You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.20 | বাংলাদেশে মর্মান্তিক ঘটনার প্রতি সিনেট সদস্য স্যাক্সবীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ উল্লেখ | সিনেটের কার্যবিবরণী - সংগ্রামের নোটবুক

শিরোনামঃ বাংলাদেশে মর্মান্তিক ঘটনার প্রতি সিনেট সদস্য স্যাক্সবীর দৃষ্টি আকর্ষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ উল্লেখ
সূত্রঃ সিনেটের কার্যবিবরণী
তারিখঃ ২০ জুলাই, ১৯৭১

কংগ্রেস সম্পর্কিত সিনেট কার্যবিবরণী
পূর্ব পাকিস্তানের মর্মান্তিক ঘটনা
২০ জুলাই, ১৯৭১ স ১১৫৯১
জনাব স্যাক্সবী। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আমি পূর্ব পাকিস্তানে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার পরবর্তী প্রভাব এবং হিসাব সম্পর্কে সিনেটরদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। কোন দীর্ঘ বক্তব্যের প্রয়োজন নেই। অনুচ্ছেদ গুলো নিজেরাই কথা বলে। আমি শুধু এটাই পুনরাবৃত্তি করতে চাই যে পাকিস্তানকে সহায়তা বন্ধ করতে স্যাক্সবী-চার্চ সংশোধনীতে ৩১ টি অনুমোদন পাওয়া গেছে। এই অনুমোদনকারীগণ, সাথে আইডাহোর সিনেটর (জনাব চার্চ) এবং আমি মার্কিন সিনেটের এক-তৃতীয়াংশ গঠন করে। আগামীকাল অন্তত একজন সিনেটর এই বর্ধমান অনুমোদনকারী তালিকাতে নাম লেখাবেন। আমরা শুধু চাই আমেরিকা আবার কোন গৃহযুদ্ধের কবলে না পড়ুক।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আমি পাকিস্তান সম্পর্কে অনুচ্ছেদ গুলোতে সকলের সম্মতির লিখিত অনুলিপি দাবী করছি।
[বোস্টন সানডে গ্লোব, ১১ জুলাই, ১৯৭১ হতে গৃহীত]
পূর্ব পাকিস্তান – একটি ক্রমবর্ধমান সঙ্কট – মৃত্যু আর ধ্বংসের চাক্ষুষ বিবরণী
ঢাকা থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত নদীর কূল ঘেঁষে ছড়িয়ে থাকা পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীর ফেলে যাওয়া ধ্বংসযজ্ঞের চাক্ষুষ বিবরণী নিম্ন লিখিত বিশেষজ্ঞ কলামে বলা হয়েছে যা মে মাসের শেষ দিকে ঐ এলাকায় ধারণ করা হয়েছে।
উইলিয়াম এইচ এলিস, জনৈক কানাডিয়ান প্রকৌশলী যিনি বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী বাঁধ নিয়ে কাজ করছেন। তিনি তাঁর কর্মক্ষেত্রে একটি অনানুষ্ঠানিক এবং খুবই বিপদজনক একটি সমীক্ষা চালান এবং তাতে নিজের মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। এই বার্তা ডঃ জন রোডের নিকট পাঠানো হয় যিনি এক সময় ঢাকাতে কলেরা গবেষণাগারে কর্মরত ছিলেন এবং বর্তমানে বোস্টনের শিশু হাসপাতালে আছেন।
ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় হতে জলবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী এলিস এখন পাকিস্তান ত্যাগ করেছে।
এলিস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রাকারী একটি শিপিং সংস্থার জলযানে(কোস্টার) করে নারায়ণগঞ্জ ত্যাগ করে যা বরিশালে যাত্রা বিরতি করেছিল। বাঁধানো চিঠিটি নিম্নরুপঃ
জাহাজ মোটামুটি ৬০০ জনের মত যাত্রী বহন করছিল। তারা ছিল সর্বত্র। লাইফবোটের নিচে, উপরে, কেবিনের উপরে, জাহাজের পাটাতনের মাঝখানে, গুদামের মধ্যে, করিডরে – সর্বত্র। আমি ইঞ্জিন কক্ষের দিকে যেতে চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আমার বিস্কুট ছুঁড়ে না দিয়ে আমি যেতে পারছিলাম না তাই আমি আবার পাটাতনের উপরে ফিরে এলাম।
আমরা আরো দুটি বিপরীত দিক থেকে আসা কোস্টারের দেখা পেলাম যেগুলো সামরিক যানবাহন দ্বারা পূর্ণ ছিল। চাঁদপুরে একটি তেলবাহী জাহাজ নোঙ্গর করে ছিল। কিছুদূর সামনে ডজনখানেক বোঝাই করা স্থানীয় নৌকার দেখা মিলল।
হত্যাযজ্ঞ
নদীর তীর ধরে সত্যিকার অর্থে কোন কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে না। মাঝে মাঝে কোন লোক দাঁড়িয়ে আছে, কখনো বা নৌকা বয়ে যাচ্ছে, মাঠে কোন কাজ হচ্ছে না, কোন চাষাবাদ নেই, রাখালের গরুর দল চড়াচ্ছে ক্ষেতে – এইই চোখে পড়ছে কেবল।
বরিশাল প্রায় জনশূন্য ছিল। কারফিউ শুরু হবার দেড় ঘণ্টা আগেও কেবল কুকুর গুলো ছিল রাস্তায়।
আমি যখন নামলাম তখন বুঝতে পারলাম কেন ওরা আমাকে নামতে দিতে চায় নি। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন তারা ১০ থেকে ২০ জন মানুষ এখানে হত্যা করছে। স্থানীয় একজনের কাছ থেকে এই তথ্য আমি পেয়েছি। প্রতিদিন বিকাল ৪ টায় এখানে ১০-২০ টি বিরতি নিয়ে নিয়ে একক গুলির শব্দ পাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে তারা খালে মৃতদেহ দেখতে পায়।
আপাতদৃষ্টিতে এই হত্যাযজ্ঞ গত সপ্তাহ থেকে বন্ধ আছে, নিদেনপক্ষে গুলিবর্ষণ বন্ধ হয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা আরো মৃতদেহ দেখতে থাকে এবং যা বুঝা যাচ্ছে যে তারা এখনো বন্দীদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েই যাচ্ছে (বেয়নেট দিয়ে)।
আমি পোস্টারে (লুটপাট করা দোকান ঘরে) হিন্দুবিরোধী অভিযানের প্রমান পেয়েছি। যেখানে বলা আছে “যুদ্ধকালীন আইনের কর্তৃপক্ষের অধীনে”। আমি আমার স্থানীয় গাইডকে জিজ্ঞেস করাতে সে বলেছিল, ওগুলো হিন্দুদের দোকান ছিল। এই অভিযান অত্র এলাকায় দুই বা তিন সপ্তাহ ধরে চলছে।
পশুসম
এখানে এখন বহু হিন্দু পলায়নপর অবস্থায় পড়ে আছে। কিন্তু তাদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই। তারা সীমান্ত পেরিয়ে ভারত চলে যেতে পারছে না। যখন একদিকে তারা পালাতে চায়, দেখে সে দিকে পাকিস্তানী সেনা তাদের পথরোধ করে আছে। তারা অন্যদিকে পালায়। তাদেরকে পশুর মত তাড়া করে বেড়ানো হচ্ছে।
এই অঞ্চলে একেক পরিবারে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য থাকে, কিন্তু তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার নেই। এখানে প্রচুর কাহিনী শুনতে পাওয়া যায় যে কিভাবে মুসলিমরা কথা গোপন করেছিল, হিন্দুদেরকে লুকিয়ে রেখে নিজের বিপদ নিজে ডেকে এনেছিল। এক গ্রামে তারা মুসলিম দের প্রধানকে ডেকে এনে হিন্দুরা কোথায় আছে জানতে চায়।
তিনি বলতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে পাট দিয়ে মুড়িয়ে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়…। সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তিতে প্রচুর আবেদন দেখা যাচ্ছে – শিল্প কারখানার শ্রমিকদের কাজে ফিরতে, সরকারি চাকুরীজীবীদের তাঁদের দায়িত্বে ফিরে আসতে। কিন্তু সবাই এটা জানে যে যদি কেউ কাজে ফিরে তবে সে গুলি খেয়ে মরবে।
…… এটা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছিল যে সেনাবাহিনী তিনটি বিষয় এই ক্রমে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিবেঃ প্রথমে, অন্তর্ঘাতক এবং ভারতের হিন্দু, দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগের সকল সদস্য, তৃতীয়ত, গেরিলা যোদ্ধারা এবং অন্যান্য “অসামাজিক” বিষয়।

নিরন্তর দহন
দক্ষিণে সমুদ্রের দিকে যাওয়া ছাড়া ওদের আর কোন পথ নেই। তারা সাগর আর ক্রমশই এগিয়ে আসতে থাকা সেনাবাহিনীর মাঝখানে আটকা পড়ে গেছে।
বরিশাল থেকে ডাকের নৌকায় করে আমি খুলনা পৌঁছুলাম। এলাকাটি প্রহেলিকার মতো শান্ত। এখানকার ভূমি অতিশয় সবুজ আর সতেজ কিন্তু কোথাও কোন প্রাণের সাড়া নেই। কিছু সময় পর পর আমরা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখলাম।
অন্য সময় আমরা গন্ধ পেতাম কিন্তু কচুরিপানা হতে তাদের তুলতাম না এগুলো পানির নিচে ভাসত।
……… আমরা আগুনে পুড়তে থাকা গ্রামের মধ্য দিয়ে যেতাম।যে আগুন মাইল ব্যাপী চলত।জঙ্গলগুলো এত ঘন ছিল যে জমির পর এর ভিতর দিকে কিছু দেখা যেত না কিন্তু আকাশের দু’পাশে আমরা ধোয়া দেখতে পেতাম।মাঝে মাঝে সার্চলাইটের আলোতে নদী তীরের দিকে দৌড়াতে থাকা নগ্ন মানুষকে দেখা যেত।তারা তাদের মাথায় অল্প কিছু সংখ্যক নিজের জিনিপত্র বহন করত।
এরপর যখন আমি লঞ্চের উপরের অংশে বসে ছিলাম তখন একজন কর্মচারী আমার পাশে বসে এবং বলে যে এই জ্বালাওপোড়াও গত দুই সপ্তাহ ধরে চলছে, প্রতি রাতে ………
এমনকি এই এলাকা যেটি জলোছ্বাস(নভেম্বর, ১৯৭০) হতে অনাক্রান্ত ছিল সেখানে হয়তোবা সাধারণ শস্যের ১০ শতাংশ থাকতে পারে –এই কারণে অধিকাংশ মানুষকে পালাতে হয়েছে অথবা খুন হয়েছে………
আমরা কুনাতে পৌছলাম।পরেরদিন সকালে- সেখানকার চলমান কর্মকান্ডের কিছু অংশ এখানে দেয়া হল………
এই এলাকাতে পরিস্থিতি হল নিছক চরম বিশৃংখল এর কাছাকাছি এর কারণ এই কুনা সীমান্তের পাশের এলাকা এবং ব্যাপক সংখ্যকের প্রভাবে এমনকি যারা কাজ করতে ফিরতে চায় তাদের জন্য এটি কার্যত অসম্ভব।
সেখানে ব্যাপক লুটপাট এবং জ্বালাওপোড়াও চলছিল কারণ সেখানে কোন আইন এবং শৃংখলা ছিল না……….. প্রতিদিন দিনের আলোতে ১০ থেকে ২০ জন ছুরিকাঘাত করা হত। আমি সেখানে থাকাবস্থায় একজন পুরুষ আর তার ছেলেকে ছুরিকাঘাত করা হয়………
যখন সেনাবাহিনি আসে মুসলিম লীগ ,আওয়ামী লীগ এবং হিন্দুদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। সেনাবাহিনী আসে আওয়ামী লীগ এবং হিন্দুদের নিশ্চিহ্ন করতে…… গ্রামের মধ্যে…সরকারি চাকুরিজীবিরা খুন হওয়ার ভয়ে অফিসে যেত না, তাদের সেনাবাহিনী হিন্দুদের খুন করতে বেশী ব্যস্ত ছিল…………
আমি যশোর ভ্রমণ করেহি ……… একটি রাস্তা যেটিতে আমি আগে অনেক বার ভ্রমণ করেছি…… আমি সেটিকে খুব ভালোভাবে চিনতাম ,আমি গ্রামটিকে চিনতাম এবং আমি কর্মকান্ড জানতাম…………… সেটি জনমানবশূন্য।
রাস্তার দু’পাশে গ্রামগুলো পুড়ে গিয়েছিল।আমরা গ্রামগুলো এ কোথায় দেখতে পাচ্ছিলাম না…………… তালগাছগুলোর দিকে তাকালে আপনারা দেখতে পাবেন যে তালগাছের পাতাগুলো সব ঝলসানো এবং গাছের গুড়িগুলো কালো বর্ণে রজিত।
কিছু গ্রাম সাতিশয়ে বাদ গিয়েছে এবং তাতে কিছু মানুষ আছে যারা আনমনে আপনার যাওয়ার পথে আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
সাধারণত কলগুলো কালো ধোঁয়া উদগিরণের কাজ করে; আমরা শুধুমাত্র একটি কলকে দেখলাম ধোঁয়া বের করতে………সেখানে পথের ধারে অসংখ্য ইটভাঁটা আছে, সবগুলোই জনমানবশূন্য।
পূর্বের মত মাঠের মধ্যে কার্যত কোন কাজকর্ম চলছিল না………চাষবাসের একমাত্র চিহ্ন ছিল চারণরত গবাদিপশু।
আপনি যখন কোন প্লেনে (যশোরে ) উঠেন তখন এটি বেশ আকর্ষণীয় হয়ে দাঁড়ায়……… আপনার মালপত্র খোলা হয়েছে প্রতি অংশে তল্লাশি চালানো হয়েছে, আপনার সম্পূর্ণ শরীর তল্লাশিতে গিয়েছে…………তারা আমার পকেট চাকু খুযে পেয়েছিল এবং তা আমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছিল……আপনি প্লেনে উঠলে দু’জন সশস্ত্র গার্ডকে পাবেন।
৩৭০
আমি স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছিলাম পিষিয়ে দেয়া এলাকাগুলোর আশপাশ।অধিকাংশ ঘরবাড়ি দেখতে ছাঁদ ছাড়া বাক্সের মত দেখাচ্ছিল।

সবকিছু অচল
১০,০০০ হাজার ফুট উচ্চতা হতে এটি সুস্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল যে নদী, রাস্তা কিংবা চলার পথে কোনো যানবাহন নেই।কিছুই চলছিল না, কোন নৌকা তীরে বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়নি।
আমরা ঢাকার পশ্চিমে গঙ্গা অতিক্রম করলে, সেখানে অল্প কিছু সংখ্যক মাল বোঝাই নৌকা ছিল হয়তোবা পাঁচটি কিংবা ছয়টি, যেখানে স্বাভাবিক সময়ে আপনি ডজনখানেক দেখতে পেতেন।আমরা নিচের দিকে গেলে পরিস্থিতি তূলনামূলক স্বাভাবিক দেখলাম ঢাকার কাছাকছি যাওয়া পর্যন্ত এবং এরপর আমি আবার মুখ ছাড়া বাক্সের নমুনা দেখতে পেলাম, যেখানে ছাঁদগুলো সব পোঁড়া……… এবং তখনও নিষ্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্য বিরাজমান।
ঢাকায় ফেরত যাওয়া হল।এটি স্পষ্ট যে পরিস্থিতি একটি নতুন ধাপে প্রবেশ করেছিল যেখানে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে শহরের ,রাস্তার যানচলাচলের এবং এখানে হিন্দুদের নির্মলে বড় ধরণের অপারেশন চালাচ্ছে………যে সরকার দেশ চালাচ্ছে; জেনারেলদের গুপ্ত সমিতি ;তারা তাদের নিজেদের প্রোপাগান্ডা এমনভাবে গিলেছে যে তারা সত্যিকারে বিশ্বাস করে যে, প্রতি ঘটনার পিছনে একজন ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী দায়ী এবং প্রতিটি হিন্দু সন্দেহভাজন এবং দেখামাত্রই গুলি চালাতে হবে।
যেটি আমার কাছে এসেছে, পুরো দেশে এমন কোন পরিবার নেই যেটী ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি-কোন সদস্যকে হারায়নি অথবা লুঠিত হয়নি অথবা তাদের নারীরা ধর্ষিত হয়নি; কিংবা কিশোরী মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হয়নি।
এবং এটি স্বত্তেও ,কিংবা শুধুমাত্র এই কারণে এই সরকার সাধারণ মানুষ হতে কোন সমর্থন পায়নি।
সকলেই জানে পাকিস্তানের পত্রিকায় যা তারা পড়ছে সবই মিথ্যে এবং অভিজ্ঞতা হতে জানে যে অল ইন্ডিয়া রেডিও তে যা শুনে তা সত্য।
এটি উল্লেখযোগ্য তারা যেভাবে সকল গ্রামের খবর খুঁজে বের করে আনে।
এটি স্পষ্ট যে ঢাকার অবস্থা অন্যান্য জায়গা হতে অনেক বেশী স্বাভাবিক এবং এই স্বাভাবিক শব্দটি পূর্ব পাকিস্তানে সাবার কাছে একটি চলমান কৌতূক হয়ে দাড়িয়েছে………এমনকি ঢাকায়ও এখন তারা দিনের আলোতে হামলা চালাতে উদ্দ্বত।
গত সোমবার ১ টার দিকে তারা হাত গ্রেনেড ছোড়ে এবং ব্যাংকে ক্ষয়ক্ষতি দেখে গ্রেনেডই বলা যায়।
যাহোক ১টার দিকে তারা ঢাকার সাতটি জায়গায় আক্রমণ চালায়………… এবং অতএব তারা ঢাকাতেও আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে; যেটিকে এই দেশের স্বাভবিক এলাকা বলে মনে করা হয়।
অন্যান্য বিষয়দি যা আমি আগে বর্ণনা করেছি যে, বাঙ্গালীদের সাথে আমি সময় কাটিয়েছি এবং তারা আমাকে বলেছে, “দয়া তোমার দেশ হতে যেন কোন সাহায্য না পাঠায়, এমনকি “খাদ্যও…….. খাদ্যগুলো শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর কাছে যাবে এবং আমাদের যন্ত্রণাকে বাড়াবে”। একজনের বেশী লোক আমাকে বলেছে “আমি এখন যে যন্ত্রণা চলছে তাতে মরার চেয়ে অনাহারে মরে যেতে চাই”।