You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.05.30 | সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন দেয়া হবে | দৈনিক বাংলা - সংগ্রামের নোটবুক

সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন দেয়া হবে

বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন মানি অর্ডারের পরিবর্তে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। বাসস মঙ্গলবার এক সরকারি হ্যান্ড আউটের বরাদ দিয়ে এ কথা জানিয়েছে। প্রাইমারি স্কুল শিক্ষকদের ইচ্ছানুসারেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে হ্যান্ড আউটে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন শেষে সোনালী ব্যাংক ও সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে সেখানকার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন দেয়া হবে। ১৯৭২ সালের জুন মাসের বেতন ও ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে দেয়া হবে।
জয়পুরহাট ২৮ মে টাইপ, বিভিন্ন ধরনের কাগজ, কালি, ইত্যাদির দাম আগের চেয়ে বর্তমানে অনেক বেড়ে যাওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলের ছাপাখানাগুলো সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করতে না পেরে বহু ছোট-খাট ছাপাখানার কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পূর্বে ঢাকায় নিজেদের ঢালাই টাইপের দাম ছিল প্রতি মণ ৩শত টাকা। বর্তমানে এর দাম বেড়ে যেয়ে প্রায় পৌনে ৫শত টাকায় দাঁড়িয়েছে। ছাপা কালির আগে দাম ছিল প্রতি পাউন্ড পৌনে ৪ টাকা। বর্তমানে ঢাকার প্রস্তুত কালি এ বাজারে একদম পাওয়া যায় না। উত্তরাঞ্চলে ভারতের প্রস্তুত কালি পাওয়া গেলেও তা প্রতি পাউন্ড ১৪ টাকার কমে পাওয়া যায় না। ছাপাখানায় দুই লাইনের মধ্যে স্পেসের জন্য সীসার ব্যবহার অপরিহার্য। কিন্তু এই সীসার দামও প্রতি মণ দেড় শত টাকা থেকে আড়াই শত টাকায় উন্নতি হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে নিউজপ্রিন্ট পাওয়া একটা মস্ত বড় সমস্যার ব্যাপার। হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ভেঙে যাওয়ার ফলে খুলনা হতে নিউজপ্রিন্ট ব্যবসায়ী ট্রাক নিয়ে বহু কষ্ট করে নিউজপ্রিন্ট খুলনা থেকে নিয়ে আসতে তারা খরচ বেশি পড়ার কথা বলে নিউজপ্রিন্টের দাম বেশি নিচ্ছেন। পূর্বে নিউজপ্রিন্ট এখানে প্রতি রিম ১৩ টাকা থেকে ১৪ টাকায় পাওয়া যেত। বর্তমানে এর দাম প্রতি রিম ২২ টাকা থেকে ২৩ টাকা। ঠিক এ রকমভাবে হোয়াইট প্রিন্ট, আর্ট পেপার, কার্টিজ পেপার, পেন্টার, রঙ্গিন নিউজপ্রিন্ট ইত্যাদির দাম বেড়ে গেছে। কয়েকটি ছাপাখানার মালিকের সাথে আলাপ করলে তারা বলেন যে, বর্বর পাকিস্তানবাহিনীর আমলে তাদের অনেকের ছাপাখানা ক্ষগ্রিস্ত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছাপাখানার জিনিসপত্রের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ায় তারা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে অসুবিধায় পড়ছেন। ছাপার রেড বাড়িয়ে দেওয়া সত্ত্বেও সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে না। ছাপাখানার মালিকরা আরো জানান যে, কমপজিটর ও মেশিন ম্যানরা আগের তুলনায় তাদের পারিশ্রমিক বেশি দাবি করছেন। এ দাবি পুরোপুরিভাবে মেটাতে গেলে তাদের ছাপাখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
ব্লক তৈরি কারখানার অসুবিধা : উত্তরাঞ্চলের একমাত্র বৈদ্যুতিক ব্লক তৈরির কারখানা বগুড়ার উত্তর বাংলা প্রসেস ওয়ার্কস দস্তার পাত, ফিল্ম, নাইট্রিক এসিড ইত্যাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ব্লক তৈরির জন্য অপরিহার্য রাসায়নিক দ্রব্য, সিলভার নাইট্রেট, পটাশিয়াম ক্লেমাইড, বোরাক্স, কলোরিন ইত্যাদি বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে। জানা গেছে যে, ২০ ফুট ৪০ ইঞ্চি আকারের যে বিদেশি দস্তার পাতের দাম আগে ছিল মাত্র ৪০ টাকা থেকে ষাট টাকা তা বর্তমানে ঢাকায় ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দশ-বারো আকারের শীট ফিল্মের দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে আড়াই শত টাকায় দাঁড়িয়েছে। উক্ত প্রসেস ওয়ার্কস থেকে জানা যায় যে, তারা ব্লক তৈরির রেট আগের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়িয়েছেন বটে কিন্তু তার ফল দাঁড়িয়েছে খদ্দেরের সংখ্যা বেশ কমে গেছে।১০১

রেফারেন্স: ৩০ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ