শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে আর্থিক সাহায্য দেয়া উচিত নয়ঃ বৃটিশ এমপি মিঃ পিটার শোর-এর বক্তব্য | সানডে টাইমস | ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
ব্রিটিশ এমপি, মিঃ পিটার শোর-এর বক্তব্য
২রা সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
বক্তব্যের উপর একটি রিপোর্ট নিম্নরূপঃ
স্টেপনি-এর লেবার দলের এমপি মিঃ পিটার শোরের দৃষ্টিতে পশ্চিম পাকিস্তানে ব্রিটিশ সরকারের উচিত হবে না বাণিজ্যিক অথবা আর্থিক সাহায্য আবার শুরু করা।
মিঃ শোর, যিনি মাত্রই স্টেপনির বিশপ, রাইট রেভারেন্ড ট্রেভর হাডলস্টোন-এর সাথে দিল্লী এবং পশ্চিম পাকিস্তানে এক সপ্তাহের পরিদর্শন শেষে ফিরেছেন, তারা পররাষ্ট্র সচিব, স্যার ডগলাস-হোমের নিকট এই প্রস্তাব প্রেরণ করেন, পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারকে বুঝতে হবে যে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেছে এবং সেখানে ক্ষমতা থেকে সরে আসতে শুরু করতে হবে।
গতকাল (২রা সেপ্টেম্বর), মিঃ শোর বলেন, “এখন পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার একটি সন্তোষজনক সীমারেখা গ্রহণ করেছে, কিন্তু অক্টোবরে বাণ্যিজ্য সুবিধা পুনরায় শুরু করা উচিত হবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহিত হবে।”
“পশ্চিম পাকিস্তান সরকার, সাহায্য পুনরায় শুরু করার জন্যে, পূর্ব বাংলায় একটি বিশদ উইন্ডো ড্রেসিং অপারেশন*(*অর্থনৈতিক বিবরণী দেয়ার আগে অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করার নামই হচ্ছে উইন্ডো ড্রেসিং অপারেশন) –এর কেস দাঁড়া করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে কেউই এটা দ্বারা ক্ষুব্ধ না হয়।”
“আমাদেরকে অবশ্যই আমেরিকান সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে যার পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। আমেরিকান সরকারের নীতি অনিশ্চিত, যদিও তারা তাদের নিজস্ব কংগ্রেস থেকেও চাপে আছে।”
“সিনেটর কেনেডির ভারত সফর থেকেই এটি বেড়ে চলেছে, এবং আমি আশা করি যে ব্রিটেনে যেভাবে ধারণার পরিবর্তনের শুরু হয়েছে একইভাবে আমেরিকান ধারণাও পরিবর্তিত হতে থাকবে।”
মিঃ শোর বলেন, “এটা পুরোদস্তুর সত্য যে, পাকিস্তান ভেঙ্গে গেছে।” তিনি বলেন, “শুরু থেকেই তারা ভৌগলিকভাবে ১,০০০ মাইল দ্বারা পৃথক ছিল।”। তিনি বলেন, “এখন তারা রাজনৈতিক এবং সার্বজনীন লক্ষ্যের অর্থে ঠিক একই দূরত্বে পৃথক হয়েছে। তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে।”
“পূর্ব পাকিস্তানের আপামর উৎসুক জনতার ইচ্ছার প্রেক্ষাপটে, যেটি এখনও প্রতি মাসে এক মিলিয়নেরও বেশি হারে বেড়ে চলেছে, আমি দেখতে পাই না যে, ভয়াবহ কোন চাপের ভিত্তিতে, যা বস্তুত স্বৈরশাসন; পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারের পক্ষে এই দুই অসম পাকিস্তানকে একত্রে এনে একটি অবিভক্ত রাজনৈতিক সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।”
মিঃ শোর, যিনি সফরকালে “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী” তাজউদ্দিন আহমেদের সাথে একটি আলোচনায় বলেন যে, “যদি পশ্চিম পাকিস্তান সরকার এখনই পূর্ব বাংলা থেকে ক্ষমতা ফিরিয়ে নিতে শুরু না করে, আরেকটি তিক্ত এবং অনিয়ন্ত্রিত গৃহযুদ্ধ নিশ্চিত শুরু হবে যেখানে অন্যান্য জাতি জড়িত হতে পারে।