ভারতীয় এলাকায় পাকসেনাদের গোলাবর্ষণ অব্যাহত
কলকাতা, ৩ জুন- পাকিস্তানী সেনারা ভারতীয় এলাকার মধ্যে অসামরিক অঞ্চলসমূহ যথারীতি গোলা বর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। ইউএনআই জানাচ্ছে গতকাল কোচবিহার জেলার সীমান্তবর্তী চারটি গ্রামে পাকসেনাদের গোলাবর্ষনে একজন গ্রামবাসী আহত হয়। গত চারদিন ধরেই পাকসেনারা এই গ্রামগুলিতে প্রচুর গোলাগুলি চালাচ্ছে। ফলে এক বিরাট সংখ্যক মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে।
আসামের গোয়ালপাড়া জেলার সোনাহাট ও তৎসন্নিহিত গ্রামগুলিতে গতরাতে পাকসেনারা কামান থেকে গোলা চালায়। সরকারী সুত্রের রির্পোটে জানা যায় যে গতকাল সকাল ১১ টা থেকেই পাকসেনারা ঐ অঞ্চলে মারাত্বকভাবে গুলি চালাতে শুরু করে এবং আজ সকাল পর্যন্ত চালায়।
মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বহু পাকসৈন্য খতমঃ সীমান্তের ওপর থেকে জলপাইগুড়িতে প্রাপ্ত সংবাদে বলা হয় যে, গত ২৪ ঘন্টায় বাংলাদেশে মুক্তিবাহিনী উত্তর রনাঙ্গনে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। কোচবিহারের অপরপারে ভুরুঙ্গামারির সীমান্ত চেকপোষ্ট থেকে তারা ইয়াহিয়া বাহিনী উত্তর রনাঙ্গনে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে। কোচবিহারের অপরপারে ভুরুঙ্গমারির সীমান্ত চেকপোষ্ট থেকে তারা ইয়াহিয়া বাহিনীকে হটিয়ে দিয়েছে। এখানকার যুদ্ধে কমপক্ষে সাতজন খান সেনা নিহত হয়।
চিলাহাটি ও ডোমার ও এরমধ্যে তিস্তার উপর এবং কাকিনা ও ভূষিরবন্দর- এর মধ্যে সানায়াজনসন নদীর উপর মোট ৩টি সেতু মুক্তিসেনারা ধধ্বং করে দেয়। ফলে লালমনিরহাটের দিকে পলায়নপর খানসেনাদের একটি দল বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দিনাজপুর জগদলে আগুয়ান পাক সেনাদলকে মুক্তিযোদ্ধারা বাধা দেয় এবং ঠাকুরগাঁও পাওয়ার হাউসটি ক্ষতিসাধন করে। এই আকস্মিক আক্রমনের ফলে বহু পাকসেনা নিহত হয়েছে। রংপুর জেলার ডিমলা ও বয়রাতে ইয়াহিয়ার সাতজন গুপ্তচরকে মুক্তিযোদ্ধারা খতম করে এরা মুসলিম লীগ ও জামাত-ই ইসলামী দলের লোক বলেও প্রকাশ।
-কালান্তর, ১জুন, ১৯৭১