মুক্তিযােদ্ধারা যশাের ক্যান্টনমেন্ট অবরােধ করেছেন ঃ জঙ্গীশাহীর
বােমবর্ষণে বহুগ্রাম ভস্মীভুত।
(রণাঙ্গন প্রতিনিধি)। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম খণ্ডে মুক্তিবাহিনীর উত্তাল অভিযান পাক বাহিনীকে বেসামাল করে দিয়েছে। খুলনা, যশােহর এবং কুষ্টিয়ায় মুক্তিবাহিনীর ত্রিমুখী অভিযান শুরু হয়েছে। খুলনায় দক্ষিণাঞ্চল এক প্রকার মুক্ত। এখন তারা এগিয়ে চলছে সহরের দিকে। ভােমরাঘটি এখন মুক্তিবাহিনীর হাতে। দৌলতপুর থেকে পাক সেনারা পালিয়ে যশাের ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ক্যান্টনমেন্টকে অচল করে দেবার জন্য মুক্তিযােদ্ধারা এক অবরােধ অভিযান শুরু করেছেন। ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় পর পর দুদিন মুখােমুখী লড়াই হয়ে গেছে। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে আঁটতে না পেরে পাক বিমান থেকে বােমাবর্ষণ করা হয়েছে। তার ফলে বহু গ্রাম জ্বলেছে; কিন্তু মুক্তিবাহিনী রকেট আক্রমণ চালিয়ে ক্যান্টনমেন্টের বেশ কিছুটা অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে এবং তাতে তাদের কয়েকটি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকবাহিনী যাতে বেরুতে না পারে তার জন্য তারা নানানভাবে অবরােধব্যুহ রচনা করেছে। কুষ্টিয়ার অভ্যন্তরে মুক্তিবাহিনী অনেক এগিয়ে গেছে। মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গার পাশ কাটিয়ে ভেড়ামুড়া ডিঙ্গিয়ে ঈশ্বরদীর কাছাকাছি তাদের একটা অংশ এসে গেছে। ওপার থেকে যাতে সারা ব্রীজ দিয়ে পাক সামরিক সরবরাহ না আসতে পারে তার উপর নজর রাখা হচ্ছে তাদের কাজ। খুলনার দক্ষিণাঞ্চলে কালীগঞ্জ, বসন্তপুর, মারকা, যশাের, ঈশ্বরীপুর, ধুমঘাট, নুরনগর, নকীপুর, পলতা, দেৰীশহর, সীমলা, সখিপুর, শ্রীপুর, পুষ্পকাঠি, পারুলিয়া সব মুক্ত। এই এলাকা থেকে পাক উদ্ধশ্বাসে পালিয়েছে।
সাপ্তাহিক বাংলা ॥১: ৬
২৫ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯