২০ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে কর্পোরেশন ব্যবসা শুরু করবে
সরকার ৬টি তেলবাহী জাহাজ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে
সারাদেশে ৪ হাজারেরও বেশি ন্যায্য মূল্যের দোকান খুলে ২০ কোটি টাকার প্রাথমিক মূলধন নিভােগ্যপণ্য সরবরাহ কর্পোরেশন আগামি মাস থেকে ব্যবসা শুরু করবে। বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব এম আর সিদ্দিকী বুধবার ঢাকায় একথা জানান। তিনি বলেন, এসব দোকান ১১ টি ভােগ্য দ্রব্য সরবরাহ করবে। এসব দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- চাল, গম, খাবার তেল, কেরােসিন তেল, লবন, কাপড়, সােডা, কাপড় কাচার সাবান, চিনি, সিগারেট ও শিশু খাদ্য। মন্ত্রী বলেন, সংশােধিত ও বিধিবদ্ধ যাই হােক না কেন রেশন কার্ডে জনসাধারণকে এসব দ্রব্য সরবরাহ করা হবে। সাংবাদিকদের নিকট এ তথ্য প্রকাশ করে বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব এম আর সিদ্দিকী বলেন, সরকার ইতােমধ্যেই ভােগ্যপণ্য সরবরাহ কর্পোরেশন গঠন করেছেন। এসব ন্যায্যমূল্যের দোকান পরিচালনার দ্বায়িত্বভার এ নয়া কর্পোরেশনের ওপর অর্পণ করা হবে। পণদ্রব্য ক্রয়ের জন্য সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ কোটি টাকা বিনিয়ােগ করবেন বলে তিনি জানায়। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে ক্রেতা সাধারণ চাল, গম, খাবার তেল, সোডা, চিনি, সিগারেট, কাপড়কাচার সাবান ও কাপড় পাবে। তিনি আরাে বলেন, সংশােধিত রেশন ব্যবস্থার আওতাধীন রেশন দোকান এ স্কীম পরিচালনার কাজে ব্যবহার করা হবে। ইউনিয়ন রিলিফ কমিটিকে এসব ন্যায্য মূল্যের দোকানের প্রকৃত কাজকর্ম তদারক করতে বলা হবে। তবে জনাব এম আর সিদ্দিকী জনৈক সাংবাদিকের সাথে একমত হন যে, ভােগ্যপণ্য সরবরাহ কর্পোরেশনের পক্ষে পল্লী এলাকার জনসাধারণের এ ১১ টি ভােগ্যপণ্যের মােট চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে না। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, এসব দোকান সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকলে তাতেই অবস্থা পাল্টে যাবে। তিনি আরাে উল্লেখ করেন, এ এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দমন করা যাবে এবং নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদির মূল্য আরো হ্রাস পাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। এ নয়া কর্পোরেশনকে এক বিরাট দায়িত্ব সম্পন্ন করতে হবে বলে মন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। বাসস এ খবর দিয়েছেন। খাদ্য ও ভােগ্যপণ্য সংক্রান্ত কেবিনেট সাব কমিটির সিদ্ধান্ত বাসস’র খবরে বলা হয়, খাদ্য ও ভােগ্য পণ্য সংক্রান্ত কেবিনেট সাব কমিটি জরুরি ভিত্তিতে অবিলম্বে নগদ মূল্যে ১ লাখ টন চাল ও ৬টি তেলবাহী জাহাজ সগ্রহসহ নিত্যব্যবহার্য দ্রব্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার সাংবাদিকদের সাথে আলােচনাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব সিদ্দিকী বলেন, দেশের খাদ্য পরিস্থিতি পর্যালােচনার জন্য কেবিনেট সাব কমিটি প্রত্যেকেই বৈঠকে মিলিত হচ্ছে। উপরােক্ত সিদ্ধান্ত গত পরশু নিকেলে নেয়া হয় বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, চাল, শিশু খাদ্য, কেরোসিন তেল, কয়লা, চিনি ইত্যাদি নিত্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদি জরুরি ভিত্তিতে আমদানি করা হবে। কেরােসিন তেল ও অপরাপর জ্বালানী তেলের সরবরাহ ত্বরান্বিত করার জন্য সরকার অবিলম্বে আরাে ৬টি তেলবাহী জাহাজ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৫৯
Reference:
১৭ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ