You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.07.17 | বাংলাদেশে বিদেশি ইজম আসতে দেব না | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশে বিদেশি ইজম আসতে দেব না

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ছাত্রলীগ বাংলাদেশে কাউকে কোনো বিদেশি ইজম আমদানি ও তা কায়েম করতে দিবে না। তিনি বলেন, একমাত্র মুজিববাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশে একটি শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা করা সম্ভব। ছাত্রলীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ, গত শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া লোকনাথ ময়দানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের উদ্যেগে এক বিরাট জনসভায় জনাব সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্য ছাত্রলীগ কর্মীরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে অস্ত্র হাতে নিয়েছিল এবং প্রয়োজন হলে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্রলীগ পূর্বের চেয়েও বৃহত্তর সংগ্রামে অবতীর্ণ হবে। যারা মুজিববাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তিনি তাদের সমালোচনা করেন এবং এরা চীন ও আমেরিকার চর। এরা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চক্রান্তে মেতে আছে। ঐ সমস্ত সমাজ বিরোধীদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য ছাত্রলীগ প্রধান জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। ডাকসুর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুল কুদ্দুস মাখন তার ভাষণে বলেন, সেই সমাজতন্ত্র আমরা চাইনা যে সমাজতন্ত্র মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে টুটি টিপে হত্যা করে। তিনি বলেন, মুজিববাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। জনাব আবদুর কুদ্দুস মাখন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ৩০ লক্ষ লোকের জীবনের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করেছি। প্রয়োজন হলে এই স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে আরও রক্ত দিব। এবং মুজিববাদের ভিত্তিতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা মুজিববাদের বিপক্ষে স্লোগান দেয় তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ও এদেশে তারা বিদেশি ইজম আমদানি করতে চায়। জনাব মাখন বলেন, বাংলার মানুষ তাদের রোধ করবেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের সভাপতি জনাব মোসলেম মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় আরও বক্তৃতা করেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের প্রমোদ সম্পাদক জনাব ফজলুল করিম সেলিম। দুপুর থেকে দলে দলে মিছিল করে লোকজন এসে জড়ো হতে থাকে ঐতিহাসিক লোকনাথ ময়দানে। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ ও জনাকীর্ণ জনসভা। রাস্তার দুপাশ থেকে ছেলে-মেয়েরা স্বাধীনতা সংগ্রামের শৌর্য্যসৈনিকদ্বয়কে উদ্দেশ্য করে ফুল ছুঁড়তে থাকে। দূর দূরান্ত থেকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে লোক আসতে দেখা যায় মাঠের দিকে। বিকেল ৫টায় ছাত্র নেতাদ্বয় লোকনাথ মাঠে পৌছালে ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তাদের অভিবাদন জানান। অতঃপর রাত ১০ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কমিউনিটি সেন্টারে জনাব মোসলেম মিয়ার সভাপতিত্বে ছাত্রলীগের এক কর্মা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মী সভায় বক্তৃতা করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য জনাব আবদুল হাই, জনাব আবদুস শহীদ খান সেন্টু।। বাবু চন্দন চৌধুরী এবং ছাত্রলীগের প্রমোদ সম্পাদক জনাব শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং আরও অনেকে।৬১

রেফারেন্স: ১৭ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ