বাংলাদেশ সম্পর্কে কতিপয় মার্কিন পত্রিকা ভুল চিত্র তুলে ধরছে
জাতিসংঘ, রয়টার। জাতিসংঘের ত্রাণ ও সাহায্য বিভাগের ডিরেক্টর স্যার রবার্ট জ্যাকসন আজ এখানে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেন যে বাংলাদেশের সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং বাংলাদেশে খাদ্যশস্যের মূল্যও এখন কমতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে এক শ্রেণির মার্কিন সংবাদপত্র যে হতাশাব্যঞ্জক চিত্র তুলে ধরেছেন স্যার রবার্ট জ্যাকশন তার সমালোচনা করেছেন। এই সব রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি চলছে এবং জাতিসংঘের সাহায্য যথাস্থানে পৌছাচ্ছে না। তিনি বলেন, এক শ্রেণির মার্কিন পত্র-পত্রিকার এই ধরনের বিভিন্ন রিপোর্ট তিনি পড়েছেন। এইসব রিপোর্টে বাংলাদেশে খাদ্য পরিস্থিতির সামগ্রিক চিত্র নয়। বাংলাদেশে এই ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে না।
একজনও অনাহারে মরেনি : সাংবাদিক সম্মেলনে স্যার রবার্ট জ্যাকশন ঘোষণা করেন যে, সারা বাংলাদেশে ব্যাপক ও পুংখানুপুংখভাবে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, সেখানে একটি লোকও অনাহারে মারা যায়নি। অনাহারে মৃত্যুর কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি। তিনি বলেন, বর্ষাকাল পর্যন্ত অপুষ্টিতে মৃত্যুর সম্ভাবনা থেকে বাংলাদেশের জনগণকে রক্ষা করা হয়েছে। আর আশঙ্কা করা হয়েছিল যে স্বাধীনতার পর থেকে গত মে পর্যন্ত বাংলাদেশে অপুষ্টিতে বহু লোক মারা যাবে। কিন্ত সৌভাগ্যের বিষয় যে, সময়মত ব্যাপক ত্রাণকার্যের জন্য তা ঘটতে পারেনি। সুতরাং এই অর্থে বাংলাদেশের জাতিসংঘে ত্রাণ ও সাহায্য তৎপরতাকে একটি বিরাট সাফল্য বলে উল্লেখ করা যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে আগামি বছরে জাতিসংঘের ত্রাণ ও সাহায্য তৎপরতা কিছুটা বিঘ্নিত হতে পারে, কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনে এই বছরে ভালো ফসল হয়নি।
রেফারেন্স: ১৩ অক্টোবর ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ