শিরোনামঃ অঙ্গীকার প্রতিপালিত হয়েছে
সংবাদপত্রঃ বাংলাদেশ ভলিউম ১ : নং ১১
তারিখঃ ৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
এ ওয়াদা পূর্ণ হবারই
পাকিস্তান সরকার কর্তৃক বন্ধ হবার পর কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাকি পড়া সকল পেনশন বাংলাদেশ সরকার শোধ করে দিয়েছে।
৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় কবির নিজ বাসস্থানে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু জাকজমকপুর্ন অনুষ্ঠানে ভারতে বাংলাদেশের মাননীয় হাই কমিশনার মিস্টার এম হোসেন আলী, ২১০০০০ রূপীর একটি চেক কবির বাকি পড়া পেনশনের অংশ হিসেবে তার নিকট হস্তান্তর করেন। যখন বাংলাদেশের হাইকমিশনার মন্ত্রীপরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছিলেন, তখন পাকিস্তান সরকার পুনরায় পেনশন অফারটি চালু করেন, শুধুই কবির বড় ছেলে কাজী সব্যসাচীর দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার জন্য।
মিস্টার আলী তার সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন যে, সে সেখানে বাংলাদেশের ৭৫ মিলিয়ন জনতা ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা দেওয়ার জন্য উপস্থিত আছেন। তিনি বলেছিলেন, “আমাদের সম্পদ খুব সীমিত। কিন্তু আমরা মুক্ত চিন্তা এবং মানবিক মূল্যবোধের দরজা খোলা রাখার চেতনা লালন করি।
চমৎকার বাংলায় মিস্টার আলী বলেন, বাঙালি জাতির জাতীয় বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করার সময় তিনি লক্ষ্য করেন যে যখনি জাতীয় জীবন শৃঙ্খলের অধীনে ন্যাস্ত হয়েছে, বাঙালিরা তখনি নানাভাবে এই শেকল ভাঙার চেষ্টা করেছে। তিনি আরো বলেন, কবি, ব্রিটিশ শাসনামলে প্রথম ব্যাক্তি ছিলেন যিনি তার মুষ্টিবদ্ধ হাত তোলেন স্লোগান দিয়ে যা কবি চাইতেন, যার তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারা আজ বন্দুক হাতে তাদের মাতৃভূমির জন্য মুক্তিযুদ্ধে রত। তিনি সবশেষে বলেন, বন্দুকের গুলিতে মানবতার শত্রুদের খুব দ্রুতই খতম করা হবে।