You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.09.01 | আমাদের স্বাধীনতা নস্যাতে দেশি ও বিদেশি শক্তি ষড়যন্ত্রে মেতেছে- সৈয়দ নজরুল ইসলাম | দৈনিক বাংলা - সংগ্রামের নোটবুক

আমাদের স্বাধীনতা নস্যাতে দেশি ও বিদেশি শক্তি ষড়যন্ত্রে মেতেছে

চট্টগ্রাম। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম আজ এখানে বলেন যে, স্বাধীনতার সুফল নস্যাৎ করার জন্যে দেশি ও বিদেশি শক্তি একযোগে ষড়যন্ত্র করছে। আজ এখানে এক বিরাট জনসভায় ভাষণ দান কালে অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি শক্তির যেসব এজেন্টরা আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে বিরোধীতা করে এসেছে তারাই আজ আমাদের স্বাধীনতার সুফল নস্যাৎ করার জন্য তৎপর। আমাদের নয়া সাধারণতন্ত্র বেশি দিন টিকবে না এই ধারণা সৃষ্টির জন্য তারা আজ উঠে পরে লেগেছে। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ পরিষদে চীনা ভেটোর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চীন যে কাল্পনিক অভিযোগ করেছে সেই একই অভিযোগ করেছেন। বাংলাদেশের কোনো একজন নেতা। নিরাপত্তা পরিষদের চীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, বাংলাদেশে নাকি বিদেশি সৈন্যের অস্তিত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের কোনো একজন নেতাও প্রকাশ্যে এই একই অভিযোগ করেছেন। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী এই অশুভ শক্তি ও তাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অত্যান্ত সচেতন ভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্যে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দাসত্বের চেয়ে মৃত্যু অনেক শ্রেয়। সুতরাং বহু রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে তিনি জনগণকে ঐক্য ও সংহতি অটুট রাখার আহ্বান জানান। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বাঙালি জাতি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চীন ও মার্কিন সরকার পাকিস্তানকে অর্থ, অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও অন্যান্য সাজসরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করেছে। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভ্রান্ত নীতি ত্যাগ করে, বাংলাদেশের প্রতি বন্ধুত্বের হাত সম্প্রসারিত করেছে। এবং বাংলাদেশ অতীতের সকল তীক্ততা ঝেড়ে মুছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, চীনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এটা করতে পারতো। অতীতের সকল তীক্ত ও বেদনাদায়ক স্মৃতি ভুলে গিয়ে বাংলাদেশ চীনের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনে রাজি ছিল, কিন্তু চীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনও তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, যে চীন এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার মুক্তি সংগ্রামী মানুষের চ্যাম্পিয়ন বলে নিজেকে জাহির করে থাকেন, সেই চীনই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পাকিস্তানি লেজুড়দের গণ হত্যায় সাহায্য করেছে। অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন যে, চীন তাদের এজেন্টদের সহযোগিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশে চীনের এজেন্টদের সদাসতর্ক থাকার জন্যে তিনি দেশবাসির প্রতি আহ্বান জানান। ভারত বর্ষের ও সোভিয়েত ইউনিয়নেরর সাহায্য সহযোগিতার উল্লেখ করে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, এই দুটি মহান দেশের কাছে বাংলাদেশের জনগণ চির কৃতজ্ঞ থাকবে।৩

রেফারেন্স: ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ