বহু প্রত্যাশিত ভারত ও পাকিস্তান চুক্তি স্বাক্ষরিত হলাে
নয়াদিল্লি। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের ফলে যে লক্ষ লক্ষ লোেক আটকা পড়েছিল তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে আজ পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্বাক্ষরিত চুক্তিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়ােজনীয় বলে বর্ণনা করে বলা হয়েছে যে, এই চুক্তি ভারত উপমহাদেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য আনন্দ বয়ে আনবে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষদূত মি. পি এন হাকসার ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র এবং দেশরক্ষা মন্ত্রী মি. আজিজ আহমদ স্ব স্ব দেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। আগামীকাল বিকালে ঢাকা, নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ থেকে একযােগে চুক্তিটি ঘােষণা করা হবে। ঢাকার সময় হচ্ছে বিকাল সাড়ে ৬টা। গত এপ্রিলে স্বাক্ষরিত ভারত বাংলাদেশ যৌথ ঘােষণার ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রথম ইসলামাবাদ ও পরে নয়াদিল্লিতে বেশ কয়েকদফা কূটনৈতিক আলােচনার পর এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। জানা গেছে যে, পাকিস্তান চুক্তি মােতাবেক আটক সমস্ত বাঙালিকে মুক্তি দিতে এবং ১৯৫ জন ব্যতীত বাদ বাকি সমস্ত যুদ্ধবন্দি ও বাংলাদেশের বহুসংখ্যক পাকিস্তানি নাগরিকের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। আলােচনা সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সমাঝােতা বিচক্ষণতা ও দুরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন, তাতে পাকিস্তান ও ভারত উভয় দলের নেতা বঙ্গবন্ধুর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। চুক্তি স্বাক্ষরের পর পরই ভারতীয় দলের নেতা সাংবাদিকদের বলেন যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সহিষ্ণুতা ও দূরদর্শিতা ছাড়া এই চুক্তি স্বাক্ষর সম্ভব হতাে না। মি. হাকসার এ প্রসঙ্গে ভারতীয় ও পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর শুভ প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। পাকিস্তান দলের নেতা মি. আজিজ বলেছেন, যখন আলােচনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তখন তিনটি দেশের প্রধানমন্ত্রীদের দূরদর্শিতা ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার ফলেই তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।৮৪
রেফারেন্স: ২৮ আগস্ট ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ