কাজী জাফরকে আমি নির্বাচন বর্জনের পরামর্শ দিয়েছিলাম- মওলানা ভাসানী
ভা, ন্যাপ প্রধান মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, নির্বাচন নয়এক মাত্র সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমেই সমাজতন্ত্র আসবে। এই জন্য আমি আমার পার্টির সাধারণ সম্পাদক কাজী জাফর ও অন্যান্যদের নির্বাচন বয়কটের পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথা কর্ণপাত না করে গণতন্ত্রের প্রতি মােহাচ্ছন্ন হয়ে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়। স্বাভাবিক কারণে নির্বাচনে তাদের বিপর্যয় ঘটে।’ আজাদ প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে বর্ষীয়ান জননেতা মওলানা ভাসানী বলেন, আওয়ামী লীগের এ বিজয়ে উল্লসিত হওয়ার কারণ নেই। যেভাবে ক্ষমতাসীন দল এ নির্বাচনে বিপুল আসন লাভ করেছে তার তুলনায় বিরােধী দলের প্রতিনিধির সংখ্যা খুবই নগণ্য। সুতরাং পরিষদে সুস্থ এবং শক্তিশালী বিরােধী দলের অনুপস্থিতিতে সুষ্ঠু সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটতে পারবে না। আর সংসদীয় গণতন্ত্রের বিকাশ না ঘটলে একদলীয় একনায়কতন্ত্র কায়েম হতে পারে। মওলানা সাহেব আরাে বলেন, এবারের নির্বাচন জনগণের মানসিকতাকে ২৫ বছর এগিয়ে নিয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক চেতনাবােধ মানুষের বেড়েছে। এ উপলব্ধি দেখে সমাজতন্ত্রের সফল বিপ্লবের সহায়ক হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মওলানা সাহেব বলেন, শক্তিশালী বিরােধী দল ব্যতীত দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ভুয়া প্রতিপন্ন হবে। এক্ষেত্রে তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংসদের ভিতরে ও বাইরে শক্তিশালী বিরােধী দল থাকা বাঞ্ছনীয়। কথােপকথনকালে এক পর্যায়ে মওলানা সাহেব অভিযােগ করে বলেন যে, এবারের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে এবং ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি। সর্বশেষ প্রশ্নের জবাবে মওলানা সাহেব বলেন, তার দল এদেশের মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা তথা সমাজতন্ত্র কায়েমে আপসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।৩৮
রেফারেন্স: ১০ মার্চ ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ