শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার সংক্ষিপ্ত সার | বাংলাদেশ ডকুমেন্টস |
নিরাপত্তা কাউন্সিলে আলোচনার উপর একটি সংক্ষিপ্ত মন্তব্য
১২ থেকে ২১ ডিসেম্বর, ১৯৭১
১৯৭১ সালের ১২ থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদ পুনরায় ভারতীয় উপমহাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে। ১৩ ডিসেম্বর অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও সেনা প্রত্যাহারের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা পেশকৃত একটি খসড়ার উপর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেটো দেয়। এদিকে, ঢাকা এবং ভারতের একতরফা একটি অস্ত্রবিরতির ঘোষণার ফলে উপমহাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়ে পরে এবং এর ফলে জাতিসংঘে ভারতের অবস্থান আরো সুদৃঢ় হয়। ভারত কর্তৃক গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বীকৃতি এবং পশ্চিম সেক্টরে একতরফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণাটি ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করার জন্য বাধ্য করে। ভারত এটাও নিশ্চিত করে যে, পাকিস্তানের কোন স্থানীয় প্রাদেশিক নকশা ছিল না। এরপর পাকিস্তান এই পুরো বিষয়টি সাধারণ পরিষদে ফেরত নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ১০৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ২৩টি দেশ এই বিষয়টিতে স্বাক্ষর করে। ফলশ্রুতিতে, পাকিস্তানের সকল চেষ্টা ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, বাংলাদেশের তৎকালীন পরিস্থিতি সম্পর্কে জাতিসংঘের সদস্যদের পরিষ্কার ধারনা ছিল।
অবশেষে, ১৭ ডিসেম্বর ভারত পশ্চিম সেক্টরে একতরফা অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় এবং এতে পাকিস্তানেরও স্বীকৃতি ছিল। ফলে, ২১ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ একটি সমাধান দিতে সক্ষম হয় এবং এতে বলা ছিল যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সকল বিরোধপূর্ণ এলাকায় একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা কঠোরভাবে পালন করা হবে এবং যতদিন এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হবে, ততদিন পর্যন্ত এর প্রভাব কার্যকরী থাকবে। এইসময় তারা জম্মু ও কাশ্মীর এলাকায় তাদের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে রাখবে এবং এই ব্যাপারটি ভারত ও পাকিস্তানে অবস্থিত জাতিসংঘ সামরিক পর্যবেক্ষক গ্রুপের দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হবে। এই রায়ে ১৩টি দেশ এর পক্ষে ভোট দেয় এবং কেউ এর বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। অবশ্য ২টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।