শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
প্রেসিডেন্ট নিক্সনের সংবাদ সম্মেলন | নিউ ইয়র্ক টাইমস্ | আগস্ট ৫, ১৯৭১ |
ওয়াশিংটন, আগস্ট ৪ – প্রেসিডেন্ট নিক্সনের আজকের সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের বিবরণ নিচে তুলে ধরা হলো:
খোলা বক্তব্য
ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ, এই মাত্র স্টেট সেক্রেটারি সাহেবের সাথে যেই বিষয়গুলো নিয়ে আমার কথা হয়েছে, তার কিছুটা পূর্ব রেশ টেনে আমি আমার বক্তব্য শুরু করতে চেয়েছিলাম, কারণ আমি জানি যে, এই বিষয়গুলো যেকোন অনুষ্ঠানেই সম্ভবত উঠে আসতে পারে।
আমাদের আলোচনার বিষয় হলো পাকিস্তানের উদ্বাস্তু পরিস্থিতি নিয়ে, আমরা কি কি করলাম তার পাঠ পর্যালোচনা করা। এখন পর্যন্ত ভারতে যেসব উদ্বাস্তু রয়েছে তাদের নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন, এসব উদ্বাস্তুর সহায়তায় অদ্যাবধি পর্যন্ত আমরা ৭০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছি এবং এর চেয়েও বেশি সহায়তা দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। এই প্রসঙ্গে বলে রাখতে চাই যে, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো যে সহায়তা দিয়েছে এটা তার সমষ্টিক পরিমাণের চাইতেও বেশি, ফলে এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ পরিমাণের অর্থ।
পূর্ব পাকিস্তানে যারা রয়েছে তারা নিজেরাও কতোটা উদ্বিগ্ন, যেহেতি আপনারা জানেন যে, সেখানে এখন দুর্ভিক্ষ জারির সম্ভাবনা রয়েছে, সময়টা এমন যে শস্য উৎপাদন যতোটা খারাপ হবে বলে ধারনা করা হয়েছিল ঠিক ততোটাই খারাপ হয়েছে, ঠিক এই সময়ে আমরা সেখানে ৩,৬০,০০০ টন শস্য পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রেখেছি। এছাড়াও আমরা মানুষের ভিড়ে উপচে পড়া পোর্টগুলোতে এসব শস্য পৌছে দেয়ার জন্য বিভিন্ন নৌযান ভাড়া করতে আরও ৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছি।
পরবর্তী পদক্ষেপ হিশেবে স্টেট সেক্রেটারি সাহেব আমার পূর্ণ সমর্থন নিয়ে আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘে গিয়ে সেখানকার দায়িত্বশীল ও সংশ্লিষ্ট সদস্যবৃন্দ সহ জাতিসংঘ হাই কমিশনারের সাথে তার অফিসে এই বিষয়ে কথা বলার পরিকল্পনার কাজ শেষ করেছেন, সেখানে তারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে পাড়ি দেয়া উদ্বাস্তুদের সহায়তাসহ পূর্ব পাকিস্তানে রয়ে যাওয়া যেসব জনগোষ্ঠী দুর্ভিক্ষপীড়িত অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাদের সহায়তার জন্য আরও অতিরিক্ত সম্ভাব্য উপায়গুলো খুজে বের করবেন।
গতকাল হাউজ যে সমস্যার কথা অবতারণা করেছে সে সম্পর্কে বলতে চাই- যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পাকিস্তানে আর্থিক সহায়তা প্রদান বন্ধ করে দেয়ার মতো কোন সিদ্ধান্তের পক্ষে আমরা নই। এ ধরণের কোন কাজ উদ্বাস্তু সমস্যাকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে, কারণ এ কাজের অর্থ হলো যে, খাদ্য ও অন্যান্য রসদ-খোরাকী বন্টনের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘের সাথে একত্রে কাজ করার যে আগ্রহ দেখিয়েছে সেখানে কিছুটা স্থিতিশীলতা আনয়নের চেষ্টায় দেশটির সামর্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমরা অনুভব করি সবচেয়ে বেশি যে গঠনমূলক ভূমিকাটি আমরা পালন করতে পারি তা হলো পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি আমাদের আর্থিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা আর এর মাধ্যমে ঘটনা পরিক্রমাকে এমন একটি পথে চলতে প্রভাবিত করা যা পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষুধার সমস্যাকে একটি রফায় নিয়ে আসবে, যা ভারতে উদ্বাস্তুদের ঢল কমিয়ে আনবে এবং যেটা আমরা বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে সমস্যাটির একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক নিষ্পত্তি খুঁজে বের করার দিকে দৃষ্টি দেবে।
পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের উপর জনগণের চাপের সাথে আমরা যুক্ত হতে যাচ্ছি না। এটা সম্পূর্ণভাবে বিপরীত ফলদায়ক হবে। এগুলো এমন সব ব্যাপার যা নিয়ে আমরা কেবল আমাদের নিজস্ব মাধ্যমেই আলোচনা করবো।