You dont have javascript enabled! Please enable it! 1973.04.23 | সাধারণ পণ্য কেনার জন্য বন্ধুরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান | দৈনিক সংবাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সাধারণ পণ্য কেনার জন্য বন্ধুরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান

বাংলাদেশ থেকে প্রচলিত ও সুপরিচিত পণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্য ক্রয় করে বাংলাদেশকে সুষম লেনদেন বজায় রাখতে সাহায্য করার জন্য বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব কামারুজ্জামান সােমবার বন্ধুদেশগুলাের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জনাব কামারুজ্জামান সােমবার অপরাহ্নে মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় সােভিয়েত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম প্রদর্শনী উদ্বোধন করছিলেন। জনাব কামারুজ্জামান বলেন, লেনদেন পরিস্থিতিকে সুষম রাখার প্রয়ােজনকে যে সব দেশ উপলব্ধি করেছে, বিশেষভাবে সে সব দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে বাংলাদেশ আগ্রহশীল। বাণিজ্যমন্ত্রী আরাে বলেন যে, বাংলাদেশ তার আমদানিকে যতদূর না হলে নয়, এমন নিম্নমাত্রায় সীমিত রাখবে। কারণ, উদারভাবে তৈরি মাল আমদানি করে বাংলাদেশ তার মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা নিঃসৃত হতে দিতে পারে না। তিনি বলেন, যথাসম্ভব শীঘ্রই অত্যাবশ্যকীয় ভােগ্য পণ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্য আমরা গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, বৈদেশিক সাহায্যের ওপর আরাে কম নির্ভরশীল হওয়ার ব্যাপারে আমাদের সংকল্পের সাথে এ লক্ষ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাণিজ্যমন্ত্রী দু’দেশের লক্ষ্য, গন্তব্য ও অভীষ্টকে এক ও অভিন্ন বলে বর্ণনা করে আশা প্রকাশ করেন যে, সমাজতন্ত্রের পাদপীঠ সােভিয়েত দেশ এই নবীন জাতিকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে। জনাব কামারুজ্জামান বলেন যে, বাংলাদেশ ও সােভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে বর্তমানে যে সুমধুর ও ফলপ্রসূ বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে তা আরাে জোরদার করার জন্য বাংলাদেশ সরকার সম্ভাব্য সকল সহযােগিতা দান করবে। মন্ত্রী বলেন যেসব সােভিয়েত যন্ত্রপাতি প্রদর্শিত হচ্ছে তা এই যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দরকারি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের অন্য যেকোনাে উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশও উন্নত হবে এবং এ দেশ চিরদিন বন্ধু দেশের ঋণ ও দানের ওপর চলতে পারে না। তিনি বলেন যে, অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী উৎপাদনের জন্য এ দেশের নিজস্ব শিল্প থাকতে হবে। আর একমাত্র এই পন্থায় বাংলাদেশ সম্মানের সাথে বাঁচতে পারে। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের উৎপাদনকারী ও অন্যান্য শিল্পোন্নত সােভিয়েত ইউনিয়নে কারখানার কলকজা ও যন্ত্রপাতির সাম্প্রতিকতম ধারা সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। তিনি আশা করেন যে, আসন্ন মাসগুলােতে সােভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বাংলাদেশের বিনিময় বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। পূর্বাহ্নে বাংলাদেশে নিযুক্ত সােভিয়েত বাণিজ্য প্রতিনিধি মি. ভি. জাভেরভ মন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বলেন যে, এ প্রদর্শনী দুদেশের মৈত্রী বন্ধনকে আরাে জোরদার করবে। তিনি বলেন যে, গত নভেম্বরে দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ৩ বছর মেয়াদী পণ্য বিনিময় চুক্তিও পারস্পরিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করবে।৭১

রেফারেন্স: ২৩ এপ্রিল ১৯৭৩, দৈনিক সংবাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ