ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পূবালী ব্যাংক অফিসার সমিতির সভাপতি জনাব কে, টি জামান। তিনি বলেন, আজ সােমবার রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক বৈঠকে ব্যাংকের প্রধানদের সাথে মিলিত হবেন এবং ব্যাংক ডাকাতির বিষয়টি নিয়ে আলােচনা করবেন। তিনি বলেন, এই অবস্থা বেশি দিন চলতে পারে না। ডাকাতির সাথে যদি কোনাে কর্মচারীর যােগসাজশ প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অর্থ মন্ত্রী প্রসঙ্গত মুন্সীগঞ্জের পূবালী ব্যাংকের টাকা লুটের বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জ থেকে টাকা আসছে এ খবর না দিলে ঢাকায় বসে দুষ্কৃতিকারীদের সে খবর পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কেউ যদি এ ব্যাপারে ব্যাংকের কর্মচারীদের জড়িত থাকা অনুমান করে তবে তা অমূলক হবে না। অনুরূপভাবে সদরঘাট সােনালী ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির ব্যাপারে সে ব্যাংকের যােগসাজশের অনুমান করাও ভুল হবে না। অবশ্য তিনি বলেন, বিষয়গুলাে এখনাে তদন্ত সাপেক্ষ। এ ব্যাপারে সুচিন্তিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ প্রসঙ্গত বলেন, দুষ্কৃতিকারীদের দমনে দেশের প্রচলিত আইন যথেষ্ট নয়। কেননা দেশের প্রচলিত আইনে ডাকলেই পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায় না। অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, সরকার ব্যাংক ডাকাতি বন্ধ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দুষ্কৃতিকারীরা যতই ক্ষমতাশালী হােক তাকে শাস্তি পেতেই হবে। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বলেন যে, অপরাধীর একটি মাত্রই পরিচয়। তাকে দলমত নির্বিশেষে শাস্তি পেতে হবে। এ ব্যাপারে রাজনীতি নিয়ে ঘাটাঘাটি না করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।৮
রেফারেন্স: ৪ নভেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ