শেখ মুজিবের গ্রেফতার, মুক্তি
শেখ মুজিবর রহমান গতকাল শনিবার বলেন যে, তিনি প্রথমে মওলানা ভাসানী ও পরে জনাব জেড এ ভুট্টো, বিচারপতি জনাব এস এম মুর্শেদ, এয়ার মার্শাল আসগর খান এবং জেনারেল আজম খানের সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আলােচনার পর ‘ডাক’ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন।
শেখ সাহেব গতকাল ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বাসগৃহে পৌছানাের অল্প পরেই সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন যে, ছাত্রদের ১১-দফা কর্মসূচীর প্রতি তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, তিনি আগামীকাল সােমবার রাওয়ালপিন্ডির পথে লাহাের গমন করবেন। লাহােরে তিনি এয়ার মার্শাল আসগর খান, জেনারেল আজম খান প্রমুখের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
শেখ সাহেব বলেন, তিনি রাওয়ালপিন্ডি গমন করবেন, তবে তার অর্থ এই নয় যে, তিনি গােলটেবিল বৈঠকে যােগদানের জন্য যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি তাঁর মন্তব্য ব্যাখ্যা করেননি।
তিনি আরাে বলেন যে, তিনি আজ রবিবার রেসকোর্সের জনসভায় তাঁর বক্তব্য পেশ করবেন।
সাংবাদিকদের সাথে তিনি যে কয়েক মিনিট আলােচনা করছিলেন, সে সময় তাঁর বাড়ির চতুর্দিকে সমবেত জনতা মুহুর্মুহু ধ্বনি দিতে থাকেন।
ইতিপূর্বে তার ধানমন্ডি বাসভবনে জমায়েত জনতার উদ্দেশ্যে বক্তৃতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, আমি জালেমকে ঘৃণা করি, মানুষকে ভালােবাসি, আজকের সংগ্রাম জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রাম। এই সংগ্রাম শােষকের বিরুদ্ধে শােষিতের।
সাম্প্রতিক আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শেখ মুজিব বলেন, শহীদের রক্তদানকে আমরা ভুলতে পারি না। শহীদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।
বিপুল করতালির মধ্যে শেখ মুজিব ঘােষণা করেন, ছয়-দফা আমি মানি। ছাত্রদের এগারাে-দফাও আমি মানি। তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষের দাবিও আমি মানি। তিনি শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।
Reference: দৈনিক পাকিস্তান, ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯