মুক্তিফৌজের গেরিলা কৌশল সফলতার মুখ দেখছে
(অনুবাদ)
আগরতলা জুন ৪
চট্টগ্রাম পার্বত্য বিভিন্ন স্থান,নোয়াখালী, কুমিল্লা, সালদানদী, গঙ্গাসাগর ও আখাউড়া সেক্টরে সালদানদী এলাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানি আর্মির উপর গেরিলা কৌশল ব্যবহার করে মুক্তি ফৌজ কমান্ডোরা হামলা চালায়। নিহত হওয়া পাকি সেনার মধ্যে এখন ছিল মেজর দোউরানি। যে মার্চ এবং এপ্রিল মাসে কুমিল্লা শহরে গণহত্যা চালিয়েছিল।
সীমান্তের ওপাশ থেকে আসা আরেকটা রিপোর্ট বলে ‘’পাকিস্তানি বাহিনী তথাকথিত বাংলাদেশের
বিভিন্ন স্থানে গঠিত হওয়া শান্তি কমিটির উপর ক্রমান্বয়ে আস্থা হারাতে শুরু করে। পাকি সেনারা ফেনী এবং লাকসামে শান্তি কমিটির কমপক্ষে পাঁচ সদস্যকে হত্যা করেছে।
জুনের ২ তারিখ পাকি সেনারা ‘’ পিজে চামার্স’’ নামের এক বিদেশি কে হত্যা করে, যিনি সিলেটের ‘নুলতা টি স্টেইট’ দেখা শুনা করতেন। তারা চা বাগানের ২০ জন শ্রমিক কে ও হত্যা করে। পাক সেনা কর্মকর্তারা মিস্টার চামার্সের কাছ থেকে সৈন্যদের জন্য রেশন, জ্বালানি এবং চা দাবি করে। কিন্তু তিনি তার অর্থনৈতিক সংকট এবং দেশের মনমরা অর্থনীতির কথা চিন্তা করে তাদের দাবি মেটানোর অক্ষমতা প্রকাশ করেন।
এজেন্সি আরো জানায়ঃ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে মেহেরপুর শহরের লাক্ষাছড়ি গ্রামে মুক্তি যোদ্ধাদের সাথে গুলি বিনিময়কালে একজন অফিসার সহ ৪ জন পাকি সৈন্য নিহত হয় এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়।
মুক্তি ফৌজরা কালভাট, ব্রিজ এবং পাকা সড়কের কাছে মাইন পুতে। ফরিদপুরে মুক্তি বাহিনী একটা ব্রিজ এবং একটা পাকিস্তানি পোস্ট গুড়িয়ে দেয়।
মুক্তিযোদ্ধারা রাঙ্গামাটি এলাকায় সব গুলো গ্রাম পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। পত্নিতলা থেকে ৬ মাইল উত্তরে মুক্তিযোদ্ধারা একটি সেনা চৌকি উড়িয়ে দেয়।
সিলেট সেক্তরে মুক্তিযোদ্ধারা ২ টা ব্রিজ এবং সরলবাগে পাকি সেনাদের অবস্থানের উপর হামলার রিপোর্ট দেয়। সমশেরনগর সীমান্তের কাছে মুক্তিযোদ্ধারা পাকি সেনাদের উপর গুলি চালায়।
রংপুর সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকি সেনাদের একটি গানবোট ডুবিয়ে দেয় এবং শিরাজগঞ্জ এলাকার কাছে একটা রেল ব্রিজ উড়িয়ে দেয়।
কুমিল্লা সেক্টরে মুক্তিবাহিনী সেনা অবস্থানের উপর হামলা চালায় এবং ক্রনে বাজারে ২৫ পাকি সৈন্য কে হত্যা করে।
আমাদের কুচবিহার প্রতিনিধি জানায় যে পাকি সৈন্যরা মোগলহাট সীমান্ত থেকে ভারতের গিতালদাহ বর্ডার আউট পোস্তে হামলা চালায়। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী( বিএসএফের) সাথে তাদের এক ঘন্টা গুলি বিনিময় চলে।
বাংলাদেশের কান্থালবারতি এলাকায় মুক্তুবাহিনি এবং পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে সংঘর্ষ কালে ভারতীয় সীমান্তের মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা এলাকায় কিছু পাকিস্তানি মর্টার শেল এসে পড়ে। এখবর বহরমপুর থেকে অফিসিয়ালি জানা গেছে।
– হিন্দুস্থান টাইমস, ৫ জুন ১৯৭১