গোলাম আজম
২৯ আগস্ট
করাচীতে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন—“পূর্ব পাকিস্তানী জনগণের মনে আস্থার ভাব সৃষ্টি করার জন্য আরাে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।” | করাচীতে উক্ত সফরের সময়ে লাহােরের সাপ্তাহিক জিন্দেগীতে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন “২৫ মার্চের পর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা ছিল এদেশের মাটি রক্ষার জন্য, এর আগেই অনুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়ােজন ছিল না কি?‘আমি আশঙ্কা করছি, যেখানে সেনাবাহিনী এবং রাজাকার বাহিনী নেই, সেখানে অংশগ্রহণকারীদের (উপনির্বাচনে প্রার্থী) দুষ্কৃতকারীরা হত্যা করবে, তাদের বাড়ি-ঘর লুট করবে ও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেবে। এ পরিস্থিতি থেকে উপকৃত হয়ে তারা আবার বলতে শুরু করেছে যে, তথাকথিত ‘বাংলাশে’ নাকি শীগগিরই একটি বাস্তব সত্যে পরিণত হবে।”
উক্ত সাক্ষাৎকারে জামাতের মুক্তিযুদ্ধ বিরােধী তৎপরতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান “বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জামাতকে মনে করত পহেলা নম্বরের শত্রু। তারা তালিকা তৈরী করেছে এবং জামাতের লােকদের বেছে বেছে হত্যা করছে। তাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে। এতদসত্ত্বেও জামাত কর্মীরা রাজাকারে দলে ভর্তি হয়ে দেশের প্রতিরক্ষায় বাধ্য, কারণ তারা জানে ‘বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলমানের কোন জায়গা হতে পারে না। জামাত কর্মীরা শহীদ হতে পারে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে না। আপনি জেনে বিস্মিত হবেন শান্তি কমিটিসমুহে যােগদানকারী অন্যান্য দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বস্থানীয় লােকদেরই শুধু হত্যার লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। কিন্তু জামাতের সাধারণ কর্মীদেরও ক্ষমা করা হয় না। তিনি আরাে বলেন-“আমি চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, যশাের, কুষ্টিয়া প্রভৃতি স্থানে সফর করেছি। আল্লাহর অপার মহিমায় জামাত কর্মীদের মনােবল অটুট রয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের তৎপরতাও অব্যাহত রয়েছে।”
রেফারেন্স: ১৯৭১ ঘাতক-দালালদের বক্তৃতা ও বিবৃতি- সাইদুজ্জামান রওশন