ঔষধ আনতে ২৩ টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে
বাংলাদেশ ঔষধ আমদানির জন্য ২৩ টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার আমদানি লাইসেন্স মঞ্জুর করা হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ শিল্প ও বনিক ফেডারেশনের সভাপতি জনাব মতিউর রহমান এক বিবৃতিতে একথা জানান। বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন যে, এসব বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি পাকিস্তানে ঔষধ উৎপাদনের সুবিধা রয়েছে। উপরোক্ত যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান ঔষধ আমদানির লাইসেন্স পেয়েছে তাদের কারোরই আমদানি রেজিষ্ট্রেশন তালিকায় নাম নেই। এমনকি ঔষুধের লাইসেন্স নেই। বিদেশ থেকে ঔষধ আমদানি করার মতো বাংলাদেশে কয়েক শত বিভিন্ন ক্যাটেগরির ঔষধ আমদানিকারক থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে কেন তা দেয়া হলো না, তা দেখে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। অন্যদিকে এর মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি বাজার দখলের সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। বাংলাদেশে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো লগ্নি নেই এবং ঔষধ আনার জন্য কোনো বিদেশি মুদ্রাও বিনিয়োগ করবে না বলে তিনি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে এসব ঔষধ আনার ওপর কোনো রূপ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এটা দেশিয় ঔষধ প্রস্তুতকারকদের প্রতি মারাত্মক আঘাতস্বরূপ বিবেচিত হবে। এছাড়া সরবরাহকারী আমদানি কারক হওয়ায় ঔষধের আন্তর্জাতিক তুলনামূলক দাম কি হওয়া উচিত তা পরীক্ষা করার উপায় থাকবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি কয়েকটি প্রশ্ন তোলেন। এ ধরনের আমদানি লাইসেন্স এর ফলে বাংলাদেশ কি একটি অবাধ বাণিজ্য এলাকায় পরিণত ও সেই সাথে বিদেশি পুঁজি অনুপ্রবেশের সুযোগ ঘটবে না? এদের মধ্যে এমন কয়েকটি দেশ থেকে ঔষধ আনার সুযোগ দেয়া হয়েছে, যারা গত স্বাধীনতার সংগ্রামে বাংলাদেশের বিরোধীতা করেছিল। বিশ্ব বাজারের তুলনায় এদের ওষুধের দামও বেশি। এসব বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ঔষধ আমদানির সুযোগ দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষিত জাতীয়তাবাদ নীতিরই লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রেফারেন্স: ২৮ এপ্রিল ১৯৭২, ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ