সরকার শিক্ষা কমিশন গঠন করেছে
বাংলাদেশে গণমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্যে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় সংকল্প ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে গণতন্ত্র পরিষদ ড. কুদরত-ই-খুদার নেতৃত্বে একুশ সদস্যের একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেছেন। এই শিক্ষা কমিশন দেশের ভবিষ্যত শিক্ষানীতি সম্পর্কে সরকারের কাছে সুপারিশ পেশ করবেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. সুরত আলী এবং জনাব কবির চৌধুরী এই নয়া শিক্ষা কমিশনের যথাক্রমে সহ-সভাপতি এবং সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন। নয়া শিক্ষা কমিশন দেশের ভবিষ্যত শিক্ষানীতি সম্পর্কে সর্বশ্রেণির মানুষের মতামত গ্রহণ করবেন এবং তারই ভিত্তিতে সরকারের কাছে কমিশনের সুপারিশ পেশ করবেন। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা বার বার ঘোষণা করেছেন যে, বাংলাদেশে একটি গণমুখী শিক্ষানীতি চালু করা হবে এবং সেই সঙ্গে অবসান ঘটানো হবে এতদিনের গণবিরোধী শিক্ষা ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট সকল শ্রেণির মানুষের মতামত গ্রহণের উদ্দেশ্যে নবগঠিত শিক্ষা কমিশন সারা দেশ সফর করবেন। মতামত গ্রহণ করে কমিশন দীর্ঘ চিন্তা ভাবনার পর সরকারের কাছে মূল্যবান সুপারিশ পেশ করবেন। বৃহস্পতিবার সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি মন্ত্রী পরিষদ শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। বাসস উল্লেখ করে যে মন্ত্রী পরিষদে এই দীর্ঘ বৈঠকে আরো কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে কয়েকটি বিষয় মন্ত্রী পরিষদ সাব কমিটির কাছে আলোচনার জন্য পাঠানো হয়। সাব কমিটিতে আলোচনার পূর্বেই আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। গণভবনে মন্ত্রী পরিষদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার্থীদের নতুন করে ফি দিতে হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বৃহস্পতিবার পরীক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছেন যে, যারা ইতোমধ্যেই পরীক্ষার ফি জমা দিয়েছেন তাদের নতুন করে পরীক্ষার ফি দিতে হবে না। ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুল কুদ্দুস মাখনের নেতৃত্বে একটি দল উপাচার্যকে এই দাবিটির কথা জানালে উপাচার্য এই আশ্বাসের কথা জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঘোষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বাসস এই খবরটি পরিবেশন করে।৬৫
রেফারেন্স: ১৮ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ