রাজবন্দীর আশু মুক্তি দিন
দেশরক্ষা আইনে আটক সকল রাজনৈতিক শ্রমিক ও ছাত্র নেতৃবৃন্দের আশু মুক্তির। ও ডি, পি, আর প্রত্যাহারের দাবী জানাইয়া এবং শেখ মুজিবর রহমান, জনাব। তফাজ্জল হােসেন ও মিজানুর রহমান চৌধুরীর স্বাস্থ্যের অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করিয়া গতকাল ৯ জন জাতীয় পরিষদ সদস্য এক যুক্তবিবৃতি প্রদান করিয়াছেন। বিবৃতিতে স্বাক্ষর প্রদান করেন বিরােধীদলের নেতা জনাব আমীর আলী, সহকারী জনাব বকশ বেজেঞ্জো পার্লামেন্টারী পার্টির সাধারণ সম্পাদক জনাব কামরুজ্জামান, সদস্য অধ্যাপক ইউসুফ আলী, জনাব হাসান শেখ, জনাব গাউস বকশ বেজেঞ্জো, জনাব মুজিবর রহমান চৌধুরী, জনাব এ, বি, এম, নূরুল ইসলাম ও খাজা খয়েরুদ্দিন।
বিবৃতিতে তাঁহারা বলেন, “আমরা জানিতে পারিলাম যে, শেখ মুজিবকে নির্জন কারাকক্ষে রাখা হইয়াছে। সেখানে বাহিরের আলােবাতাস প্রবেশ করিতে পারে না। সেলটির ২০ গজের মধ্যে প্রায় শতাধিক পাগলকে রাখা হইয়াছে। এই অবস্থায় মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা কঠিন। কারাগারে তাঁহার চিকিৎসা সম্ভব নয়।
জনাব তফাজ্জল হােসেনের স্বাস্থ্যের এতদূর অবনতি ঘটিয়াছে যে, তাঁহাকে পুলিস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হইয়াছে।
বন্দীদের চরম দুর্দশা
উপরােক্ত ২জন ছাড়া বহুসংখ্যক রাজবন্দী দূরারােগ্য রােগে ভুগিতেছেন। সেলটির মধ্যে প্রায় শতাধিক বন্দী রাখা হইয়াছে। এই মানসিক ও শারীরিক অসুস্থ হইয়া পড়িয়াছে। কারাগারে বন্দীকেই তৃতীয় শ্রেণীভূক্ত করা হইয়াছে। তাহাদিগকে দৈনিক মাত্র দেড় টাকা খােরাকি ও মাসে পকেট খরচ বাবদ সর্বমােট ৫ টাকা প্রদান করা হইতেছে। পূর্বে বন্দীদের আত্মীয়-স্বজনরা তাঁহাদের নামে জেলগেটে টাকা জমা দিতে পারিতেন। বর্তমানে তাহাও বন্ধ করা হইয়াছে। ফলে কোনাে। দেশরক্ষা বন্দী একান্ত প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করিতে পারিতেছেন না। বিষয়টির সর্বাপেক্ষা নিন্দনীয়দিক হইতেছে যে, বন্দীদিগকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান করা হইতেছে না।
Reference: সংবাদ, ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৬৬