ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বে মহলবিশেষ ফাটল ধরাতে চাচ্ছে
বাংলাদেশ সরকারের পূর্ত ও গৃহনির্মাণ দফতরের মন্ত্রী ও ঢাকা বণিক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জনাব মতিউর রহমান বলেন, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে তাতে ফাটল ধরাবার জন্য একটি মহল তৎপর হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা বণিক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ভারতীয় বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের সম্বর্ধনা সভায় মন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। পূর্তমন্ত্রী ভারতীয় বণিক সম্প্রদায়ের কাছে এ মর্মে আবেদন করেন যে, বাংলাদেশের জনসাধারণ প্রত্যেকের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। তারা দু’দেশের চোরাকারবারীদের বন্ধুত্ব চায় না। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তা উভয় দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এবং এ চুক্তি চোরাকারবারীদের প্রতিষেধকস্বরূপ। ব্যবসায়ী নয় এমন এক শ্রেণির লোক বর্তমান অবস্থার সুযোগে দেশে মূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন যে, সরকার কঠোর হস্তে তাদের দমন করতে বদ্ধপরিকর। ভারতীয় প্রতিনিধি দলের শ্রী সঞ্জয় তার ভাষণে বলেন যে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা সরজমিনে পরীক্ষা করে দেখার জন্যে তাদের বর্তমান সফর। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে ভারত বিশেষভাবে পশ্চিমবঙ্গ বেশ কিছুটা সাহায্য করতে পারে বলে তিনি জানান। শ্রী সঞ্জয় বলেন, পারস্পারিক স্বার্থের ভিত্তিতেই শুধু ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ ভারতে বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল, মাছ, তরিতরকারি রপ্তানি করতে পারে এবং অপরদিকে ভারত বাংলাদেশে যন্ত্রপাতি ও শিল্পজাতদ্রব্যও রপ্তানি করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা ও তার সম্প্রসারণে ভারত কারিগরি ও প্রশাসনিক সাহায্য দিতে পারে বলে তিনি মনে করেন। ঢাকা বণিক সমিতির পক্ষ থেকে সহসভাপতি জনাব মোখলেসুর রহমান প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান। এর আগে সফররত ভারতীয় বাণিজ্য প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব এম আর সিদ্দিকী ও শিল্পমন্ত্রী জনাব নজরুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেন।৬৪
রেফারেন্স: ১৮ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ