এদেশে শোষকের স্থান নেই- বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন আয়েজিত জাতীয় সমবায় সম্মেলন উপলক্ষে প্রেরিত এক বাণীতে শনিবার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন যে, এদেশে শোষকের স্থান নাই। গরিব কৃষক আর শ্রমিকই এই রাষ্ট্র এবং সম্পদের মালিক। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মাধ্যমে সমাজতন্ত্রের উত্তরণই আমাদের লক্ষ্য। জাতীয়তাবাদ ও ধর্ম নিরপেক্ষতা আমাদের প্রেরণার উৎস। বঙ্গবন্ধু ঐক্যবদ্ধভাবে সকল শ্রেণির নাগরিককে হানাদারবাহিনী কর্তৃক দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতিকে পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অস্ত্রের সংগ্রাম শেষ হয়ে গেছে, এবারের সংগ্রাম দেশ গড়ার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু তার বাণীতে বলেন, এ দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য, আশ্রয়, শিক্ষা পাবে, উন্নতমানের জীবনের অধিকারী হবে। এটাই হচ্ছে আমার জীবনের স্বপ্ন। সুতরাং সমবায় আন্দোলনকে আজ গণমুখী করতে হবে। কেননা সমবায়ের পথ, সমাজতন্ত্রের পথ, গণতন্ত্রের পথ। সমবায়ের মাধ্যমে গরিব কৃষকগণ যৌথভাবে উৎপাদন যন্ত্রের মালিকানা লাভ করবে। অধিকতর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থায় প্রতিটি ক্ষুদ্র চাষি গণতান্ত্রিক অংশ ও অধিকার পাবে। সমবায়ের মাধ্যমে গ্রাম বাংলায় গড়ে উঠবে ক্ষুদ্র শিল্প আর তার মালিক হবে কৃষক শ্রমিক ও ভূমিহীন নির্যাতিত দুঃখি মানুষ। সমবায় পদ্ধতিতে গ্রামে-গ্রামে শহর-বন্দরে গড়ে উঠবে মেহনতি মানুষের যৌথ মালিকানা। বঙ্গবন্ধু অতীতের ঘুনেধরা সমবায় ব্যবস্থাকে আমূল পরিবর্তন করে একটি সত্যিকারের ণন মূখী সমবায় আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমবায় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সমবায় সংস্থাগুলোকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সংগঠন হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।৩
রেফারেন্স: ১ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ