You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.05.16 | দালাল আইনে দণ্ডিত ও অভিযুক্ত কয়েক শ্রেণির ব্যক্তির প্রতি ক্ষমা ঘােষণা | দৈনিক পূর্বদেশ - সংগ্রামের নোটবুক

দালাল আইনে দণ্ডিত ও অভিযুক্ত কয়েক শ্রেণির ব্যক্তির প্রতি ক্ষমা ঘােষণা

ঢাকা। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালের দালাল (বিশেষ ট্রাইবুন্যাল) আইনে সাজাপ্রাপ্ত বা অভিযুক্ত কয়েক শ্রেণির ব্যক্তির প্রতি আজ ক্ষমা ঘােষণা করেছেন। অবশ্য এটা ২৮টি ধরনের যেকোনাে একটি বা সব কটিতে সাজাপ্রাপ্ত বা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য হবে না। এই আঠারােটি অপরাধের মধ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা বা তার চেষ্টা করা, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, অগ্নিসংযােগ উল্লেখযােগ্য। তাছাড়া উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে দখলদার বাহিনীর সাথে যােগসাজশ অথবা দেশের ভিতরে বা বাইরে দখলদার বাহিনীর পক্ষে প্রচারকার্য কিংবা সাবেক পূর্ব পাকিস্তান বা পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পদ গ্রহণের মাধ্যমে দখলদার বাহিনীর সাথে সহযােগিতা করার দায়ে যারা সাজাপ্রাপ্ত বা অভিযুক্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযােজ্য হবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের বিবৃতিতে বলা হয় যে, জেল বা হাজতে আটক যারা এ ক্ষমার সুযােগ নিতে চান কিংবা যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরােয়ানা বা সমন রয়েছে এবং যারা পলাতক রয়েছেন, তাদেরকে এই ঘােষণা প্রকাশের ৩ সপ্তাহের মধ্যে সদাচরণের ব্যক্তিগত মুচলেকা প্রদান এবং লিখিতভাবে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের জন্য মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে যথাক্রমে হাজির বা আত্মসমর্পণ করতে হবে।
ব্যক্তিগত মুচলেকা : ব্যক্তিগত মুচলেকা প্রদান ও বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘােষণার পর সাজাপ্রাপ্তদের ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারা মােতাবেক দণ্ড মওকুফের পর জেল থেকে খালাস দেয়া হবে। বিচারাধীন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা মােতাবেক বিশেষ ম্যাজিষ্ট্রেট বা বিশেষ ট্রাইবুনালের অনুমতিক্রমে মামলা প্রত্যাহারের পর তাদেরকে হাজত থেকে মুক্তি দেয়া হবে। অবশ্য এই আইন ছাড়া অন্য আইনে বিচার বা শাস্তিযােগ্য অপরাধের দায়ে তাদের প্রতি সমন জারি করা না হলে এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরােয়ানা বা সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ প্রত্যাহার বা বাতিলের পরেই তারা মুক্তি পাবে। যারা দখলদার আমলে গভর্নর, মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত ছিলেন কিংবা আল বদর ও আল সামসের সদস্য বা রাজাকার কমান্ডার অথবা জেলা, মহকুমা ও থানা শান্তি কমিটির সভাপতি, আহ্বায়ক বা সেক্রেটারি কিংবা কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্য ও কর্মকর্তা ছিল তারা ক্ষমার সুযােগ পাবে না। যারা মুক্তিযােদ্ধাদের তৎপরতা দমনের উদ্দেশ্যে তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে দখলদার বাহিনীকে সাহায্য করেছিল বা এ তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে সুবিধা ভােগ করেছিল তারাও এই ক্ষমার সুযােগ পাবে না।৬৩

রেফারেন্স: ১৬ মে ১৯৭৩, দৈনিক পূর্বদেশ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ