জনমত রণাঙ্গন প্রসঙ্গে
(অগ্রদূত) হপ্তা দুয়েক পূর্বের ঘটনা। বাওয়া গ্রামের যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুসেনাদের হাতে মর্মান্তিকভাবে নিহত হলেন মুক্তিবাহিনীর ৬ জন নির্ভীক যােদ্ধা। তাদের গােলাবারুদ ফুরিয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে উৎসর্গীকৃত প্রতিটি প্রাণই দারুণভাবে মূল্যবান। সৈনিকের রক্ষাকবচ প্রতি রাউন্ড গুলিও মূল্যবান একই কারণে। যখন গােলাবারুদ হাতে না থাকে তখন পশ্চাৎ অপসরণই যে সর্বোত্তম পন্থা এ বিষয়ে সম্ভবত যে কেউ নিঃসন্দেহ। তথাপি বাওয়া রণাঙ্গনের শহীদেরা সে সুযােগ হতে বঞ্চিত হয়েছিলেন। এর একমাত্র হেতু একজন অদূরদর্শী কমান্ডারের হঠকারিতা। | সামরিক ব্যাপারে প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ না করেও সমালােচনা করা যায়। এবং সে অধিকারও রয়েছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতিটি দেশ প্রেমিক নাগরিকের। কারণ যুদ্ধটা জনযুদ্ধ। এবং মুক্তিসংগ্রামীরা আপামর মানুষেরই সন্তান। যুদ্ধ চালাতে যেয়ে সবরকম সাহায্য ও গৃহীত হয় জনগণের কাছ থেকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য, শুধু জনমতই নয়, স্বাধীনতার যােদ্ধারাও যাতে মর্মান্তিকতার শিকার হবার দুশ্চিন্তায় হতােদ্যম না হয়ে পড়েন, সে কারণে সমর পরিকল্পনার কাজ আরাে সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালিত হওয়া বিধেয়।
জাগ্রত বাংলা ১: ৭।
২৮ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯