শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
আন্তর্জাতিক বিষয়ক চর্চা কমিশন এর বিবৃতি | বাংলাদেশ ডকুমেন্টস | ৯-১২ জুলাই, ১৯৭১ |
পাকিস্তানের উপর প্রদানকৃত বিবৃতি আন্তর্জাতিক বিষয়ক চার্চ কমিশনের,কার্যনির্বাহী কমিটির দ্বারা অনুমোদিত হয়,জুলাই ৯-১২,১৯৭১
২৬তম জেনেভা কনভেনশন,জুলাই ৯-১২,১৯৭১ সময়ে পাকিস্তানি জনগণের দূর্দশা আন্তর্জাতিক বিষয়ক চার্চ নির্বাহী কমিশন কমিটির জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়,ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অফ চার্চের সদস্যদের
এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় বিশেষ করে যারা ভারত ও পাকিস্তানের। মানুষের জীবন নাশ,যার পরিমাণ হয়ত কখনই জানা যাবে না।উদ্বাস্তুদের উপরে চলতে থাকা অসহনীয় দূর্ভোগ এবং এছাড়াও যাদের
জীবন যাত্রা ব্যাহত হয়েছে দরিদ্রদের সহজাত সহিংসতার প্রকাশের মাধ্যমে যা পাকিস্তানীদের উপমহাদেশীয় প্রতিবেশিদের উপরও প্রভাব ফেলে।
দারিদ্র ও নিপিড়িতদের পাশে দাঁড়ানো ক্রিস্টানদের জন্য অন্যতম দ্বায়িত্ব।তাছাড়া আমাদের উদ্বেগ সেসকল ভাই বোনদের নিয়ে যারা মারা গেছে,নিজেদের গৃহ থেকে বিতাড়িত হয়েছে,যাদের ভবিষ্যৎ বিদেশি মাটিতে উদ্বাস্তু ক্যাম্পে ঘুরে ঘুরে কাটবে এবং যারা এখনও দারিদ্রতা এবং নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিনিয়ত টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
আমরা জাতির মাধ্যমে,যাদের অপরিমেয় শক্তি ও সম্পদ আছে এবং চার্চের মাধ্যমে অসহনীয় দূর্ভোগের পরিসমাপ্তির জন্য যা এখনও সংশোধনযোগ্য তার জন্য পাকিস্তানি কর্তিপক্ষের কাছে গঠনমূলক পদক্ষেপ নেবার জন্য আবেদন করছি।ক্ষতি মোকাবেলার পূর্বশর্ত অতিসত্বর পুর্ব পাকিস্তানে ঘটে চলা নিপীড়ন বন্ধ করা এবং উদ্বাস্তুদের তাদের ঘরে ফিরে যেতে সহায়তা করা।এবং এই কাজ পাকিস্তানের শাসকগনের হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্ভবপর নয়,তাই আমরা তাদের কাছ থেকে যত দ্রুত সম্ভব সহায়তা আশা করছি।
এটি অবশ্যই একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং এটি নির্ভর করবে যারা এই কাজে এখন পর্যন্ত সহায়তা করে আসছে তাদের মানসিকতার উপরে নির্ভর করে,জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থা,ভারতে অবস্থিত উদ্বাস্তুদের কস্ট লাঘব করতে।চার্চকে তাদের উপর অর্পিত কাজের ভার গ্রহন করতে বলা হয়েছে এবং আমরা উদারভাবে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।
উদ্বাস্তুরা তাদের দেশে শান্তিতে ফিরে যাবে এই আশায় জরুরি ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করা হয় নি।এবং এই ত্রাণ বিতরণ চালিয়ে যেতে হবে কারণ এর মাধ্যমে মানুষের দূর্দশার জন্য দায়ী অবস্থার নিবারণ করা সম্ভব।এই ত্রাণ বিতরণ দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে চালিয়ে যেতে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।যাদের কাছে দেবার মত তহবিল আছে তাদের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে ত্রাণ বিতরণ করা।এই বিয়োগান্তক ঘটনার স্বদ্ব্যবহার করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে নিজেদের স্বার্থ স্বিদ্ধি করা তাদের উচিত হবে না।
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানি সরকারের দ্বায়িত্ব উপলব্ধি করে,আমরা বিশ্বাস করি যে বর্তমান সংকট মুহুর্তে
আন্তর্জাতিক বিষয়ে সরকারের আরও গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি রয়েছে এবং আমরা দৃঢ়ভাবে এটাও বিশ্বাস করি যে,
মানুষ তাদের জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারনে স্বাধীন হওয়া দরকার।আমরা বিশ্বাস করি পাকিস্তান সরকার মানুষের কাছে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে এই মতবাদের সত্যতা প্রদর্শন করবে।এবং একই সাথে জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত নেতাকে সমগ্র জাতির দ্বায়িত্ব নিতে হবে।বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিমের অধিবাসী যারা নূন্যতম মৌলিক চাহিদার যোগানের মাধ্যমে মানবিকভাবে নিজেদের জীবনযাত্রায় ফিরতে চাইছে।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক চার্চ কমিশনের অনুসারে;
সর্বত্র খ্রিস্টান চার্চগুলোর উপরে নির্দেশ জারি করা হয় যেন সকল প্রত্যভিযোগের অথবা রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমতের জন্য কারাবাসের বিপরীতে পাকিস্তানের সকল উদ্বাস্তুদের নিরাপদে এবং নিশ্চয়তা সহকারে বাড়ি ফিরে যাবার ব্যাপারে চার্চগুলো মৌলিক সমর্থন দেয়।
পাকিস্তান থেকে খাদ্য ও আশ্রয় ছেড়ে আসা ভারতের উদ্বাস্তু দের কস্ট লাঘবের জন্য চার্চগুলোর কাছে উদারভাবে সাড়া প্রদানের এই আহ্ববান ইতমধ্যে আন্তঃগীর্জা সাহায্য কমিশন,উদ্বাস্তু এবং বিশ্ব সহায়তা সাহায্যের মাধ্যমে বাস্তবায়ন লাভ করে।
নিজেদের সরকারকে প্রভাবিত করতে জাতীয় সংগঠকদের প্রতি আহব্বান করা হয় যেন পাকিস্তান সরকারকে চাপে রাখার জন্য যেন পূর্ব পাকিস্তানের নেতাদের সাথে বৈঠকে বসে রাজনৈতিক মধ্যস্ততার মাধ্যমে পাকিস্তানে ভবিষ্যত নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিশ্চয়তা প্রদান করা সহ,বিধ্বস্ত এলাকার পূনর্গঠন করতে সরকারক অকাতরে দান করে এবং রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌছানোর পর পূর্ব পাকিস্তানের নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য চাপের মুখে রাখা।