You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.11 | বাংলাদেশের শরনার্থীদের সাহায্যের জন্য আর্জেন্টিনীয় বুদ্ধিজীবী মহলের আহবান | বাংলাদেশের ডকুমেন্টস - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশের শরনার্থীদের সাহায্যের জন্য আর্জেন্টিনীয় বুদ্ধিজীবী মহলের আহবান বাংলাদেশের ডকুমেন্টস ১১ জুন, ১৯৭১

আর্জেন্টিনার বুদ্ধিজীবীমহল পশ্চিমবঙ্গের শরনার্থীদের জন্য সাহায্য পাঠাতে সরকারকে আহব্বান জানায়। সুত্র জুন ১১ ১৯৭১
আর্জেন্টিনার বুদ্ধিজীবীমহলের একটি প্রতিনিধিদল ১৯৭১ সালের ১১জুন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি:লুইস মারিয়া ডি পাবলো পার্ডো এর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং পশ্চিমবঙ্গের যে সব শরনার্থী ভারতে এসেছিল তাদেরকে জরুরি সাহায্য সহযোগিতা পাঠানোর অনুরোধ করে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। আর্জেন্টিনার প্রথম সারির লেখক ,বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ,চিত্রশিল্পী ,বিচারক এবং জাতীয় ও আন্তজার্তিক ব্যাক্তিত্ব ,সাথে স্বনামধন্য লেখক মাদামি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো এবং জর্জ লুইস বার্জেস এবং শ্রদ্ধেয় ফাদার ইসমাইল কুলিস ,ইএল সালভাদর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন।
এটা স্মারকলিপির পাঠযোগ্য অংশ যা সেই সময় আর্জেন্টিনার পত্রিকায় গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হয়েছিল।
পূর্ববঙ্গের সাম্প্রতিক দুঃখজনক ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশাল জনগোষ্ঠী নারী ,পুরুষ শিশু পালিয়ে প্রতিবেশি দেশ ভারতে গিয়েছে এবং বিশাল জনসংখ্যা সমস্যা তৈরী হয়েছে। নিজেদের ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভারত তার শান্তি ,সহ অবস্থান ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিবেদন করছে।
শরনার্থীরা খাদ্য ,বস্ত্র ,বাসস্থানের জন্য কঠিন সংগ্রাম করছে। এই দূর্ভাগা শরনার্থীর সংখ্যা ইতিমধ্যে চার লাখ ছাড়িয়েছে। ভারত যারা নিজেরাই নিজেদের জাতিগঠনে কাজ করছে ,তারা এই বিশাল জনগণ সংখ্যাকে একা আশ্রয় দিতে পারছে না।
আন্তর্জাতিক সমস্যা
মানুষের দুঃখদূর্দশার ঘটনা কোন সীমারেখা মানে না। পৃথিবীর যে কোন স্থানের দুঃখ ,মৃত্যু ,দারিদ্র্যতা পুরো মানবজাতির জন্য উদ্বেগের্।তবুও এটা দুঃখজনক যে পূর্ববঙ্গের ঘটনায় এখনো বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়নি অথবা মানবিক সমস্যা যেগুলো অন্যকোথাও সৃষ্ট এবং যার উপর কোন হাত নেই সেগুলো সমাধানের জন্য ভারতকে সাহায্য করার ব্যাপারেও যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নাই।ভারতকে এই অসহায় শরনার্থীদের চাহিদা পূরন করতে হচ্ছে এবং এটা করতে হচ্ছে নিজেদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করে। এটা সত্যি যে কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কিছু দেশ সাহায্যে করছে কিন্তু পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য পুরো মানবজাতির মিলিত সাহায্য প্রয়োজন কারন এটি ভারতের নিজস্ব তৈরি করা বা তাদের সাথে সম্পর্কিত নয় ,তাই এটা এখন জাতীয় নয় আন্তর্জাতিক সমস্যা।
এই নির্দিষ্ট ঘটনায় প্রতিক্রিয়া শুধুমাত্র কেতাবি পারস্পারিক নির্ভরতা ও শ্রদ্ধার প্রমান হিসাবে নয় ,এটা হতে হবে নির্দিষ্ট ও সরাসরি সাহায্য হয়ত টাকা বা পন্যসামগ্রী।

অথবা সবার মিলিত দায়িত্বের অংশ হিসাবে সাহায্য করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে অবদান রাখাও যুক্ত হতে পারে।
আশা করছি যে আমাদের সরকার নিজেদের সার্বজনীন ও পারস্পরিক সংহতির ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দ্রুততার সাথে যথাসাধ্য সবোর্চ্চ সাহায্য করবে ,যেন অবস্থার প্রক্ষিতে গনপ্রজাতন্ত্রী ভারতের উপর আরোপিত এই অবস্থার সমাধান হয়।