মওলানা আবদুর রহিম
২ সেপ্টেম্বর
করাচীতে তিনি বিভিন্ন বৈঠকে বাংলাদেশে জামাতীদের সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য রাখেন। করাচীর দৈনিক ‘জামায়ত’ পত্রিকায় ‘মওলানা রহিম’ শীর্ষক একটি উপসম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয় যে-“পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর সহকারী আমির মওলানা আব্দুর রহিম বলেছেন, দুষ্কৃতকারী ও ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের গেরিলা যুদ্ধের মােকাবিলা করা সেনাবাহিনীর দ্বারা সম্ভব নয়। দুষ্কৃতকারী গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় ও আস্তানা গড়ে কিন্তু সেনাবাহিনীর আগমন সংবাদ পেতেই পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনী পৌছুলে তাদের সামনে জনবসতি ছাড়া আর কিছুই থাকে না। সেনাবাহিনী প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করেছেন যে, স্থানীয় অধিবাসীদের সহায়তা ছাড়া দুষ্কৃতকারীদের মােকাবিলা করা সম্ভব নয়। এই কারণেই রাজাকার ও মুজাহিদ বাহিনী গঠনের প্রতি মনােনিবেশ করা হয়েছে। এই কারণেই অধ্যাপক গােলাম আজম তার বিগত পশ্চিম পাকিস্তান সফরকালে বার বার দাবি করেছিলেন যে, দেশ প্রেমিকদের সশস্ত্র করা হােক—অন্যথায় পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটবে। সুখের বিষয় সরকার এ সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় দেশপ্রেমিকদেরও শামিল করেছেন।……..
“এ পর্যায়ে মওলানা আব্দুর রহিম আরাে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। দুষ্কৃতকারীদের নির্মূল করার দায়িত্ব যেন স্থানীয় জনগণের সাথে পরিচিত মুজাহিদ বাহিনীর হাতে দেয়া হয়। মওলানা আরও বলেছেন—পূর্ব পাকিস্তানের পুরাতন কোন কোন পুলিশের উপর কোনক্রমেই নির্ভর করা যায় না, কেননা তারা বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাত্মক কাজে অংশগ্রহণ করেছে। রাজাকারদের নিরুৎসাহিত করে এদের রিপাের্টের উপর নির্ভর করা আত্মহত্যার শামিল। মওলানা পূর্ব পাকিস্তানের একশ্রেণীর পুলিশের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে এও বলেছেন–এখন পর্যন্ত সরকারী দফতরসমুহে একশ্রেণীর লােকের দ্বারা। ‘বাংলাদেশ প্রােপাগাণ্ডা অব্যাহত রয়েছে। | যতদিন পর্যন্ত এরা সরকারী দফতরসমূহে এরূপ করতে থাকবে ততদিন পাকিস্তানকে রক্ষা করার সরকারী প্রচেষ্টায় সফলতা লাভ অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
রেফারেন্স: ১৯৭১ ঘাতক-দালালদের বক্তৃতা ও বিবৃতি- সাইদুজ্জামান রওশন