You dont have javascript enabled! Please enable it! সশস্ত্র প্রতিরোধে দিনাজপুর- সাক্ষাতকারঃ খন্দকার আবদুস সামাদ | বাংলা একাডেমীর দলিলপত্র - সংগ্রামের নোটবুক

সশস্ত্র প্রতিরোধে দিনাজপুর
সাক্ষাতকারঃ খন্দকার আবদুস সামাদ
২২-৭-১৯৭৪

২৫শে মার্চ ১৯৭১ সালে আমি দিনাজপুর জেলার পঁচাগড় থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ছিলাম। ২৫ শে মার্চের পরপরই যখন ঢাকায় সৈন্যদের অতর্কিত আক্রমণের খবর পাই তখনই থানার ৫ জন অবাঙালি সিপাইকে নিরস্ত্র করে ঠাকুরগাঁ জেলখানায় পাঠিয়ে দেই। থানার বাঙালি সিপাহীরা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সহযোগিতা করে। এপ্রিলের প্রথমেই থানা ক্যাম্পাসে মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষন কেন্দ্র খোলা হয়। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, ইপিআর ও পুলিশ একযোগে প্রশিক্ষন কেন্দ্রে কাজ করে। ঠাকুরগাঁ উইং হেডকোয়ার্টার থেকে বাঙালি ইপিআরগণ তাদের অস্ত্রাদি নিয়ে পঁচাগড় চলে আসেন। থানার রাইফেলগুলো প্রশিক্ষন কেন্দ্রে দেয়া হয়। পঁচাগড় থানা ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষন কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার ব্যাপারে আমি নিজেও সক্রিয় ছিলাম। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু ছিল।

এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দিনাজপুর- পঁচাগড় রাস্তায় ভাতগাঁও নামক স্থানে একটি পুলে পাকিস্তানী সেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরাট সংঘর্ষ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সেনাবাহিনী, ইপিআর, পুলিশ ও ছাত্র- জনতা ছিল। সৈন্যদের ভারী অস্ত্রের মোকাবেলা করতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে এসে পঁচাগড়ে ডিফেন্স দেয়। উদ্দেশ্য, পাকিস্তানী সৈন্যদেরকে পঁচাগড়ে প্রবেশে বাধা দেয়া। ঐ সময়ই নিরাপত্তার জন্য আমি আমার পরিবারের লোকজনকে ভারত সীমান্তের কাছে ভিতরগড় নামক স্থানে স্থানান্তরিত করি। আমি নিজে পঁচাগড়েই অবস্থান করতে থাকি।

২১শে এপ্রিল সৈন্যরা গোলাবর্ষন করতে করতে পঁচাগড়ে ঢুকে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষ হবার পর সৈন্যরা পঁচাগড় থানা বাজারটি সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়। বহু লোক মারা যায়। মুক্তিযোদ্ধারা গ্রুপ হয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এবং ভারতে প্রবেশ করে।

————————————