ভারত বাংলাদেশে আরো দুই লক্ষ টন খাদ্য সরবরাহ করবে- খাদিলকার
ভারতের শ্রমও পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রী মি. আর কে খাদিলকার গতকাল সোমবার জানান যে, বাংলাদেশের বন্যা ও খরা উপদ্রুত এলাকার আশু চাহিদা পূরণের জন্য ভারত দুই লক্ষ টন খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে। চার দিবসব্যাপী ঢাকা সফর শেষে স্বদেশ যাত্রার পূর্বে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় মন্ত্রী উক্ত তথ্য প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ খাদ্য সরবরাহের জন্য নুতনভাবে কোনো অনুরোধ করেছে কিনা এই ধরনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি হা-বোধক জবাব দেন।
মি. খাদিলকার বলেন যে, মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণকে পুনর্বাসনের প্রচেষ্টায় দুই লক্ষ গৃহ নির্মাণের জন্য তার দেশ সরঞ্জাম সরবরাহ করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশ অবশ্য এর মূল্য পরিশোধ করবে। ভারতীয় পুনর্বাসন মন্ত্রী জানান যে, ভারত ইতোমধ্যেই স্বল্প ব্যয়ে গৃহ নির্মাণের জন্য ১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকার সরঞ্জাম সগ্রহ করেছে এবং এসব সরঞ্জাম বাংলাদেশে প্রেরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশ উদ্বাস্তু ও ছিন্নমূল জনসাধারণকে পুনর্বাসনের প্রচেষ্টায় ভারতের সাহায্য ও সহযোগিতা দিতে খাদিলকার জানান যে, ভারত এ পর্যন্ত ১৬৬ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ ও মঞ্জুরীস্বরূপ প্রদান করেছে। এছাড়া ভারত আরও ১৫ কোটি ৫২ লক্ষ টাকার রিলিফ সামগ্রী প্রদান করেছে।
বাংলাদেশের রিলিফ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী জনাব কামারুজ্জামানও সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণ দেন। তিনি তার সরকারের উদাস্তু পুনর্বাসনের তৎপরতা বর্ণনা করেন এবং বাংলাদেশের জন্য ভারতীয় সাহায্য সহযোগিতার প্রশংসা করেন। জনাব কামারুজ্জামান প্রকাশ করেন যে, ভারত বাংলাদেশকে উপহারস্বরূপ যে এক লক্ষ শাড়ী দেয়ার কথা বলেছে, তা বাংংলাদেশে প্রেরণের ব্যবস্থাদি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন যে, বাংলাদেশে বস্ত্রের ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে এই শাড়ী প্রয়োজন। ভারত ইতোপূর্বেও প্রায় চার কোটি টাকা মূল্যের বস্ত্র সরবরাহ করেছে। জনাব কামারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন যে, ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের পুনর্বাসনের জন্য চলতি অর্থ বৎসরে ১২ লক্ষ স্বল্প ব্যয়ের গৃহ নির্মাণ করা হবে। ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন যে, স্বাধীনতার পরও ভারত বাংলাদেশকে সর্বপ্রকার সাহায্য প্রদান করছে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মহোদয় জানান যে, উত্তরাঞ্চলের জেলা সমূহের চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিমাসে ৬০ হাজার টন খাদ্যশস্য প্রয়োজন। চার দিবসব্যাপী সফর শেষে ভারতের শ্রম ও পুনর্বাসন মন্ত্রী গতকাল সোমবার অপরাহ্নে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।২৩
রেফারেন্স: ৭ আগস্ট ১৯৭২, দৈনিক ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ