সাক্ষাৎকারঃ রাজিনা আনসারী
নভেম্বর মাসে আমি বুকাবুনিয়া পেীঁছি। জনাব আলমগীর বুকাবুনিয়ায় এক হিন্দুবাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ট্রেনিং শেষ হবার পর আমি আলমগীর সাহেবের সাথে কয়েকটি অপারেশনে অংশগ্রহন করি। তাঁর নেতৃত্বাধীনে আমি পটুয়াখালী, আমতলী, পাথরঘাট ইত্যাদি স্থানে পাকসেনাদের সাথে সম্মুখসমরে অবর্তীণ হই।
আমতলী থানা অপারেশনঃ আমতলী থানা অপারেশনের কথা আমার আজও মনে আছে। ৫০ জনের একটি দল নৌকায় করে আলমগীরের নেতৃত্বে বুকাবনিয়া থেকে আমতলী থানা আক্রমণ করার জন্য ভারতের দিকে রওনা দেয়। আমিও ঐ দলের সদস্য ছিলাম। পরদিন রাত ৮ টায় বুকাবুনিয়া থেকে ২৪/২৫ মাইল দুরে অতমলীতে পৌঁছি। আমতলী এলাকার আরও ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা আমাদের সাথে অংশগ্রহন করেন। আমরা ১০০ জন মিলে রাত ১ টার সময় আমতলী থানা আক্রমণ করি। আমাদের সাথে ছিল ২ টা হালকা মেশিনগান ও রাইফেল। আমতলী থানায় পাকসেনা, রাজাকার ও পুলিশ মিলে ছিল ১৫০ জনের মত। রো আমাদের প্রচন্ডভাবে বাধা দেয়। আড়াই ঘন্টা ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রচন্ড গোলাগুলি চলে। আমি আমার মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের যুদ্ধের সময় মনোবল বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করি। এ যুদ্ধে পাকসেনাদের ২০ জন নিহত এবং অনেক আহত হয়। এরপর আমরা নিরাপদে আমতলী অবস্থান পরিত্যাগ করে বুকাবুনিয়া চলে আসি। আমাদের কেউ এ যুদ্ধে নিহত হননি।
এছাড়া আমি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা- শুশ্রুষা করি। ক্লান্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবাযতœ ছাড়াও তাদের থাক-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত করার দায়িত্ব আমার উপর ছিল। স্বাধীন হবার পর ক্যাপ্টেন মেহেদী আমাকে আমার বাব-মার কাছে পাঠিয়ে দেন।
স্বাক্ষর – রাজিনা আনসারী