You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.20 | বিভিন্ন বাংলাদেশ গ্রুপ বিষয়ক সংবাদ | বাংলাদেশ নিউজলেটার শিকাগো - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ
বিভিন্ন বাংলাদেশ গ্রুপ বিষয়ক সংবাদ বাংলাদেশ নিউজলেটার
শিকাগো নং: ৭
২০ আগস্ট, ১৯৭১

 

বিভিন্ন বাংলাদেশ গ্রুপ বিষয়ক সংবাদ

মধ্যপ্রাচ্যের বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন

চলার পথেঃ
ড ইসলাম এখন বাংলাদেশে। আসবার পথে তিনি বিচারপতি চৌধুরী, স্টিয়ারিং কমিটি এবং লন্ডনের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ ও দলসমূহের সাথে সাক্ষাৎ করেন। আশা করা যায় তিনি সেপ্টেম্বরের মাঝ অবধি বাংলাদেশে থাকবেন। ড ব্যানার্জি বিদেশী সাহায্য আইনের গালাঘার সংশোধনীর পক্ষে সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে ক্যাপিটাল হিলে প্রচারণা চালান। তিনি কজন গুরুত্বপূর্ণ সিনেটর এবং কংগ্রেস সদস্যের সাথে দেখা করেন।
ড ভট্টাচার্য এবং ড ও মিসেস ফারুক সংশোধনীটির উপর ভোটাভুটি আরম্ভ হবার পূর্বে এরূপ আরেকটি প্রচারাভিযান চালান এবং ৪৫ জন সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্যের সাথে কথা বলেন।
এঁরা ‘শেখ মুজিবের জীবন রক্ষাকল্পে’ সিনেটে একটি প্রচারকার্যও শুরু করেন।

ড ভট্টাচার্য ফিলাডেলফিয়া এবং কলাম্বিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল’ এর সভাতেও অংশগ্রহণ করেন।
ড ব্যানার্জি মন্ট্রিলে এক সফর শেষ করে ফিরে এসেছেন। সেখানে তিনি আমেরিকান কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে ওখানকার বাংলাদেশ গ্রুপের সাথে আলোচনা করেন। তিনি শীঘ্রই লন্ডন এবং প্যারিসের পথে রওনা হবেন।

মেইল ব্যাগঃ
দেশব্যাপী একটি টেলিফোন প্রচারাভিযান চলে। এতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও দলকে নিজ নিজ কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি চিঠি লিখতে উদ্বুদ্ধ করা হয় যার লক্ষ্য ছিল গালাঘার সংশোধনীর পক্ষে সেসকল কংগ্রেস সদস্যের সমর্থন আদায়। অহাইও এর ২৪ জন কংগ্রেস সদস্যের কাছে ২০০ এরও বেশি টেলিগ্রাম আসে। শেখ মুজিবের জীবন রক্ষায় দেশব্যাপী একটি টেলিগ্রাম প্রচারাভিযানেরও আয়োজন করা হয়।

অনুগ্রহ করে রাষ্ট্রপতি নিক্সন বরাবর যত বেশি সম্ভব টেলিগ্রাম পাঠান।

বিভিন্ন ব্যাক্তি ও দলের পক্ষ থেকে সিনেটর, কংগ্রেস সদস্য এবং জাতিসংঘের প্রতি অসংখ্য চিঠি ও আবেদন পাঠানো হয়েছে।

তহবিলঃ
ব্যক্তি পর্যায়ে সদস্যরা বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য খোলা মনে অবদান রেখেছেন। ব্লুমিংটন, ইন্ডিয়ানায় একটি বৃহদাকার তহবিল সংগ্রহ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ সংগ্রহের জন্য শরতের শুরুতে একটি কনসার্টের পরিকল্পনা গৃহিত হয়েছে। আপনি যদি নিজ শহরে এরূপ কোনো কনসার্টের আয়োজনে আগ্রহী থাকেন তবে অনুগ্রহপূর্বক আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। অক্সফামের পক্ষ থেকেও তহবিল সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে। আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পূর্ব ল্যানসিংঃ
বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ, মিশিগানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তারা সিম্পোজিয়াম, পশ্চিম পাকিস্তানকে সাহায্য বন্ধের লক্ষ্যে আমেরিকান সিটিজেনদের স্বাক্ষর সংগ্রহ এবং তাদের মাধ্যমে সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানদের কাছে চিঠি ও টেলিগ্রাম পাঠানোর মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এছাড়াও ছিল বাংলাদেশের উপর একটি ৪০ মিনিটের টেলিভিশন প্রোগ্রাম, দাতব্য ডিনার, ক্যাম্পাসে অনুদান কেন্দ্র এবং স্বাক্ষর সংগ্রহ। শপিং সেন্টারেও অনুদান কেন্দ্র খোলা হয়।

ডক্টর নিকোলাস, মিসেস মার্থা নিকোলাস এবং ডক্টর আলাভির লেখা প্রবন্ধ সংবাদপত্রে ছাপা হয়। রেডিও প্রোগ্রাম এবং সংবাদপত্রের মাধ্যমে অনুদান প্রদানের জন্য আহ্বান জানানো হয়। আমেরিকান সাহায্যের প্রতিবাদে ফ্যাকাল্টির চিঠি (২,০০০), বাংলাদেশ, কংগ্রেসে কাগজপত্র বিলি, রাজ্য রাজধানীর সিঁড়িতে প্রতিবাদ সভা হয়। চার্চ, সার্ভিস ক্লাব (যেমন রোটারী প্রভৃতি), শান্তি পরিষদ, ছাত্রদের আবাসস্থল প্রভৃতি জায়গায় বাংলাদেশ বোতাম এবং স্টিকারের বাম্পার বিক্রি হয়।
ডেট্রয়েটঃ
আজিজুল এইচ খন্দকারের প্রতিবেদন অনুযায়ীঃ

৩০ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত ডেট্রয়েট নদী তীরের আদিবাসী উৎসব স্থলে আয়োজিত ভারতীয় মেলায় একটি বাংলাদেশী বুথ দাঁড়া করানো হয়। কমিটি অফ দ্যা কনসার্নড(অ্যান আকবর), বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ (মিশিগান) এবং বাংলাদেশ অ্যাসোশিয়েশন অফ আমেরিকা (ডেট্রয়েট) থেকে আসা ৫০ জন ভলান্টিয়ার মানুষের কাছে বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির বর্ণনা দেয়, অনুদান গ্রহণ এবং গালাঘার সংশোধনীর স্বপক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ করে। ১৩,০০০ এর উপর স্বাক্ষর সংগৃহীত হয়। ভারতীয় মেলাটি থেকে প্রাপ্ত সমস্ত আয় শরণার্থীদের সাহায্যকল্পে পাঠানো হয়। মেলার বাংলাদেশী বুথটিতে মাঝেমধ্যেই পশ্চিম পাকিস্তানী দুর্বৃত্তরা আক্রমণ করে শান্তিভঙ্গের চেষ্টা চালায়, তবে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

৭ জুলাই ইউনিভার্সিটি অফ উইন্ডসর, অন্টারিওতে বাংলাদেশের পক্ষে এক সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা হয়। এর আগ্রহী শ্রোতা সংখ্যা আয়োজকদের আশাকেও ছাড়িয়ে যায়। সংবাদপত্রের কর্মীরাও এতে উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিকেএলডব্লিউ-টিভি সিম্পোজিয়ামের রাত্রে কর্মসূচিটির উপর একটি পর্যালোচনা প্রদর্শন করে। পরের দিন উইন্ডসর স্টার উইকএন্ড ম্যাগাজিন তার বিশেষ প্রতিনিধি আরনেস্ট হিলকে পূর্ব বাংলার শরণার্থীদের সম্পর্কে সরাসরি খবর সংগ্রহ করার দায়িত্ব দিয়ে পাঠায়। তিনি ৩১ জুলাই এর উইকএন্ড ম্যাগাজিনে ৯ পৃষ্ঠার এক প্রবন্ধের মাধ্যমে তার প্রতিবেদন তার তুলে ধরেন।

অহাইওঃ ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল

অহাইও থেকে বি চন্দ্রশেখরের প্রতিবেদনঃ
আমরা একথা জানাতে গর্ব বোধ করছি যে কলম্বাসে ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছে।

২৯ জুলাই জনা পনের আগ্রহী ব্যক্তি, প্রধানত অহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র এবং শিক্ষক, একত্রিত হয় বাংলাদেশে চলমান শোকাবহ ঘটনাবলী সম্পর্কে আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে তা স্থির করতে। এই প্রথম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা আরেকটি বৃহদাকার সভার আয়োজন করি। ৫ আগস্ট হওয়া এই সভাতে সমাজের আরো অনেক স্তর থেকে প্রায় ৬০ জন মানুষ অংশগ্রহণ করে এবং এই সভাটিই আমাদের সংগঠনটির জন্ম দেয়। অক্সফোর্ড, অহাইও এর ডক্টর জে কে ভট্টাচার্য কে আমরা আমাদের সভার প্রধান বক্তা হিসেবে পেয়ে নিজের ভাগ্যবান মনে করি। তিনি বাংলাদেশের পক্ষে খুবই সক্রিয়ভাবে তাঁর কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন এবং অনুরূপ আরো অনেক সংগঠনের সাথেও যুক্ত আছেন। বেশিরভাগ অংশগ্রহণকারীই কোনো না কোনো কমিটিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। সেদিক থেকে দেখলে সভাটি বেশ ভালোভাবেই সফল হয়েছে।
আমরা ইতোমধ্যেই পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদান বন্ধের জন্য প্রসিডেন্ট এবং কংগ্রেস সদস্যদের আহবান জানিয়ে একটি স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা করেছি। স্থানীয় একেশ্বরবাদী এবং ক্যাথলিক চার্চদের প্রতি আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় কংগ্রেস সদস্যদের কাছে গালাঘার সংশোধনীর পক্ষে সমর্থন প্রদানের আহবান সম্বলিত শতাধিক টেলিগ্রাম পাঠানো হয়েছে। কলম্বাসের বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রদর্শন ও তথ্য কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গৃহিত হয়েছে। শরণার্থীদের সাহায্যকার্যে ব্যবহারকল্পে রেডিও সংগ্রহের জন্য শুরুতে স্থানীয় চার্চ গ্রুপগুলো হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। একই উদ্দেশ্যে রেডিও এবং টেলিভিশনের জন্য পাবলিক সার্ভিস স্পট তৈরীও পরিকল্পনাধীন আছে।
এই মুহূর্তে ৩টি প্রধান কমিটি ক্রিয়াশীল আছে। ১- ত্রাণকার্য, ২- প্রচার এবং তথ্য, ৩- অনুদানমূলক অনুষ্ঠান, বৃহদাকার সভা ইত্যাদি।

এদের ঠিকানা হলঃ
ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল
পিও বক্স-৩০৩৫
কলাম্বাস, অহাইও ৪৩২১০

অ্যারিজোনাঃ ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গলঃ

অ্যারিজোনা থেকে জন মারকৌলিস লিখেছেনঃ
আয়রিজোনার টেম্পে তে আমরা ‘ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল’ এর একটি শাখাদল গঠন করেছি। এখনো পর্যন্ত আমরা একটি প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করেছি। এছাড়াও আমরা ফিনিক্সের ফেডারেল ভবনের সামনে রাত্রিযাপন করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল এলাকার মানুষজনদের এ বিষয়ে সচেতন করে তোলা কারণ স্থানীয় পত্রিকাগুলো এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা খুব একটা ভাল টিভি কভারেজ পেতে ব্যর্থ হই। সংগঠন হিসেবে আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি আমেরিকান সাহায্য বন্ধের দাবী জানাই এবং এশিয়াতে অবস্থানরত আমেরিকান সেনাদের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার অভাবী মানুষদের কাছে খাদ্য এবং ওষুধ-পত্র পাঠানোর আহবান করি। এখনো পর্যন্ত আমরা ১০০ আমেরিকান ডলার সংগ্রহ করেছি যা ইউনিসেফের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
টেম্পে এবং ফিনিক্সের শান্তি কেন্দ্রসমূহ, শান্তি ও ন্যায়ের ক্যাথলিক কেন্দ্র, ডব্লিউআইএলপিএফ এবং ইউনিসেফ মিলে আমাদের এই দলটি গঠিত। সেপ্টেম্বরে আমরা পূর্ব বাংলার অবস্থার উপর একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করতে যচ্ছি। দলের ঠিকানাঃ
ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল
১৪১৪, এস ম্যাকঅ্যালিস্টার
টেম্পে, অ্যারিজোনা

মিলওয়াউকি, আগস্ট ১২, ১৯৭১

মিলওয়াউকি শান্তি কার্যক্রম কমিটি থেকে রন ডিনিকোলা লিখেছেনঃ মঙ্গলবার রাতের সভাটিকে তুলনামূলকভাবে সফল বলা চলে। এতে ২০ জনের উপস্থিতি ছিল যার মাঝে ছিল ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ক্লাবের কয়েকজন মারকুয়েট ভারতীয় ছাত্র।

আমরা এই ২০ জনের দলটিকে দুভাগে বিভক্ত করি। একটি কাজ করবে ত্রাণসাহায্যের ক্ষেত্রে, অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত বড় দলটি রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং সচেতনতার ভার। আগামী মঙ্গলবার রাত ৮টায় আমাদের দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে যার মূল বিষয় হবে একটি অভ্যন্তরীণ কর্মশালা। এই সভাটি হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাধ্যমে আমরা আমাদের উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বোচ্চরূপে সচেতন করে নিতে পারব। আমি আশা করছি আপনি বা বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ(বিডিএল) এর একজন প্রতিনিধি এতে উপস্থিত থাকতে পারবেন।

বুধবারে আমরা একটি প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করে জানিয়ে দিই যে পূর্ব পাকিস্তান বিষয়ক ত্রাণসাহায্য ও সচেতনতা গড়ে তোলার পদক্ষেপসমূহ মিলওয়াউকি এর শান্তি কার্যক্রম কমিটিতে কেন্দ্রীভূত করা হবে। আমরা স্থানীয় জনগণের সহায়তাও কামনা করি। শুধুমাত্র একটি টিভি স্টেশন, চ্যানেল ৬ এ আমাদের এই প্রেস কনফারেন্স ভাল কভারেজ পায়।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কানাডা

টরেন্টো
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন, টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে ৫ আগস্ট ১৯৭১ এর সন্ধ্যা ৭:৩০ থেকে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ‘সঙ্কটপূর্ণ বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বক্তাদের মধ্যে ছিলেনঃ
১) মি অ্যান্ড্রু ব্রিউইন, কানাডিয়ান সংসদ সদস্য
২) মি ফ্রেডেরিক নোসাল, সহযোগী সম্পাদক, টরেন্টো টেলিগ্রাম
৩) মি পল ইগনাটিফ, পরিচালক, ইউনিসেফ টরেন্টো
৪) মি লেসলি স্মিথ, খাদ্য ও ওষুধ পরিচালকের দপ্তর, জাতীয় স্বাস্থ্য ও সমাজসেবা বিভাগ

মি ব্রিউইন ছিলেন ৩ সদস্য বিশিষ্ট কানাডার সংসদীয় প্রতিনিধিদলের একজন যারা ভারত ও পাকিস্তানের সরকারের আমন্ত্রণে সাম্প্রতিকসময়ে ভারত ও বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে এসেছেন। তিনি তার পূর্বতন অভিমতই পূনর্ব্যক্ত করেন এই বলে যে পূর্ব বাংলায় যেকোনো রাজনৈতিক সমাধানের ক্ষেত্রে অবশ্যই গত ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রাপ্ত জনমতের প্রতিফলন থাকতে হবে।

মি ইগনাটিফ ভারতে অবস্থানরত শরণার্থীদের বিষয়টিকে ‘সঙ্কটের মধ্যে সঙ্কট’ হিসেবে অভিহিত করে বৃহদাকার ত্রাণকার্য পরিচালনার উপরে জোর দেন।

মি স্মিথ শরণার্হীদের দুরবস্থার প্রত্যক্ষ ববরণ দেন। তার তৈরী একটি ডকুমেন্টারিও এসময় দেখানো হয়।

ক্যালিফোর্নিয়াঃ জোয়ান বিয়াজের সাহায্য সংগ্রহাক কনসার্ট
বিখ্যাত লোকসঙ্গীত গায়িকা জোয়ান বিয়াজ ২৪ জুলাই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের ৭০ লাখ শরণার্থীদের সাহায্যকল্পে এক কনসার্টের আয়োজন করেন। সান ফ্রান্সিস্কোর উপকূলীয় এলাকা থেকে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ এই কনসার্টে যোগ দেয়। এই কনসার্টটি মিসেস রানু বসু এবং স্ট্যানফোর্ড ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল। আমেরিকান লীগ অফ বাংলাদেশের সদস্যগণ, পিপলস ইউনিয়ন এবং অহিংসার উপর গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি এই কনসার্টের প্রচারণা ও আয়োজনে ব্যাপক সাহায্য করে।

কনসার্টে আমেরিকান লীগ অফ বাংলাদেশ এবং স্ট্যানফোর্ড ভারতীয় ছাত্র সমিতির সদস্যগণ ৮ হাজারেরও বেশি লিফলেট বিলি করে যা বাংলাদেশে চলমান গণহত্যায় আমেরিকান সহযোগিতার কথা ফাঁস করে দেয়। এই লিফলেটে নৃশংস পাকিস্তানী সামরিক জান্তাকে সাম্প্রতিককালে পাঠানো আমেরিকান অস্ত্রবাহী জাহাজের কথা এবং এরূপ আরো চালান পাঠাবার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের অনড় অবস্থানের কথা তুলে ধরা হয়। মিসেস জোয়ান বিয়াজ হ্যারিস কর্তৃপক্ষের এহেন অনৈতিক ও লজ্জাজনক নীতির প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং আমেরিকান সরকার যেন ইসলামাবাদের শোষক সরকারকে কোনরূপ সহায়তা না করে তার পক্ষে একটি স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানে যোগ দিতে সমবেত ১২ হাজার দর্শককে অনুরোধ জানান। বেশ কয়েক হাজার মানুষ এতে অংশ নিয়ে স্বাক্ষর প্রদান করে।

নিউ ইয়র্ক ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল
ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল (নিউ ইয়র্ক) আগস্টের ১৪ তারিখে নিউ ইয়র্ক শহরে বাংলাদেশ লীগ অফ আমেরিকার সাথে সম্মিলিতভাবে এক শোভাযাত্রার আয়োজন করে। জাতিসংঘ প্লাজায় মধ্য দুপুর থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলা এই শোভাযাত্রায় প্রায় ৫০০ লোক অংশগ্রহণ করে। এতে বাংলাদেশ লীগের ড আলমগীর, পশ্চিম পাকিস্তানের দুজন উল্লেখযোগ্য দুজন বিদ্বান ব্যক্তি ড ইকবাল আহমেদ ও ইজাজ আহমেদ এবং কুয়াকার প্রজেক্টের মি এস জে আভেরি বক্তৃতা রাখেন।

বক্তৃতাগুলোর পর বাংলাদেশ সঙ্কটের উপর বেশ কিছু ছোট ছোট কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

র‍্যালিতে বিভিন্ন প্রচারকার্যে ব্যবহার্য পুস্তিকার পাশাপাশি ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল থেকে প্রকাশিত ৮০ পৃষ্ঠার একটি পুস্তিকাও প্রকাশিত হয়। ১৯৪৭ থেকে পাক-বাংলাদেশ সংঘাতময় সম্পর্কের একটি ঐতিহাসিক সারসংক্ষেপ এতে তুলে ধরা হয়। ফ্রেন্ডস অফ ইস্ট বেঙ্গল(নিউ ইয়র্ক) এর ঠিকানাঃ ১৩ ই, ১৭ ৭ম তলা, নিউ ইয়র্ক। নিউ ইয়র্ক ফোন(২১২) ৭৪১-০৭৫০।

ঘোষণা
১) আমরা এই নিউজলেটারের সাথে নমুনা কপি হিসেবে বাংলাদেশ জরুরি সমাজসেবা আবেদনের ইশতেহার সংযুক্ত করছি। সম্ভাব্য দাতাদের মধ্যে বিলির জন্য আপনার কতগুলো দরকার অনুগ্রহ করে জানাবেন।
২) যারা আমাদের কাছে “বাংলাদেশ কেন” নামক পুস্তিকাটি চেয়ে আবেদন করেছেন, তাদের কাছ থেকে আমরা আরেকটি সপ্তাহ সময় চেয়ে নিচ্ছি তা ডাকের মাধ্যমে আপনাদের কাছে পাঠিয়ে দেবার জন্য।
৩) অনুগ্রহ করে আপনাদের দলগত কার্যকলাপের প্রতিবেদন আমাদের কাছে পাঠান। আমরা তা নিউজলেটারে ছাপাবার ব্যবস্থা করব। স্থানীয় সংবাদপত্র থেকে পেপার ক্লিপিংও পাঠাতে থাকবেন।
৪) আমরা প্রচুর পরিমাণে “বাংলাদেশে পাকিস্তানি গণহত্যা বন্ধ কর” শীর্ষক বাম্পার স্টিকার পুনর্মুদ্রণ করিয়েছি। আমরা খরচার বিনিময়ে সেগুলো বাংলাদেশ গ্রুপগুলোর কাছে হস্তান্তর করব।

বাংলাদেশ পোস্টাল স্ট্যাম্প

বাংলাদেশ ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে আটটি পোস্টাল স্ট্যাম্পের একটি সেট বের করা হয়েছে। এই পুরো সেটটি ২৬৪ ডলারে আন্তসরকার ডাক টিকেট সংক্রান্ত কর্পোরেশন, পিও বক্স ২৫৯, সিডারহার্স্ট, নিউ ইয়র্ক ১১৫১৬ এ পাওয়া যাবে। তহবিল সংগ্রহের কাজে এসব ডাকটিকেট ব্যবহার করতে বাংলাদেশ গ্রুপগুলোকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।