শিরোনাম | সংবাদপত্র | তারিখ |
ঢাকায় আবার গণহত্যা | অভিযান ১ম বর্ষঃ ১ম সংখ্যা |
১৮ নভেম্বর, ১৯৭১ |
ঢাকায় আবার গণহত্যা!
গত ১৩ই নভেম্বর ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরে পাকিস্তানের জঙ্গীচক্র পুনরায় কার্ফিউ জারী করে। মুক্তিসংগ্রামীদের আক্রমণে নাজেহাল হয়ে জঙ্গীশাহী দুটো শহরেই ২৫শে মার্চের কায়দায় জনসাধারনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কোনো একটি দালালী সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মুক্তিসংগ্রামীদের নামে একটি তালিকা প্রস্তুত করে তারা বাড়ী বাড়ী তল্লাসী চালায়। প্রকাশ তাদের না পেয়ে পাক সৈন্যরা বহুসংখ্যক বিরীহ লোককে হত্যা করে, অনেকের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায় এবং বেশ কিছুসংখ্যক নির্বিরোধ নাগরিক ও স্কুল কলেজের ছাত্রকেও ধরে নিয়ে যায়। ফলে কার্ফিউ তুলে দেবার প পরই জনসাধারণ নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকা শহর ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেন। এবারকার অভিযান শত্রুদের প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। সরাসরি সংঘর্ষে দু’পক্ষেই প্রচুর হতাহত হয় বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে মুক্তিসংগ্রামীরা বহু এলাকাকেই শত্রুকবলমুক্ত করেছেন। নোয়াখালীতে একটি এক-৮৬ পাকিস্তানী জেট প্লেনো মুক্তিবাহীনীর আক্রমনে ধ্বংস হয়েছে।
পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন যে, জঙ্গীশাহী বিশ্বজনমতকে ধাপ্পা দেয়ার জন্যে ২৭শে ডিসেম্বর ইসলামাবাদে জাতীয় পরিষদের যা গোঁজামিল অধিবেশন বসানোর প্রচেষ্টা চালিয়েছে সেটা পুরোপুরি বাঞ্চাল করে দিয়ে তার আগেই বাংলাদেশের সর্বত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন চালু করার জন্যে মুক্তিবাহিনী যে দুর্বার অভিযান চালিয়েছেন ঢাকার এই সরাসরি সংঘর্ষ তারই একটি অংশ।