সংবিধান বিরোধী প্রচলিত আইন ও বিধি-ব্যবস্থা বাতিল করা হবে
আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন শনিবার বলেন যে, ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান কার্যকরী হওয়ার পর প্রচলিত আইনের যেসব বিধান স্বাভাবিকভাবে অকেজো বা বাতিল হয়ে যাবে সেগুলির তালিকা। প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রচলিত আইনসমূহের পর্যালোচনার কাজে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বাসস প্রতিনিধির সাথে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের আইনজ্ঞ আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন বলেন যে, সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যহীন সকল প্রচলিত আইন বাতিল হয়ে যাবে। কারণ সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন এবং সংবিধান কার্যকরী হবার সঙ্গে সঙ্গেই মৌলিক অধিকারও কার্যকরী করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন যে, সংবিধান বাস্তবভাবেই দুটি প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি কার্যকরী হবে। প্রথমতঃ সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যহীন কোনো আইনের ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আদালতে তার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করা যাবে। এবং এভাবে সংশ্লিষ্ট আইন বাতিল হয়ে যাবে। দ্বিতীয়তঃ আইন দফতরও সংবিধান বিরোধী বিধিবিধান বাতিলের জন্য প্রচলিত আইন পর্যালোচনা করছে। আইনমন্ত্রী বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রচলিত কালাকানুনসমূহের ভিত্তিতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। বৃটিশ ও পাকিস্তানি আমলে এইসব কালাকানুন প্রণীত হয়েছে। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে এই সব কালাকানুন প্রয়োগ করে নাই। এবং এইগুলি প্রকৃতপক্ষে অকেজো হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন যে, দেশের মৌলিক আইনে সকল নাগরিকের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। সকল নাগরিকই আইনের আশ্রয় গ্রহণের এবং আদালতে বিচার প্রার্থী হওয়ার অধিকারী। আইনমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, সংবিধানের আলোকে প্রচলিত আইন-কানুন বাতিল, সংশোধন এবং পরিবর্তন করার জন্য আইন দফতর একটি ব্যাপক ভিত্তিক সুপারিশ পেশ করবে। তবে এই কাজ শেষ করতে কিছুটা সময় প্রয়োজন হবে, এই উদ্দেশ্যে আইন দফতরের বিশেষজ্ঞদের একটি সেল গঠন করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, বর্তমানে অস্থায়ী শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থা হতে শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তোরণে বিশেষ কোনো অসুবিধা হবে বলে তিনি মনে করেন না। এই প্রসঙ্গে তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, সংবিধানেই সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং রাষ্ট্রপ্রধানকে যে কোনো ধরনের অসুবিধা দূর করার জন্য অর্ডিন্যান্স জারির ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।৩৫
রেফারেন্স: ৯ ডিসেম্বর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ