শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও প্রাসঙ্গিক ঘটনাবলী সম্পর্কে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের বিবৃতি | চায়না, পাকিস্তান এন্ড বাংলাদেশ- আর. কে. জইন সম্পাদিত | ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ |
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের বিবৃতি,
১লা ডিসেম্বর, ১৯৭১
সোভিয়েত ইউনিয়ন সরকারের প্রচন্ড উৎসাহ এবং সক্রিয় সমর্থনে ২১শে নভেম্বর, ১৯৭১ এ ভারত সরকার পাকিস্তানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নির্লজ্জভাবে একটি বড় মাপের যুদ্ধ আরম্ভ করে। এটা একটি প্রচন্ড ধাক্কা দিয়ে দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশের শান্তিকে গভীরভাবে বিঘ্নিত করেছে এবং সারা বিশ্বের মানুষের মনে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।৭ই ডিসেম্বর ১০ জন বিরত থাকাসহ ১০৪ থেকে ১১ জনের অপ্রতিরোধ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা গৃহীত জাতি সংঘের সাধারন সম্মেলনে একটি অতি জরুরী রেজল্যুশন, যা ভারতের প্রতি খুবই সদয় হয়ে ভারত পাকিস্তানের প্রতি যুদ্ধবিরতি আনার এবং ভারত পাকিস্তানের নিজস্ব বর্ডারের দিকে নিজেদের সশস্ত্র বাহিনীদের প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়।এই রেজল্যুশনটি সারা বিশ্বের মানুষের এবং সেই সকল দেশ যারা শান্তি ভালবাসে ও আগ্রাসন ও হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করার জন্য ন্যায়ের পক্ষ নেয়, জাতি গুলোর নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত হয় এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও বিশ্বের দেশ গুলোর প্রাদেশিক অখন্ডতা রক্ষা করে তাদের একটি সাধারন প্রতিফলন ঘটায়।
এটা গ্রহনের পর, জাতিসংঘের সাধারন সম্মেলনের এই রেজল্যুশনটি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক তাৎক্ষনিক ভাবে গৃহীত হয় কিন্তু ভারত সরকার কর্তৃক সুনিশ্চিতভাবে প্রত্যাখ্যাত হয় কে শান্তি চায় এবং কে যুদ্ধ চায়? কে আত্মরক্ষা করছে এবং কে যুদ্ধের সুত্রপাত করছে? এটা কি একদম পরিষ্কার নয়? বিশ্বের বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ গুলোর বিরোধিতা উপেক্ষা করে, ভারত সরকার পুর্ব পাকিস্তানের রাজধানী, ঢাকায় বিপুল সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে, তার নৌবাহিনী দিয়ে পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সমুদ্রবন্দর ও সমুদ্রপথ অবরোধ করে, এবং পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার বিমান বাহিনীর সাহায্যে অবিরাম অবাধ বোমা বর্ষন চালিয়ে, সবচেয়ে নৃশংস পাশবিকতার কোন কিছুতে না থেমে, তার আগ্রাসনের যুদ্ধকে প্রসারিত করে যাচ্ছে। এই কার্যকলাপ ভারত সম্প্রসারণবাদীদের প্রচন্ড উচ্চাকাঙ্খাকে পুরোপুরি উন্মুক্ত করেছে। একটি বৃহত্তর ভারতীয় সম্রাজ্যের স্বপ্ন লালন করে, তার শুধুমাত্র পুর্ব পাকিস্তানকেই গ্রাস করতে চায়না বরং পাকিস্তানের অখন্ডতা নষ্ট করতে চায়। যদি সময়মত ভারত সরকার কর্তৃক সংঘটিত এই আগ্রাসন থামানো না যায়, তাহলে পাকিস্তানই একমাত্র ভুক্তভোগী দেশ হবে না, অবধারিত ভাবে ভারতের অন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোও বিপন্ন হবে। জাতি সংঘের চীন এবং ভারত প্রবর্তিত শান্তিপুর্ণ সহাবস্থানের পাঁচটি মূলনীতির আলোকেই হোক বা এশিয়ান-আফ্রিকান বান্দুং সম্মেলনের দশটি মূলনীতির আলোকেই হোক, এই রকম একটি রাষ্ট্রীয় ব্যাপার একেবারেই অবৈধ।
ভারত সরকার দাবি করে যে, তারা পুর্ব পাকিস্তানের জনগণের জাতীয় আকাঙ্খাকে অনুধাবন করে এবং পুর্ব পাকিস্তানি উদ্বাস্তুদের তাদের মাতৃভুমিতে ফেরত আনতে যুদ্ধের সুত্রপাত করেছে। এই দাবি অবশ্যই চরমভাবে অযৌক্তিক। বিশ্বের অনেক দেশেই জাতীয়তার সমস্যা আছে, যেগুলো জনগণের ইচ্ছা ও স্বার্থ অনুসারে সঠিকভাবে ও যুক্তিসংগত ভাবে সমাধান করা প্রয়োজন, কিন্তু এইগুলো সেই সকল দেশের অভ্যন্তরিন বিষয়, যেগুলো শুধুমাত্র তাদের সরকার ও জনগণের দ্বারা সমাধান করা যায়, এবং যাতে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই।
পাকিস্তান সরকার পুর্ব পাকিস্তান প্রশ্নে বারবার সহানুভুতিশীলতা ও সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে একটি রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। ভারতের কি অধিকার আছে অন্যের বিষয় নিজের হাতে তুলে নেওয়ার, অযাচিত ভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরিন বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং এমনকি শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ দিয়ে আক্রমন ও পুর্ব পাকিস্তান দখলের? এটা সবাই জানে যে, ভারতেরও জাতীয়তা নিয়ে নিজস্ব সমস্যা রয়েছে, যার জটিলতা ও প্রকটতা পৃথিবীর অন্যত্র খুব কমই দেখা যায়। ভারতকে এটা জিজ্ঞেস করা যায় যে, যদি অন্য দেশ গুলো ভারতের সাথে একই আচরন করে যা তারা পাকিস্তানের সাথে করছে এবং ভারতের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করে তাহলে তাদের প্রতিক্রিয়া কি হবে। ভারত সরকার ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পুর্ব পাকিস্তানের জনগণের আকাঙ্খার তথাকথিত অনুধাবনের জন্য এই “চিন্তাশীল উদ্বেগ” দেখায়। কিন্তু জনগণের স্মৃতিশক্তি এত ক্ষীণ নয় যে ভুলে যাবে যে, ভারত এবং পাকিস্তান অনেক আগেই কাশ্মিরের মালিকানার সিদ্ধান্ত নিতে সেখানে একটি গণভোটের আয়োজন করেছিল কিন্তু পিতা নেহেরু ও তাঁর কন্যা উভয়ের সরকারই তাদের কথার খেলাপ করেছে এবং তা করতে অস্বীকার করেছে। ভারত সরকার কেন তাহলে কাশ্মিরের জনগণের আকাঙ্খার প্রতি এতটা উদাসীন?
প্রশ্নটা পুর্ব পাকিস্তানের শরনার্থীদের তাদের মাতৃভুমিতে ফিরে যাওয়ার হলে, সেটা হওয়া উচিত এবং সেটা শুধুমাত্র ভারত ও পাকিস্তানের আলোচনার মাধ্যমেই হতে পারে এবং বলপ্রয়োগ করা একেবারেই অসঙ্গত। ভারত পাকিস্তানের মধ্যে গত দুই দশক থেকে অনেক বেশি উদ্বাস্তু আদান প্রদান হয়নি এবং ভারত পাকিস্তান বিভাজনের পর কি সেটা আরো বেশি না? এই কারনে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে প্রায়শই দ্বন্দ্ব লাগে। ভারত-পাকিস্তানের জনগণের এই সকল দুর্ভোগ এর মূল হলো দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর বৃটিশ সম্রাজ্য কর্তৃক ভারত পাকিস্তানের বিভাজন পরবর্তী অস্থিরতা। উপনিবেশবাদ আমাদের আফ্রো-এশিয়ান মানুষদের উপর বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। এই তিক্ত ক্ষত কি যথেষ্ট ছিল না সাম্রাজ্যবাদের প্রতি আমাদের জাতীয় ঘৃনাকে তুলে ধরার জন্য। আমাদের কি এর পরিবর্তে একে অপরকে হত্যা করা উচিত? যাইহোক, ভারত এখন ব্যাপকভেব সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করছে এবং আগ্রাসনের যুদ্ধের শিখা সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এরফলে এটা শুধুমাত্র পূর্ব পাকিস্তানের সাড়ে সাত কোটি মানুষকে উদ্বাস্তুই করছে না বরং ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের জনগণের উপরেই দুর্ভোগ বয়ে আনছে। ভারত সরকার এককভাবেই একটি তথাকথিত “বাংলাদেশ” তৈরী করেছে এবং এবং সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে একে পূর্ব পাকিস্তানে সন্নিবেশিত করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সৌরান সিংহ বলেছেন যে, ভারতীয় সৈন্য বাহিনী ততদিন পর্যন্ত পাকিস্তানে থাকবে যত দিন এই শাসন ব্যবস্থায় তাদেরকে প্রয়োজন। এটা প্রমান করে যে, এটি একটি পুতুল সরকার, যেটা ভারতীয় বেয়নেটের সুরক্ষা ছাড়া টিকতে পারবে না। এই অর্থে এটা ঠিক ৩০ ও ৪০ দশকের তথাকথিত “মানচুকো” এর মতই, যা জাপানী সামরিকতন্ত্রের আশ্রয়াধীন ছিল।
সোভিয়েত সরকার এই ভারত কর্তৃক চালু করা পাকিস্তান বিরোধী আগ্রাসনের যুদ্ধে একটি লজ্জাজনক ভুমিকা পালন করেছে। সমগ্র বিশ্ব পরিস্কার ভাবে দেখেছে যে এটা ভারতের সম্প্রসারবাদীদের একটি গোপন ব্যবস্থা। অনেক বছর ধরে, সোভিয়েত সরকার সক্রিয়ভাবে ভারতের প্রতিক্রিয়াশীলদের লালন করছে এবং ভারতকে এর বাহ্যিক সম্প্রসারনের জন্য সাহায্য করছে। গত আগস্টে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারত একটি চুক্তি সাক্ষর করে, যেটাকে “শান্তি, বন্ধুত্ব এবং সহযোগিতা” এর তকমা দেওয়া হয়েছে কিন্তু তা আসলে প্রকৃতপক্ষে সামরিক জোটের চুক্তি। তারা দাবি করে যে এই চুক্তি কোন দেশের বিরুদ্ধে নয়, কিন্তু এটা সুনির্দিষ্টভাবে তাদের যৌথ ষড়যন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উতখাত, হস্তক্ষেপ ও আগ্রাসনকে তীব্র করা হয়েছে। আগ্রাসনের যুদ্ধের সুত্রপাতের পর থেকে, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতের আগ্রাসনের যুদ্ধকে চাঙ্গা করার জন্য ও এর উদ্দীপনা বাড়ানোর জন্য ভারতে অস্ত্র ও সরঞ্জাম অবিরাম সরবরাহ চালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে।
যেটা জনগণকে অত্যন্ত রুষ্ট করেছে তা হল, জাতিসংঘে সোভিয়েত সরকারের প্রতিনিধি। নিরাপত্তা পরিষোদের সময় ছিল এবং আবারো যুদ্ধ বিরতি ও সেনা প্রত্যাহারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে ব্যবহার করছে, যা প্রবল সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ ও সারা বিশ্বের মানুষের প্রত্যাশা। সোভিয়েত সরকার যথেচ্ছভাবে চীনের নিন্দা করেছে, অভিযোগ করে যে, চীনই ভারত ও পাকিস্তান দ্বন্দ্বকে আন্দোলিত করেছে এবং “এশিয়দেরকে এশিয়দের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত করেছে”। আসলে এটা সোভিয়েত সরকার নিজেই যে কিনা প্রকৃতপক্ষে এবং সত্যিকার অর্থে “এশিয়দেরকে এশিয়দের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত করেছে”। সোভিয়েত ইউনিয়নের এমন করার উদ্দেশ্য সবার জানা, আর সেটা হল ভারতের ওপর তার নিয়ন্ত্রন আরো জোরদার করা, এবং এর মাধ্যমে সমগ্র দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশ ও ভারত মহাসাগরের ওপর কর্তৃত্ব করার জন্য অন্যান্য পরাশক্তিগুলোর সাথে বিবাদের সুত্রপাত করা এবং একইসাথে ভারতকে প্রতিপালন করা ও দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশে এর সহকারী হিসেবে ভারতকে একটি উপ-পরাশক্তিতে পরিনত করা ও এশিয়ার বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অংশীদার করা। বর্তমানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় ভারতের হঠাৎপাকিস্তান আক্রমন নিঃন্দেহে ১৯৬৮সালে সোভিয়েতের দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশের উপর আক্রমনের ও চেকোস্লাভিয়া দখলের পুনরাবৃত্তি। সোভিয়েত সরকারের এই আচরন আবারো এর সাম্রাজ্যবাদী বৈশিষ্ট্য এবং এর সম্প্রসারনবাদী উচ্চাকাঙ্খা প্রকাশ করল। আমাদেরকে অবশ্যই সর্বদা সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারনবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে, এবং আমরা আমাদের দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশের বন্ধু প্রতিম দেশ গুলোর পাশাপাশি বিশ্বের সকল দেশকে পরামর্শ দেব যারা উপ-পরাশক্তির পরাশক্তি দ্বারা আঘাত বা হুমকির শিকার হতে পারে যে, তাদের কোন অবস্থাতেই তাদের সতর্ক নজরদারি শিথিল করা উচিত না বরং ধারাবাহিকভাবে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা উচিত এবং সবসময় শত্রুকে প্রতিঘাত করার জন্য তৈরী থাকতে হবে যারা কিনা তাদেরকে আক্রমন করার সু্যোগ খুঁজবে।
চীন সরকার ও জনগণ ধারাবাহিকভাবে সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারনবাদ, উপনিবেশবাদ, ও নব্য-উপনিবেশবাদের বিরোধিতা করছে এবং দৃঢ়ভাবে পৃথিবীর সকল দেশের জনগণকে তাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব, এবং আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষায় ও বৈদেশিক আগ্রাসন, পরাভব, হস্তক্ষেপ, নিয়ন্ত্রন এবং বিদ্রুপের বিরুদ্ধে তাদের ন্যায়সংগত সংগ্রামকে সমর্থন করে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধ একটি আগ্রাসন ও আগ্রাসন বিরোধীর মধ্যকার, বিভাগ ও বিভাগ বিরোধীর মধ্যকার এবং পরাভব ও পরাভব বিরোধীর মধ্যকার সংগ্রাম। রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে, পাকিস্তানের জনগণ ও সশস্ত্র বাহিনী এই সংগ্রামে বীরত্বের একটি প্রশংসনীয় উদ্দম প্রদর্শন করেছে। চীন সরকার এবং জনগণ পাকিস্তান সরকার এবং এর জনগণকে তাদের আগ্রাসন, বিভাজন ও পরাভবের বিরুদ্ধে সংগ্রামে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে; আমরা এটা শুধু রাজনৈতিকভাবেই করছি না বরং তাদেরকে বস্তুগত সাহায্যও দিয়ে যাব। চীন সরকার দৃঢ়ভাবে মেনে চলে যে, ১৯৭১ এর ৭ই ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সাধারন সম্মেলনে গৃহীত রেজল্যুশন অতি দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যে, আগ্রাসন বনাম আগ্রাসন বিরোধী, বিভাজন বনাম বিভাজন বিরোধী ও পরাভব বনাম পরাভব বিরোধীর প্রশ্নে কোন নিরপেক্ষতা থাকতে পারে না। কিছু ক্ষমতাধরেরা ভাল ও মন্দের মধ্যে কোন পার্থক্য করছে না এবং নিষ্ক্রিয় ও নিরব থাকছে, সবকিছু ক্ষমা করে গেছে এবং আগ্রাসকদের শোষনের অনুমতি দিয়েছে। এর ফলাফল হতে মিউনিখ এবং জাতি গুলোর সাবেক লীগ এর ভুল পথেই আবার হাটা।
ইতিহাসে বারবার প্রমানিত হয়েছে যে, কোন আগ্রাসকের শেষ পরিনতি ভাল হয় না। সোভিয়েতের সংশোধনবাদী সামাজিক-সাম্রাজ্যবাদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে ভারতের সম্প্রসারনবাদীরা এখন পাকিস্তানের বড় এলাকা আক্রমন ও দখল করেছে এবং উপমহাদেশের উপর কর্তৃত্ব করার একটি বন্য প্রয়াশে হিংস্র আচরন করছে, এই কল্পনায় যে তারা তাদের পথ পেয়ে যাবে।
যাইহোক, ভারত সরকারের বিষয়ী আশার বিপরীতে, এর আগ্রাসনের অপরাধ আরো শক্তিশালী অসন্তোষের এবং পাকিস্তান অংশের জনগণের ও ভারতীয় জনগণসহ দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশের অন্যান্য জাতির মধ্যে প্রতিরোধের জন্ম দেবে, অতঃপর এর জন্য দক্ষিন এশিয়া উপমহাদেশে কোন শান্তি থাকবে না। যে আগুন নিয়ে খেলবে, আগুন তাকে গ্রাস করবে। ভারতীয় সম্প্রসারনবাদী ও তাদের গোপন পরিচালকদের অবশ্যই তাদের কৃতকর্মের তিক্ত ফল ভোগ করতে হবে। জয় নিশ্চয়ই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা মহান পাকিস্তানি জনগণের অধিকার, জয় নিশ্চই মহান ভারতের এবং দক্ষিন এশিয়ার অন্যান্য দেশের জনগণের অধিকার যারা স্বাধীনতা, শান্তি এবং সাচ্ছন্দ্য ভালবাসে, জয় অবশ্যই বিশ্বের সকল মানুষের অধিকার যারা শান্তি ভালবাসে এবং ন্যায়কে সমর্থন করে।