এ সংবিধান জনগণের আশা আকাঙক্ষার পরিপূরক সংবিধান
আইন ও সংসদ বিষয় মন্ত্রী ড. কামাল হোসেন সোমবার গণ পরিষদের অধিবেশনে মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন যে, শোষণের নিষ্ঠুর যাতাকল থেকে বাংলাদেশের অত্যাচারিতলাঞ্ছিত মানুষের মুক্তিলাভের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন খসড়া সংবিধানে রূপ লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন যে, উনবিংশ শতাব্দী ছিল পুঁজিবাদ, সামন্তবাদ ও শোষণের যুগ। বিংশ শতাব্দী বিশ্বের শোষিত মানুষের বিজয়ের যুগ। বাংলাদেশে নির্যাতিত-নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষও অনেক রক্তক্ষয় ও ত্যাগ-তিতিক্ষা-আত্মদানের মাধ্যমে শোষণ-নির্যাতন-জুলুমের জিঞ্জির ছিন্ন করে মুক্তিলাভ করেছেন। বিংশ শতাব্দীর এই সাধারণ সত্যের আলোকেই বাংলাদেশের আপামর মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে মূর্ত করে এই খসড়া সংবিধান প্রণীত হয়েছে। গণপরিষদে সংবিধানের ওপর সাধারণ আলোচনা সমাপ্ত হয়। আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ড. কামাল হোসেন সাধারণ আলোচনায় সমাপ্তি ভাষণ দিচ্ছেন। গত ১২ অক্টোবর গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হলে তিনি এই খসড়া সংবিধান বিলটি পরিষদে পেশ করেন। গত ১৯ অক্টোবর থেকে তার ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাধারণ আলোচনার উদ্বোধন করছিলেন। বিলটির ওপর ৮ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত সাধারণ আলোচনায় মোট ৯ জন মন্ত্রী, ৪ জন মহিলা সদস্য, ২ জন নির্দলীয় সদস্য এবং ন্যাপ দলীয় একমাত্র বিরোধী সদস্যসহ মোট ৪২ জন সদস্য অংশগ্রহণ করলেন। আলোচনায় বিলটির প্রস্তাবক আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ড. কামাল হোসেন ছাড়াও অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন। আহমদ ও সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যাপক ইউসুফ আলী, পরিষদের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য মওলানা আবদুরর রশিদ তর্কবাগীশ, সিলেটের নির্দলীয় সদস্য জনাব আবদুল আজিজ চৌধুরী, কুমিল্লার ক্যাপ্টেন সুজাত আলী, জনাব সিরাজুল হক, পাবনার আবদুর মোমিন তালুকদার, সিলেটের জনাব আবদুল মুত্তাকিন চৌধুরী অংশ নেন।১২৩
রেফারেন্স: ৩০ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ