গুপ্তহত্যার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের সভা
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এম এ রশীদ যুবসমাজের নয়নমণি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক শেখ ফজলুল হক মণির জীবন নাশের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গণ-আদালতে বিচার করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ধৃত চার ব্যক্তি প্রকৃত দোষী নয়। আসল দোষী ব্যক্তিদের তদন্ত করে উদঘাটন করতে হবে। এবং গণআদালতে তাদের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। জনাব রশীদ গত সােমবার মধুর রেস্তোরায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক, বাংলার রাজনীতি জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র শেখ ফজলুল হক মণির জীবন নাশের প্রচেষ্টার প্রতিবাদে সবাই বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এই প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সদস্য জনাব হারিস উদ্দিন এবং বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রথম সহ-সভাপতি জনাব মনিরুল হক চৌধুরী, অন্যতম সহ-সভাপতি বাবু চন্দন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব শফিউল আলম প্রধান, প্রচার সম্পাদক জনাব মাে. আবুল হাসান এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব শাহাদাত হােসেন।
জনাব রশীদ তার ভাষণে বলেন যে, যুব নেতা ফজলুল হক মণিকে হত্যার প্রচেষ্টার সঙ্গে বিদেশিদের ষড়যন্ত্র রয়েছে। তিনি বলেন, জাসদের তথাকথিত নেতাগণ আগামী নির্বাচনে ভরাডুবির কথা ভেবে বিদেশি চক্রান্তে মেতে ওঠে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। জনাব রশীদ বলেন ‘৭০ সালে ভাসানী নির্বাচন বানচালের হুমকি দিয়েছিলেন কিন্তু জনগণের রায়ের কাছে ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এবারও জনগণ ৭ মার্চ ভােট দেবে। যদি কারাে সাধ থাকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে জনগণই তার জবাব দেবে। জনাব মনিরুল হক চৌধুরী তার ভাষণে বলেন, যে মুহূর্তে বাংলার রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র শেখ ফজলুল হক মণি সমাজতন্ত্রে উত্তরণের সমস্ত বাধা অতিক্রম করার জন্যে আমলাতন্ত্র, লাইসেন্স, পারমিটধারী, উঠতি পুঁজিপতি ও সমাজবিরােধীদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানের কর্মসূচি ঘােষণা করেছেন সেই মুহুর্তেই সমাজতন্ত্রের বিরােধী চীনআমেরিকার অর্থে পুষ্ট রব-জলিলেরা হন্যে হয়ে তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তিনি জানান, সমাজতন্ত্র, শুদ্ধি অভিযান, সামাজিক বিপ্লবে যারা বিশ্বাস করে তাদেরকে শেখ ফজলুল হক মণির উপর হামলায় বিস্মিত করতে পারবে না। রক্তের উপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মী তাদের উদ্দেশ্যে মুজিববাদের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র কায়েমের সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। জনাব শফিউল আলম প্রধান তার ভাষণে বলেন যে, বিগত ‘৭০ সালের নির্বাচনে জনগণ বঙ্গবন্ধুর ৬দফার পক্ষে ভােট দিয়ে স্বাধীনতা আনতে সহায়তা করেছে। এবারও জনগণ মুজিববাদের কর্মসূচিতে কৃষকরাজ-শ্রমিকরাজ কায়েম করে শােষণহীন সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনের রায় দেবে। নিশ্চিত জেনেই চীন-আমেরিকার দালাল তথাকথিত বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নেতারা বৈজ্ঞানিক উপায়ে গুপ্ত হত্যা চালিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে যাচ্ছে।২৩
রেফারেন্স: ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ