জাতীয় স্বার্থে কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান- তাজউদ্দীন আহমদ
অর্থ ও পাটমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ শ্রমিকদের প্রতি জাতির এবং নিজেদের স্বার্থে কঠোর পরিশ্রম করে অধিক উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে জুট প্রাইস স্ট্যাবুইজেশন কর্পোরেশন কর্তৃক লাকী পারচেজের উদ্বোধনকালে মন্ত্রী মহােদয় উপরােক্ত মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অসম্ভব এবং অবাস্তব দাবি দাওয়ার জন্য শ্রমিকদের ধর্মঘটের মতাে চরম ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত নয়। সরকার তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি দাওয়ার প্রতি সব সময় সহানুভূতিশীল বলে জনাব তাজউদ্দীন উল্লেখ করেন। মন্ত্রী মহােদয় পাটকে দেশের স্বর্ণ বলে অভিহিত করে বলেন, বাংলাদেশ কখনাে বিশ্বের পাটের বাজার হারাতে পারে না। আমরা অবশ্যই আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং চুক্তিসমূহ রক্ষা করে যাব। চুক্তিসমূহ রক্ষায় ব্যর্থ হলে বাণিজ্য ক্ষেত্রে কি ধরনের ক্ষতি সাধিত হয় তার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারকে এখন বিপুল পরিমাণ অর্থ ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। কারণ ক্রেতাদের সাথে সরকারের যে চুক্তি ছিল তা ঠিকমতাে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তিনি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম করে উৎপাদন বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা যদি ঠিকমতাে পাট সরবরাহ দিতে পারি তাহলে শুধুমাত্র বিদেশি ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হবাে। মন্ত্রী মহােদয় বলেন, উৎপাদন যদি বৃদ্ধি না করা যায় তবে শ্রমিকদের দাবি পূরণ করা সম্ভব নয়। অল্প বৃদ্ধি পেলেই জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে এবং একমাত্র উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমেই তা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শ্রমিকদের দেশ গড়ার সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, দাবি দাওয়ার ধারা অবশ্যই পাল্টিয়ে দেয়া উচিত। পূর্বাহ্নে তিনি দুই রকমের পাট প্রতীক হিসাবে ক্রয় করেন। এর একটির মূল্য ছিল ৫৯ টাকা এবং অপরটির দাম সােয়া ৫৮ টাকা। এর আগে জেবিএসসি’র ডাইরেক্টর বলেন, কর্পোরেশন পাট ক্রয়ের জন্য চলতি বছরে মােট ১০০টি কেন্দ্র খুলবে এবং ২৫ লাখ মণ পাট ক্রয়ের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। গত বছরে কর্পোরেশন ১ কোটি ১০ লাখ টাকা উপার্জন করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।৫৩
রেফারেন্স: ১৭ আগস্ট ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ