You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.02.12 | “শেখ মুজিব দিবসে” চট্টগ্রামে পূর্ণ হরতাল | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

আজাদ
১২ই ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
“শেখ মুজিব দিবসে” চট্টগ্রামে পূর্ণ হরতাল

ঢাকা, ১১ই ফেবরুয়ারী। আজ শেখ মুজিব দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রামে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। ছাত্র শ্রমিক নির্ব্বিশেষে সকল শ্রেণীর জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালনের মাধ্যমে পুনরায় ৬-দফা কর্মসূচী ও শেখ মুজিবের নেতৃত্বের উপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে। এতদুপলক্ষে আজ অপরাত্নে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এম, এ, আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত লক্ষাধিক লোকের এই সমাবেশে সভাপতি স্বয়ং, আওয়ামী লীগ নেতা জনাব এম, এ হান্নানসহ ছাত্রনেতা ও জননেতাগণ বক্তৃতা করেন। সভায় ৬ দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়।
সভায় উপস্থিত জনগণ লালদীঘি ময়দানের “মুজিব পার্ক” নামকরণ করেন। সভায় জনগণের মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারসহ কতিপয় প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
সভাশেষে একটি বিরাট মিছিল বিভিন্ন শ্লোগানসহ শহরের প্রধান রাজপথসমূহে প্রদক্ষিণ করে।

টাঙ্গাইলে পূর্ণ হরতাল
পুলিশী জুলুম ও ইপিআর-এর গুলী বর্ষণের প্রতিবাদে ডাকের আহ্বানে গত ৭ই ফেব্রুয়ারী টাঙ্গাইলে পূর্ণ হরতাল পালিত হয় বলিয়া অপর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। হরতাল উপলক্ষে সন্ধ্যা পর্য্যন্ত শহরের সকল দোকানপাট, হাট-বাজার, যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হইয়া পড়ে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে, গত ৫ই ফেব্রুয়ারী শান্তিপূর্ণ ছাত্র মিছিলের উপর ইপিআর বাহিনী গুলীবর্ষণ করে।
এছাড়া ডাক ও আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জনসভায় পাইকারী হারে ছাত্র ও রাজনীতিক নেতার গ্রেফতারের নিন্দা করা হয়। সভায় পুলিশের উস্কানিমূলক কাৰ্য্যকলাপ ও শান্তিকামী বিক্ষোভকারীদের উপর ইপিআর-এর অব্যহিত গুলীবর্ষণের তীব্র নিন্দা করা হয়।
সভায় সকল ছাত্র বন্দীর অবিলম্বে মুক্তিদান, নিরীহ ছাত্র ও জনতাকে পাইকারী হারে গ্রেফতার বন্ধ, দেশরক্ষা আইন, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, নিহতদের লাশ আত্মীয়-স্বজনদের নিকট ফেরত দান ও গুলী বর্ষণের ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানান হয়।
সভায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয় এবং সকল প্রকার উস্কানীমূলক কার্য্যকলাপের মুখে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি অব্যাহত রাখার শপথ গ্রহণ করা হয়।

সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯