শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
১৬০। জেনারেল নিয়াজীর সীমান্ত পরিদর্শন | দৈনিক পাকিস্তান | ৯ জুলাই, ১৯৭১ |
জেনারেল নিয়াজির সিলেট সীমান্ত পরিদর্শন
গোটা সিলেট জেলা থেকে দুষ্কৃতকারীদের
বিতাড়িত করা হয়েছে
ইষ্টার্ণ কম্যান্ডের লেঃ জেঃ এ, এ, কে, নিয়াজী গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট এলাকা সফরকালে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত বরাবর প্রতিরক্ষা কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী পরিদর্শন করেন।
তিনি জিওসি সমভিব্যহারে এই সফরে যান বলে এপিপির খবরে প্রকাশ।
সীমান্তে যাতে আর কোন রকম অনুপ্রবেশ না ঘটে বা কোন রকম হামলা না চলে তারই জন্যে এই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত ঘাঁটিগুলি সবই সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জেনারেল নিয়াজী সৈন্যদের সাথে ঘরোয়াভাবে কথাবার্তা বলেন এবং তাদের কুশল জানতে চান। তিনি তাদেরকে অত্যন্ত ভালো অবস্থায় দেখতে পান।
স্থানীয় কমান্ডার জেঃ নিয়াজীকে জানান যে, বেসামরিক জনসাধারণের সক্রিয় সহযোগিতায় সারা সিলেট জেলা থেকেই গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের বিতাড়িত করা হয়েছে। কমান্ডার জানান, ভারতে ট্রেনিংপ্রাপ্ত কিছু দুষ্কৃতকারী মাঝে মাঝে সীমান্ত পথে ভিতরে ঢুকে প্রধানতঃ আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদেরকে যথোপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে দুষ্কৃতকারীরা যে নাশকতামূলক তৎপরতা চালাবার চেষ্টা করে স্থানীয় জনসাধারণ ও রাজাকাররা অত্যন্ত সাফল্যের সাথে তা প্রতিহত করে বলে কম্যান্ডার জানান।
জেনারেল নিয়াজী সিলেট থেকে হেলিকপ্টারে জৈয়ন্তপুর যান এবং সেখানে তিনি সংবর্ধনা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তাকে জানান হয় যে ৭ হাজার গৃহত্যাগী মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে এখানে ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১২শ’ লোক রয়েছে। অনুমোদিত পথে ফিরে আসার ব্যাপারে ভারত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় এদের বেশিরভাগই অননুমোদিত পথে পাকিস্তানে ফিরেছে।
সংবর্ধনা কেন্দ্রের কাছে দরবান্তপুরে এক বিরাট জনতা নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর, পাকিস্তান পায়েন্দাবাদ ও কায়েদে আজম জিন্দাবাদ ধ্বনি দিয়ে জেঃ নিয়াজীকে স্বাগত জানায়।
এরপর জেঃ নিয়াজী শ্রীমঙ্গল এলাকায় কুশিয়ারা নদীতে শেওলামুখ ফেরী পরিদর্শন করেন।
শ্রীমঙ্গলে স্থানীয় কম্যান্ডার জেনারেল নিয়াজীকে জানান যে এই এলাকায় চা বাগানগুলিতে কোন রকম বল প্রয়োগের হুমকি প্রদর্শন করা হয়নি। তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা অবশ্য চা বাগানগুলির দক্ষ শ্রমিকদের ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলে তাদেরকে কাজ থেকে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করে। এই দুষ্কৃতকারীরা স্বভাবতই ভারতের ট্রেনিং শিবির থেকে এসেছিল। ভারত তাদের সীমান্তে এইসব শিবির স্থাপন করেছে।
সীমান্ত এলাকায় যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভারতীয় বিস্ফোরক দ্রব্যাদি পাওয়া গেছে সেগুলিও জেনারেল নিয়াজীকে দেখানো হয়।
জেনারেল নিয়াজী সন্ধ্যায় ঢাকা ফিরে আসেন।