শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১৯৫। বাংলাদেশকে স্বীকৃতির দাবীর প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাব | ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় | ২৫ মে, ১৯৭১ |
রাজ্য সভায় ২৫মে, ১৯৭১ এ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার প্রশ্নে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাব
জনাব ডেপুটি চেয়ারম্যান, স্যার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যদের যেসব বক্তৃতা দেয়া হয়েছে তাতে দেশের সাধারন অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। এই আবেগ তাদের জন্য স্বাভাবিক ও স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ। বাংলাদেশে যারা সেনা শাসনতন্ত্র দ্বারা শোচনীয় ভাবে নির্দয় নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতার স্বীকার হয়েছে তাদের জন্য এই আবেগের প্রকাশ। এই বিতর্কে উপস্থিত সব সদস্যদের নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে পুরো ঘটনার বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ব্যপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের জনগনের সমর্থন ও নির্বাচনী ফলাফল আওয়ামী লীগের ভুল এবং সেনাশাসন এতে কিংকর্তব্যবিমুঢ়। যদিও রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান কিছু কথাবার্তা শুরু করেছেন।
আমি আমার সম্মানীয় বন্ধু শ্রী জাইন এর দেয়া বিশ্লেষণের সাথে একমত যে, পশ্চাতের দৃশ্য বিশ্লেষণে এটা মনে হয়, যখন এসব আলোচনা চলছিল তখন সেনা শক্তিকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে আনা হয় এবং হঠাত করেই আলোচনা বন্ধ হয়ে যায় ও পাকিস্তানি সামরিক শক্তি বাংলাদেশি নিরস্ত্র জনগনের উপর এর আধুনিক নির্দয়তার প্রকাশ ঘটায়। যে বর্বরতা সংগঠিত হয়েছে তার সাক্ষী শুধু ভারতে আশ্রয় নেয়া শত শত হাজার দুর্ভাগা মানুষই নয়, সারা পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের সব স্বাধীন পর্যবেক্ষকেরা। সেনারা যখন নিরস্ত্র মানুষের উপর হামলা শুরু করে তখন বাংলাদেশে অবস্থানকারী লোকের দল, সামরিক শাসক বাংলাদেশীদের উপর যে হামলা করেছিল সেই বর্বরতার সাক্ষী দিয়েছে। এছাড়াও তখন ঢাকায় অবস্থানকারী বিদেশি সাংবাদিকদের যত দ্রুত সম্ভব ঢাকা ও বাংলাদেশ ছাড়তে বলে ও হামলার দিনগুলোতে বিদেশি সাংবাদিকদের লেখায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠুরতার পর্দা উন্মোচনের যে কাহিনি বর্ণনা করা হয়েছে তা পুরো বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয় এবং আমি বলবো এই পরিস্থিতে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাধারন জনগনের অভিমত আরো বেশি জীবন্ত ও প্রতিক্রিয়াশীল।
আমি সেইসব স্বাধীন সাংবাদিক ও বিদেশিদের শ্রদ্ধা জানাই যারা বাংলাদেশের দুঃসময়ে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। ব্রিটিশ, আমেরিকা, ইউরোপ এমনকি এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সংবাদ মাধ্যমের কারণে আস্তে আস্তে সত্য বেরিয়ে আসে এবং তথ্য প্রচারের জন্য তাদের প্রতি সম্মান জানাই। এটা সত্য যে অনেক সরকার রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসন বাংলাদেশে যে হামলা করেছে তার সরাসরি সমালোচনা করেনি তবে বিশ্ব নেতারা আমাদের নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের ঘটনা সম্পর্কে তারা অবগত এবং আরো বলেছে পাকিস্তানি সরকারকে বাংলাদেশে নিরর্থক চাপ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব তারা চেষ্টা করবেন।
কারনবশত তাদের কেউ কেউ ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসনের ভূমিকাকে দায়ী করেছে। বাংলাদেশী জনগনের ভোগান্তির জন্য পাকিস্তান শাসকদের সিদ্ধান্ত দায়ী এবং সামরিক শাসন ও পাকিস্তান সরকারের রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান যদি চিন্তা করে থাকে তারা বাংলাদেশী বীর যোদ্ধাদের স্বাধীনতার চেতনাকে নিরোধ ও দমন করবে তাহলে তারা দুঃখজনক ভাবে ভুল করছে। স্বাধীনতার এই আগুন, এই শিখা একবার তীব্র হলে তা কম হতে পারে কিন্তু নিভে যায়না। এটাই বিশ্বের ইতিহাস। এবং সামরিক শাসনের নিপীড়ন ও নির্যাতন মুক্তিবাহিনী ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী বাহিনীকে নিবৃত করতে পারবেনা। এই পরিস্থিতিতে আমরা একটি দুঃখজনক অবস্থার মুখোমুখি, যেখানে প্রধানমন্ত্রী গতকাল হাউজে তার বিবৃতিতে নির্দেশ করেছেন, যে সমস্যাকে পাকিস্তান সব সময় বলে এসেছে তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার এখন তা আমাদের আভ্যন্তরীণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং একথা অনস্বীকার্য যে বাংলাদেশ ও ভারত যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে তা পাকিস্তানের কারণে। এই পরিস্থিতিতে যখন লাখো মানুষ নিরাপত্তা ও আশ্রয়ের জন্য পূর্ব বাংলা থেকে ভারতে পালিয়ে গিয়েছে তখনো অনেকে বলেছেন এটা পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী তার বিবৃতিতে পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে এমন কথা মেনে নেয়া হবেনা। যেখানে প্রচুর পরিমানে শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী ভারতে অবস্থান করছে তখন আমরা পাকিস্তানের প্রতি অনেক দেশের নীরবতা মেনে নেব না – যেহেতু তারা বোঝাতে চাইছেন এটা পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা আমাদের জন্য সম্পূর্ণভাবে অপ্রত্যাশিত।
এই পটভূমিতে আমরা অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে এই ব্যাপারটা সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তি করেছি যে তাদের এমনভাবে আচরণ করা উচিত যাতে পাকিস্তান তার সৃষ্ট পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় চাপে থাকে যাতে প্রথমেই জনগন এই পরিস্থিতি থেকে সরাসরি বেরিয়ে আসে। দ্বিতীয়ত, এমন অবস্থার সৃষ্টি করা উচিত যেখানে পাকিস্তান ছেড়ে আসা জনগন ফিরে যেতে নিরাপদ বোধ করে এবং বাস করতে পারে। কারন তারা সেখানকার অধিবাসী। তৃতীয়ত, আমরা সম্পূর্ণ ভাবে স্পষ্ট করেছি যে এটা শুধু আমাদের স্থায়ী দায়িত্ব নয় বা হতে পারেনা। এটা বিশ্ব সম্প্রদায়েরও দায়িত্ব এবং এটা সম্পূর্ণভাবে সত্য যে ভারত তার সহিষ্ণু ঐতিহ্য অনুযায়ী এসব মানুষদের অস্থায়ী ত্রান ও সহায়তা দিতে তৈরি আছে। এই দায়ভারের ভাগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও নেয়া উচিত কারন এটা একটা আন্তর্জাতিক সমস্যা, ভারতের জাতীয় সমস্যা নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ অবস্থা দেখা দরকার।
প্রথমত যখন আমরা এতো বড় সমস্যা সামাল দিচ্ছি তখন কে আমাদের সাথে এগিয়ে আসল আর কে আসলো না সেটা নিয়ে পড়ে থাকা ঠিক নয়। এটা কোন বুদ্ধিমানের কাজ নয় বা ব্যবহারিকও দিক থেকে ভালো কিছু নয়। প্রথমেই যদি বলেন এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাজ কিন্তু তারা করেনি – আমি বলব – আমাদের কি করার ছিল যেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে তার বিবৃতিতে বলেছিলেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করছি পরিস্থিতির বাস্তবতা দেখুন যে এই শরণার্থীর বোঝা একটি আন্তর্জাতিক উদ্বেগ; এই বিপদের ইতি টানা উচিত এবং এমন অবস্থার সৃষ্টি করা উচিত যাতে এসব লোকেরা নিরাপদে ফিরে যেতে পারে। শুধুমাত্র তখনই আমরা সঠিক কাজটি করার ক্ষমতা রাখি, এবং এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হয়ত এটা জিজ্ঞেস করে খুব মজা লাগতে পারে যে যদি আমরা বা আমাদের দেশ ব্যার্থ হয় তাহলে কি করব? এসব ব্যাপার খোলাখুলি আলোচনা করা হয়না এবং আমরা পাকিস্তান খুবই একরোখা এর উপর ভিত্তি করে আগাতে পারিনা। বা যদি আমি এই অভিব্যক্তি প্রকাশ করি যে পাকিস্তান খুব সহজে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সবকিছু অস্বীকার করবে – হয়ত তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সমস্যার গুরুত্ব বুঝতে ব্যার্থ হবে – তখন আমাদের নিজেদেরকেই তার সমাধানের দিকে মনযোগী হতে হবে।
জনাব ভারমান তার সরকারি কার্যক্রম ও সংসদীয় কার্যক্রমের অভিজ্ঞতায় ভাল ভাবে জানেন যে মন্ত্রীসভায় কি ঘটছে তা নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারেনা এবং মন্ত্রীসভায় গৃহীত মতামত আমার কাছ থেকে জেনে কোন লাভ নেই। মন্ত্রীসভার আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সংসদের আগ্রহ থাকা উচিত নয় কারন এটা সরকারের ব্যাপার এবং প্রত্যেক সদস্যদের আলাদা আলাদা মতামত থাকতে পারে যার সাথে এগুলো সম্পৃক্ত হওয়া না হওয়া একই সাথে আমি এটা বলার সুযোগ নিতে চাই যে শ্রী রাজনারাইন ও জনাব ভার্মার উল্লিখিত পরামর্শ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
সরকারের সব সদস্যদের এই ব্যাপারে শ্রদ্ধা জানাই কারন সবাই একই মানসিকতার এবং সবার মতামত এক। ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে অনেক সময় কোন ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি বা কখনো তির্যক সমালোচনা শুনেছি – এমনটা হতেই পারে। আমরা সেই ফাঁদে পড়িনা। কারন কেউ কিছু বলবে আর তা সমর্থন বা প্রতিবাদের দায়ভার যাবে আমার উপর, যা সরকারের যে কোন সদস্যের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত। যতক্ষণ সরকারি সিদ্ধান্ত আছে ততক্ষন আলোচনার ব্যাপারে সংসদের উদ্বেগের কোন কারন নেই যা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে অগ্রবর্তী করে বা সিদ্ধান্ত তৈরি করে। এটাকে সরকারি নীতি হিসেবে গ্রহন করা উচিত।
সম্মানিত সদস্যদের জাহির করা সসম্যা গুলো নিয়ে আমি ভালো ভাবে চিন্তা করেছি। আসলে সেটা হবে জাতির প্রতিফলন যা মার্চ সেশনে অবিসংবাদিতভাবে সংসদের মিলিত ফলাফল এবং পরবর্তীতে অবস্থার বর্ণনা, জনগনের কাছে আমাদের অঙ্গীকার যে আমাদের পরিপূর্ণ সমর্থন ও সমবেদনা তাদের সাথে আছে (শ্রী চিত্ত বসুর বাঁধা দেয়া)। জনাব চিত্ত বসু, আমাদের এই ব্যাপারটাকে আরও গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।
দয়া করে নাক গলাবেন না। ধৈর্য ধরুন।
এখন সিদ্ধান্ত কি? আমি আবারো সিদ্ধান্ত জানতে চাচ্ছি কারণ স্মৃতি সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয় এবং অনেকসময় আমরা নিজেদের মীমাংসা ভুলে বসি। অন্যান্য ব্যাপারগুলো বর্ণনার পরে আমরা বলি-
“যেহেতু আমরা মানবাধিকার রক্ষা ও সমর্থন করি তাই ভারতে শান্তি বজায়ে থাকে এই স্বার্থ স্থায়ীভাবে মনে রাখতে হবে, হাউস চায় নিরস্ত্র মানুষের উপরে এই নৃশংস যজ্ঞ যত দ্রুত সম্ভব নিবৃত হোক”।
এটা ছিল হাউসের সর্বসম্মত চাওয়া-
“বিশ্বের সব মানুষ ও রাষ্ট্রেকে হাউস পাকিস্তানকে অবিলম্বে গণহত্যায় রুপ নেয়া ধ্বংসযজ্ঞের নিয়মানুগ ইতি টানতে বোঝানোর জন্য জরুরী ও গঠনমূলক ধাপ গ্রহণ করতে আহ্বান করেছে”।
যেহেতু আমরা বল প্রয়োগে নিবৃত্ত থাকার জন্য বলেছি এবং পৃথিবীর সব রাষ্ট্র ও মানুষের কাছে আবেদন করেছি, এটাকে আমরা দায়িত্তের সাথে পরিচালনা করব কারণ এটাকে আমরা অনেক রাষ্ট্রের কাছে নিয়েছি। এটাকে আমরা ইউনাইটেড নেশনস ও ECOSOC সোশ্যাল কমিটির কাছে নিয়েছি; মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারটা তাদের সাথে দেখা হবে।
“পূর্ব বাংলার সাড়ে সাত কোটি লোকের জয় অভ্যুত্থানে এই হাউস তার গভীর প্রত্যয় রাখবে”।
আমরা এখনো অবিরত এই দৃশ্যে বিদ্ধ যে এই বিজয় আসবেই।
“হাউস তাদের আশ্বস্ত করতে চায় যে, তাদের সংগ্রাম ও ত্যাগ ভারতবাসীদের একান্ত সমবেদনা ও সমর্থন গ্রহণ করবে”।
তার নির্দ্বিধায় ভারতবাসীর সমবেদনা ও সমর্থন গ্রহণ করেছে। সুতরাং কারোর মনে কোন দ্বিধা থাকা উচিত নয়, ভারতে কারোর মনে বা সরকারের কোন পক্ষে যদি এই ব্যাপারে কোন স্খলন থেকে থাকে তাহলে সমধান করে এই সিদ্ধান্তে একমত হবে।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার প্রশ্ন অনেক বিতর্কিত এবং আবেগজড়িত এবং কিছু সম্মানিত সদস্যদের শান্তিরক্ষা ব্যাপার আছে। এই প্রশ্নের ব্যাপারে আমাদের কোন বিশুদ্ধ বিতার্কিক ভাব গ্রহনের অভিপ্রায় নেই। বিভিন্ন বিতর্কের জবাব দেবার ইচ্ছা সরকারের নেই। তার মানে এই না যে, সম্মানিত সদস্যরা যেসব যুক্তি দেখিয়েছেন তার কিছু পয়েন্টে কোন বিপরীত যুক্তি নেই। কিন্তু আমাদেরকে এই সমস্যার অভিগমন বড় পরিসরে নিতে হবে এবং লোক সভায় উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের অবস্থান ঠিক করে ফেলেছি এবং এই একই ধরনের প্রশ্ন কাল হাউসে হবে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করছি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবস্থান বাদামের খোসার মত যা অবিরত তরল হচ্ছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে আমাদের চিন্তা ভাবনা সময়ের সাথে সাথে প্রকাশিত হতে থাকবে। আমরা পরিস্থিতির সাথে প্রতিনিয়ত আছি এবং এই ব্যাপারে কোন নির্দিষ্ট অবস্থান নেই। এবং যে কোন মুহূর্তে যদি আমাদের মনে হয় যে এতে শান্তি রক্ষা হবে, আমাদের জাতীয় স্বার্থ আছে এবং স্বাধীনতার জন্য যারা লড়ছে তাদের সাহায্য হয়, আমরা যে কোন পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবোনা হতে পারে সেটা স্বীকৃতি। এটা এমন একটা ব্যাপার যেখানে আমাদের সব দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় আনতে হবে এবং যখনই সরকার বুঝতে পারবে যে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারকে স্বীকৃতি দেবার সময় হয়েছে, আমরা তা করতে দ্বিধা করবোনা। নির্দিষ্ট নিয়ম আছে যা সতর্কভাবে বিবেচনা করতে হয় সেই সাথে আন্তর্জাতিক মানের ধরাবাঁধা নিয়ম রয়েছে। কিন্তু রাজ্য সম্প্রসারণের মত ব্যাপারগুলো এর নিয়ন্ত্রনাধিন, সমর্থনের বিস্তার, আদেশ পত্রের পরিমান, প্রকৃতপক্ষে যা বোঝায় এই উপাদান গুলি সব সতর্কভাবে বিবেচনা করতে হবে, আমাদের সম্পর্কের প্রতিক্রিয়া এমনকি পশ্চিম পাকিস্তানের সাথেও কারণ তাদের সাথে আমাদের বিশাল সীমান্ত রয়েছে, এবং যদি আমরা অন্য একটি দেশের অংশ হিসেবে পরিচিতি পাই যা ইউনাইটেড নেশন্স একটি দেশ হিসেবে গ্রহণ করে। এটা নিশ্চিত যে, যে দেশের অংশ সার্বভৌম ভাবে পরিচিত এবং স্বাধীন দেশ প্রতিক্রিয়া জানাবে। এটা আমাদের জন্য পুরোপুরি নিশ্চিত এবং আমার আর বলার প্রয়োজন নেই। এইসব বিবেচ্য বিষয় সমূহকে হাল্কা ভাবে নেয়া যাবেনা এবং যে কেউ আবেগ দিয়ে ব্যাপারটিকে শক্তভাবে অনুভব করতে পারে। আমাদের চিন্তায় কি আছে সে ব্যাপারে যাবনা এবং যে কোন পর্যায়ে যদি মনে হয় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতির প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, আমরা সেই পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবোনা। এরই সাথে জনাব ডেপুটি চেয়ারম্যান, আমি ইতি টানছি। আমি হাউসকে বেশিক্ষন আটকে রাখতে চাইনা।