মওলানা ভাসানী অশুভ খেলায় মেতে উঠেছেন
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব জিল্লুর রহমান, ন্যাপের মােজাফফর আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মি. পঙ্কজ ভট্টাচার্য ও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুস সালাম শনিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে দেশের স্বাধীনতা বিরােধী চক্রান্তকারীদের রুখে দাঁড়াবার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। উক্ত বিবৃতিতে তারা ন্যাপ প্রধান মওলানা ভাসানী সম্পর্কে বলেন, যখন দেশপ্রেমিক দলগুলাে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দুর্নীতিবাজদের প্রতিরােধ করে জনজীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানের সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধভাবে উদ্যোগ ও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তখন মওলানা ভাসানী হরতাল আহ্বান করেছেন। মওলানা ভাসানী আগামী ২৯ আগস্ট কি উদ্দেশ্যে কার স্বার্থে হরতাল করতে চাচ্ছেন? তারা বলেন গত মে মাসে মওলানা ভাসানীর তিন দফা দাবির হরতালের উদ্দেশ্য দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি যে তখন এশীয় শান্তি সম্মেলনকে পন্ড করে দেবার জন্য তিন দফা দাবি তুলেছেন দেশবাসী তার এই ফন্দি বুঝতে পেরে ধিক্কারে সােচ্চার হয়েছিল সারাদেশেই। যুক্ত বিবৃতিতে আরাে বলা হয় যে, মওলানা ভাসানী তার তিন দফা আন্দোলন উগ্র ভারত বিরােধিতা এবং সাম্প্রদায়িকতার আড়ালে এক অসভ্য খেলায় মেতেছেন। আগামী ২৯ আগস্ট হরতাল অরাজকতা এবং সাম্প্রদায়িকতার ভিন্নরূপটি প্রকাশেরই নামান্তর। এভাবে মওলানা ভাসানী চীন মার্কিন পাকিস্তানের বিরােধী চক্রান্তকে কার্যকরি করতে চাচ্ছেন। নেতৃবৃন্দ প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন যে, বর্তমান সমস্যায় জর্জরিত দেশবাসীকে মরতে দেয়া যাবে না এবং কোনাে অরাজকতার প্রশ্রয় দেয়া চলবে না। দেশে চোরাচালানী, মজুতদার, মুনাফাখাের ও দুর্নীতিবাজদের কবর রচনা করে কৃষি এবং শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে এবং দেশি বিদেশি স্বাধীনতা বিরােধী চক্রকে পরাস্ত করতে হবে। এ মহৎ উদ্দেশ্যে মওলানা ভাসানী ও তার দল ভারতীয় বস্ত্র পুড়িয়ে বস্ত্র সংকট আরাে তীব্র এবং অরাজকতা সৃষ্টি করতে চান। পরিশেষে। আওয়ামী লীগ ও ন্যাপ ও কমিউনিস্ট নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা দেশবাসী ভাইবােনদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন দেশের বর্তমান সংকটের পরিস্থিতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল স্বাধীনতা। বিরােধী চক্রান্তকে প্রতিরােধ করি, অরাজকতা, গুপ্ত হত্যা, দুষ্কৃতিকারী, মজুতদার, চোরাচালানী প্রভৃতি সমাজ বিরােধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। সাম্প্রদায়িকতা, অরাজকতা ও সকল প্রকার প্রতিক্রিয়া উস্কানিকে প্রতিরােধ করি। হরতালের নামে অরাজকতা ও সংকট বৃদ্ধির হীন প্রচেষ্টাকে প্রতিরােধ করি।৮০
রেফারেন্স: ২৬ আগস্ট ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ