জনগণের সৌভ্রাতৃত্ব নষ্ট করার অশুভ পায়তারা চলছে- তাজউদ্দীন
আহমদ অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ গতকাল মঙ্গলবাব বলেন যে বাংলাদেশের জনগণের পারস্পরিক সৌভ্রাতৃত্ব নষ্টের জন্যে এক অশুভ পায়তারা চলছে। তিনি এই প্রচেষ্টাকে রুখে দাঁড়াবার জন্য আহ্বান জানান। সোভিয়েত জনগণ সৌভ্রাতৃত্বের আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্যে তিনি ডাক দেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সন্ধ্যায় ইঞ্জিনিয়ার ইনিষ্টিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জনাব তাজউদ্দীন আহমদ একথা বলেন। বাংলাদেশ-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতি এর আয়োজন করেছেন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সমিতি সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক এক উৎসব পালনের কর্মসূচি নিয়েছেন। গতকাল ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিভিন্ন প্রজাতন্ত্র ও সায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সমন্বয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের যে মহান সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠেছে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ তার ক্রমবর্ধমান গৌরবোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন। তিনি বলেন যে এই সৌভ্রাতৃত্ব থেকে অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণের রয়েছে। জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বলেন যে, শোষণ ও শ্রেণি ভেদাভেদ দূর করে জনগণের মুক্তির যে উজ্জল দৃষ্টান্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন স্থাপন করেছে তারই সূত্র ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণ আজ সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন সেদিন দূরে নয় যেদিন বিশ্বে বিভিন্ন দেশের মুক্তিপাগল জনগণ শ্রেণি ভেদাভেদ দূর করে অর্থনৈতিক মুক্তি প্রতিষ্ঠা করবে। গড়ে তুলবে সুন্দর ও সুখী জীবন। শ্রেণি ভেদাভেদ ও বঞ্চনা দূর করে তেমনি একটি সুখী সমাজ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কাজে সোভিয়েত জনগণ আগের এতই অকৃপন সাহায্য সহযোগিতা করে যাবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতির সভা নেত্রী কবি সুফিয়া কামাল সভায় নেতৃত্ব করেন। বক্তৃতা দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব গোলাম নবী, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কমরেড খোকা রায়, বাংলাদেশে সোভিয়েত মিশনের সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান মি. ইউরী কোটাল প্রমুখ।
রেফারেন্স: ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ