“তিন লাখ ভূমিহীন কৃষক জমি পাবেন” – আব্দুর রব সেরনিয়াবাত
দেশে প্রায় তিন লাখ ভূমিহীন কৃষকের জন্য বিনামূল্যে জমির ব্যবস্থা করা হবে। শুক্রবার বাসস’র সাথে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ভূমি রাজস্বমন্ত্রী জনাব আব্দুর রব সেরনিয়াবাত এ তথ্য প্রকাশ করেন। এটা হবে উপমহাদেশের এক নজীর বিহীন ভূমি সংস্কার ব্যবস্থা। জনাব সেরনিয়াবাত আরাে জানান, বর্তমানে সরকারের হাতে বিতরণ করার মতাে ৪ লাখ ৬২ হাজার একর চাষের জমি রয়েছে। সর্বোচ্চ জমির পরিমাণ পরিবার পিছু একশ বিঘা ধার্য করা আরও ১২ লাখ বিঘা উদ্বিত্ত জমি পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তিনি আরাে জানান যে, ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে উদ্ধৃত জমি বিতরণ করার সরকারি নীতি স্বার্থবাদী মহল যাতে নস্যাৎ করতে না পারে তার জন্যেও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভূমিহীন কৃষকদের পরিবার পিছু কতখানি করে জমি দেওয়া হবে তা শীঘ্রই মন্ত্রীসভার বৈঠকে স্থির করা হবে। তবে শুধুমাত্র ভূমিহীন কৃষকদেরই জমি দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। সমবায় কৃষি ব্যবস্থার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমবায় খামারের জন্য চর এলাকার জমি হবে সবচেয়ে উপযুক্ত। বরিশাল ও খুলনা জেলার দক্ষিণ অঞ্চলে বন এলাকায় যে চাষাবাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে সেগুলােতেও সমবায় খামারের ব্যবস্থা করা সম্ভব। কেননা এসব এলাকার প্রতিটি হােল্ডিংই বেশ বড় বড়। ৭৫ বিঘা জমি নিয়ে এক একটি ‘ইকোনােমিক ইউনিক’ গঠন করা হবে বলে তিনি জানান। জমি পরিবার প্রতি সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে প্রয়ােজন হলে জমি সর্বোচ্চ সীমা একশ বিঘা থেকেও কমিয়ে আনা হতে পারে। তিনি আরাে জানান যে, ১৯৬০ সালের কৃষি শুমারী অনুযায়ী দেশে ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ। দেড় থেকে তিন বিঘা জমির মালিক এমন কৃষকের সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ। তবে ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা সর্বােচ্চ মূল্যে ২৬ লাখ বলে ধরা হবে। সরকারের সমস্ত খাস জমি ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে
বিতরণ করা হবে। এ ব্যাপারে মধ্যস্বত্বভােগীদের বিলােপ সাধনের জন্য সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, অতীতে সেলামী নিয়ে বহু সরকারি খাস জমি বিতরণ করা হয়েছে। এখন এ
ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়েছে। ভূমিহীন কৃষকদের সেলামী দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলেই তাদের মাঝে যে জমি বণ্টন করা হবে তার জন্য কোনাে অর্থ নেওয়া হবে না। ৪২
Reference:
১২ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ