You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.03.28 | ১০ এপ্রিল গণপরিষদ বসছে | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

১০ এপ্রিল গণপরিষদ বসছে

বাংলাদেশ গণপরিষদের অধিবেশন আগামি ১০ এপ্রিল শুরু হচ্ছে। এতে নয়া রাষ্ট্রের সংবিধান রচনা করা হবে। গতকাল গণপরিষদ অধিবেশন তলৰ করে রাষ্ট্রপতির এক আদেশও জারি হয়ে গেছে। তাতে বলা হয়েছে, ১০ এপ্রিল সকাল ১০টায় তেজগাঁওয়ের পুরানা পরিষদ ভবনে এই অধিবেশন শুরু হবে। ইতোমধ্যে পরিষদ সেক্রেটারিয়েট থেকে সদস্যদের নামে তারযোগে আর রেজেষ্ট্রিকৃত ডাকে তলবনামা ইস্যু হয়ে যাচ্ছে। এই অধিবেশনের মোট ৪৬৯ জন সদস্যের আসনের ব্যবস্থা রয়েছে। কিছু কিছু সদস্য পাকিস্তানি দখলদারবাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছেন। এছাড়া আরও কিছু সদস্য পরে দালালীর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। এদিকে অধিবেশনে পেশ করার জন্য দেশের খসড়া সংবিধানও তৈরি হয়ে যাচ্ছে। এটা ইংরেজিতে তৈরি এবং এর রচনাও সমাপ্ত প্রায়। বর্তমানে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রাজ্ঞ ব্যক্তি এই সংবিধানের বাংলায় অনুবাদের কাজে ব্যস্ত আছেন। আশা করা যাচ্ছে যে, অধিবেশনের প্রথম দিনেই স্পীকার, ডেপুটি স্পীকার নির্বাচনের কাজ সারা হয়ে যাবে। পরিষদের বর্তমান একমাত্র আওয়ামী লীগেরই পার্লামেন্টারী পার্টি আছে। সুতরাং আওয়ামী লীগ মনোনীত ব্যক্তিই স্পীকার হবেন। এটাসহ আনুসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করার জন্য খুব সম্ভব আওয়ামী লীগ পার্টির বৈঠকও অধিবেশনের আগে আগে বসছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৯৭০ সালের ডিসেম্বর নির্বাচনে শেখ সাহেবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রায় সবগুলি আসনেই বিপুল ভোটাধিক্যে জয়ী হয়। এ সময় জাতীয় পরিষদের মাত্র ২টি আসন বাদে মহিলাসহ মোট ১৬৯টি আসনে আওয়ামী লীগ সদস্যরা নির্বাচিত হয়েছিলেন। ব্যতিক্রম শুধু জনাব নুরুল আমিন আর রাজা ত্রিদিব রায়। এরা বাংলাদেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে যথাক্রমে পাকিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আর মন্ত্রীর আসনে বহাল হন। প্রাদেশিক পরিষদে ঐ সময় মোট ৩৯৩টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৮০টি আসন লাভ করেছিল। অবশ্য তন্মধ্যে ১৩টি আসন অর্থাৎ মহিলাদের নির্বাচন হয়নি। যাইহোক, পরবর্তী পর্যায়ে আওয়ামী লীগের এই জয় পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন চক্রের শোষণের পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় এবং ২৫ মার্চ রাত্রির অন্ধকারে বাঙালি হননে নেমে পড়ে।

রেফারেন্স: ২৮ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ