বন্যার্তদের সর্বপ্রকার সাহায্য দেয়া হবে বঙ্গবন্ধুর আশ্বাস
নাটোর। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহের বন্যাদুর্গত এলাকায় জনগণের খাদ্য, আশ্রয় ও বস্ত্রের আশ্বাস দান করেছেন। বন্যাদুর্গত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি অবলােকনের জন্য বঙ্গবন্ধু ময়মনসিংহ, পাবনা এবং রংপুরের উপর দিয়ে ৪ ঘণ্টাব্যাপী বিমানযােগে ঘুরে বেড়ান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্যার ধ্বংসলীলা সম্পর্কে পরে সাংবাদিকদের জানান যে, এই প্রলয়ঙ্করী বন্যার ফলে এলাকার ফসলের অপরিমেয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কয়েক কোটি লােক প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষভাবে বন্যার শিকারে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টার যােগে বন্যার ধ্বংসলীলা অবলােকনের সময় দেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেওয়ানগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রাম অবতরণ করেন। বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী খন্দকার মােশতাক আহমদ রেডক্রস প্রধান জনাব গাজী গােলাম মােস্তফা এবং প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব জনাব তােফায়েল আহমেদও বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টার হতে অবতরণ করলে সকল স্থানেই নারী-পুরুষ শিশু নির্বিশেষে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত সকল প্রতিকুলতা অগ্রাহ্য করে তাকে একনজর দেখার জন্য ছুটে আসে এবং বিপুলভাবে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করে।
বিত্তশালীদের প্রতি আবেদন : বঙ্গবন্ধু বন্যাদুর্গত এলাকার দুঃস্থ মানুষের মুক্ত হস্তে সাহায্য দানের জন্যে দেশের বিত্তশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং সরকারি কর্মচারীদের বন্যাদুর্গত জনসাধারণের সুষ্ঠু তত্ত্বাধানের নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি তাদের সাথে সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ সামগ্রী বণ্টনের ওপর বিশেষ। গুরুত্ব আরােপ করেন। বঙ্গবন্ধু ঘােষণা করেন যে, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সামগ্রীর কোনাে অভাব হবে না। তিনি বলেন, সম্ভাব্য সকল স্থান হতেই আমি ত্রাণ সামগ্রীর ব্যবস্থা করব। কিন্তু আমি যেটা চাই সেটা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত লােকদের মধ্যে তা যেন যথাযথ ও সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে, ত্রাণ সামগ্রী বণ্টনের ক্ষেত্রে কোনােরূপ অব্যবস্থা অথবা আত্মসাৎ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।১২০
রেফারেন্স: ৩০ জুন ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ