You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.06.15 | সমাজবিরোধীদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করুন | দৈনিক বাংলা - সংগ্রামের নোটবুক

সমাজবিরোধীদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করুন

দুষ্কৃতকারী ও দালালরা রেহাই পাবে না। অরাজকতা দমনে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কাকেও আইন নিজের হাতে তুলে নিতে দেওয়া হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আবদুল মান্নান তার কার্যালয়ে এনার প্রতিনিধির কাছে সরকারি মনোভাব আবার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন সরকার দেশে কার্যকর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পূর্ণ সক্ষম। সমাজবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী লোকদের মোকাবিলা করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে শক্তিশালী করা হয়েছে। তিনি বলেন পুলিশ এখন দুষ্কৃতকারী ও অন্যান্য সমাজবিরোধী লোকদের গ্রেফতার করছে। গত কয়েক মাসে পুলিশ এ ধরনের বহু লোককে গ্রেফতার করেছেন এবং বহু গোলাবারুদ, অস্ত্রশস্ত্র আটক করেছেন। জনসাধারণের হাতে দুষ্কৃতকারীদের মৃত্যুর বিচ্ছিন্ন ঘটনা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার এগুলো অনুমোদন করে না। তবে জনসাধারণ এদের অত্যাচারে এতই বিরক্ত হয়েছে যে, তারা আর পুলিশের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরাই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তিনি জনসাধারণকে দুষ্কৃতকারীদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে অনুরোধ করেছেন। সরকার দুষ্কৃতকারী ও দালালদের শাস্তি দেবেনই। কাজেই এদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করলেই ভালো হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গতিশীলতা বাড়ানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এর ফলে কোনো একটি স্থানে সম্ভাব্য কম সময়ে পৌছাতে পারা যাবে। এটা কার্যকরভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলাতে সহায়ক হবে। আইনের অনুগত নাগরিকগণ এসব লোকদের তৎপরতার ওপর নজর রাখবেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। কারণ এরা দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিরোধী কাজ করছে। জনসাধারণ যদি পুলিশ বা আইন। প্রয়োগকারী সংস্থাকে খবর না দেন তবে সরকার কি করে এতসব দিক সামলাবেন। মন্ত্রী বলেন, খুলনার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। তিনি বলেন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির দরুনই খুলনার ঘটনাটি ঘটেছে। সেখানে লালবাহিনীর ৫ জন সদস্য নিহত হয়েছেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেন। সরকার এর মধ্যেই এ ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। খুলনার কাছে পুলিশ ও লালবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ফলে ২৬ ব্যক্তি নিহত ও ৮০ জন আহত হয়েছে বলে যে খবর বের হয়েছে মন্ত্রী সেটাকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিহীত করেন।
সেপ্টেম্বরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে : যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিদের বিচার সম্ভবত সেপ্টেম্বরে শুরু হবে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আবদুল মান্নান বৃহস্পতিবার ঢাকাস্থ ইউপিআইর সংবাদদাতার কাছে একথা জানিয়েছেন। মন্ত্রী উক্ত সংবাদদাতাকে জানান যে, যুদ্ধবন্দিদের বিচারের জন্য তার সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি রয়েছে। এবং যথাসময়ে তা প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, আমরা এখন তদন্ত করে দেখছি এবং অভিযোগ তৈরি করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ভারতকে দেড় শতাধিক যুদ্ধবন্দিকে ফিরিয়ে দিতে বলেছেন বলে ঢাকায় এ খবর বের হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটাকে জল্পনা-কল্পনা বলে অভিহিত করেন।৫৬

রেফারেন্স: ১৫ জুন ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ