আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গভর্নর, ষ্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান, এস, ইউ দুররানীর বিবৃতি
সূত্রঃ ইন্টারন্যাশনাল মনিটরী ফান্ডঃ প্রেস রিলীজ
তারিখঃ ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
.
বার্ষিক যৌথ আলোচনায় স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তান এবং পাকিস্তান ত্রান তহবিলের মাননীয় গভর্নর এস ইউ ডুরান্টের বিবৃতি
আমাদের দুজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাগত বক্তব্য এবং বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এই প্রতীয়মান হয় যে আমরা খুব কঠিন সময়ে মিলিত হয়েছি। ব্রিটন ঊডস ইন্সটিটিউটের বিচক্ষণতা এবং নেতৃত্ব এই অস্থির পরিবেশে স্বস্তি বয়ে আনবে। বৈশ্বিক বানিজ্য এবং বিনিময়ে সঙ্কট দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। এটি সম্ভবত শুধুই নাটকীয় তা নয় , কিছুক্ষেত্রে আকস্মিক ও, যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কার্যকলাপ আমাদের বছরের পর বছর ধরে পুঞ্জীভূত সমস্যার দিকে নতুন ভাবে আলোকপাত করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেঃ বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার অবনতি, প্রকৃত অর্থে আন্তর্জাতিক পুজিবাজারের প্রতিষ্ঠিত নিয়মনীতির অভাব, অর্থ / বিনিময় সমন্বয় প্রক্রিয়ায় সুনির্দিস্ট ভারসাম্যের অভাব, বিনিময় হারে অনমনীয়তা যা মুল্য মাত্রা এবং ক্রয় ক্ষমতার আপেক্ষিক পরিবর্তনের সাথে সমন্বয় রাখতে পারছে না, এবং সম্ভবত সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হচ্ছে যে কোন সময়ের চেয়ে জনবহুল এই পৃথিবীতে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য।
আন্তর্জাতিক বানিজ্য এবং বিনিময় ব্যবস্থায় বিদ্যমান বর্তমান অনিশিচয়তা এবং ভাঙ্গন দূর করতে আমাদের এখনই সুদৃঢ় পদক্ষেপ হাতে নিতে হবে। উন্নয়নশীল দেশে এর বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে উক্ত ফান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ করেছেনঃ এসব উদ্ভুত সমস্যাসমুহ হতাশাজনক ,বিশেষ করে এই কারণে যে যুক্ত্ররাষ্ট্র এবং তার প্রধান ব্যবসায়িক অংশিদারদের মাঝে সমন্বয়জনিত সমস্যায় এসব দেশের কোনভাবেই কোন ভূমিকা নেই। উক্ত সমস্যা সমাধানে , সমূহ বিপদ এবং দীর্ঘসুত্রিতা পরিহার করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয়ের সুপারিশের সাথে আমরা দৃঢ় সম্মতি জানাচ্ছি, কারণ দীর্ঘসূত্রিতার ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে। যদি মুদ্রা বৈষম্য অথবা আর্থিক চ্যুতির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তবে যে সব উন্নয়ন প্রকল্প বর্ধিষ্ণু পুঁজির প্রবাহ এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে অনুমিত সেগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিশ্ব বানিজ্য এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় , স্বল্প –উন্নত দেশসমূহের ভূমিকা হয়তো তুলনামূলক ভাবে কম , তবুও বিশ্ব-ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার ভাষণেও আমরা শুনেছি, পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের ভার তাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক আর্থিক এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ধারাবাহিক ব্যবস্থাপনার সন্তোষজনক অগ্রগতি সম্পর্কে তাদের আশঙ্কা বাস্তব এবং তাদের অংশগ্রহণ অবশ্যই সক্রিয়, এমনকি নিবিড় হওয়া প্রয়োজন। যেখানে উন্নত দেশসমূহ সীমিত কিছু গোষ্ঠীর মধ্যে থেকে নিজেদের পার্থক্যগুলোর সমাধানে পৌঁছাতে চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে এসব বিশেষায়িত ফোরামে এ ধরনের সমস্যার সমাধানের প্রচেষ্টা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। Bretton Woods institutions – এ আমাদের একটি বিশ্ব জনগোষ্ঠী আছে এবং এটাই আশা করা হচ্ছে যে উক্ত সমস্যার সমাধানের প্রক্রিয়া তাদের মধ্য দিয়েই খুঁজে পাওয়া যাবে।
আমাদের উপর যে সঙ্কট সেটি এককভাবে বিনিময় হার পুননির্ধারণের মাধ্যমে করা সম্ভব নয় , যদিও যেকোন ধরনের নিষ্পত্তির জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এছাড়া , এই মজুদ নিষ্পত্তি বিষয়ে পুনর্বিবেচনা এবং উন্নত দেশসমূহের আর্থিক নীতি সমন্বয় সাধন প্রয়োজন। উন্নয়নশীল দেশের জন্য এই মুহূর্তে যা প্রয়োজন তা হলো সাধারণভাবে স্বীকৃত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক সংশ্লিষ্ট প্রধান নিয়মনীতিসমুহ পুনঃ-প্রতিষ্ঠা এবং তার সফল প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ । বিশেষত , মুল্য নির্ধারণ ব্যবস্থায় পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে সমতা আনয়ন অত্যন্ত জরুরি যা সম্ভবত মুল্য নির্ধারণ ব্যবস্থা চুক্তির সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাবে। এ ধরনের ভাসমান মুদ্রানীতি যদিও নিরাপদ নয় , তবে তহবিল রক্ষায় আন্তরজাতিক তত্বাবধানে বিশেষ ক্ষমতা প্রদানের মাধ্যমে অনুমতি প্রদান করা যেতে পারে। যদি মূদ্রার মূল্যমান একবার নির্ধারন করা যায় তবে , একটি নির্দিষ্ট সীমায় বিশেষ করে “Articles of Agreement” কর্তৃক নির্ধারিত সীমায় পরিবর্তিত হবে। ফান্ডের জন্য রিজার্ভ তৈরি করা এবং এর কার্যাবলী নির্ধারণ করা অত্যন্ত জরুরি যা এই মুহূর্তে ভ্রুনাবস্থায় বিদ্যমান।
যতক্ষণ না পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে , আর্থিক উন্নয়নের সম্ভাবনাসমূহ মারাত্মকভাবে বিপদগ্রস্ত থাকবে। মার্কিন সহায়তার ১০ শতাংশ হ্রাস একটি অশনি সঙ্কেত, যদি সঠিক “Burden Sharing” এর উপায় উদ্ভাবন করা না হয় তবে তা অন্যান্য দাতাগোষ্ঠীর আগ্রহকে ব্যহত করবে। OECD এর পৃষ্ঠপোষকতায় অনুদান কার্যক্রম উন্নয়নের যে দ্বার উন্মোচন হয়েছিল তার গতি আকস্মিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ঋণ সংক্রান্ত সমস্যাসমূহ সমাধানের জন্য, অনুদান কার্যক্রমের উন্নয়ন অতি আবশ্যিক নাহলে যা একটি নতুন সমস্যার সূত্রপাত ঘটাবে । যখন অনুদান বিষয়ে বিদেশী বিশেষজ্ঞগণ দাতাগোষ্ঠী এবং অনুদান গ্রহীতাগোষ্ঠীর সাথে নতুনভাব অর্থনৈতিক সম্পর্ক তৈরি এবং অর্থনৈতিক মানদণ্ড নির্ধারণের ব্যাপারে কঠোরভাবে জোর দিচ্ছেন সেখানে অর্থনীতি বহির্ভূত বিবেচনাসমূহ প্রয়োগ করা হচ্ছে। অতপর আমাদের উপর আন্তর্জাতিক মুদ্রানীতির প্রয়োগের ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার দায়িত্ব বর্তায়। আন্তর্জাতিক উন্নয়নে অর্থায়ন পরিকল্পনা যা বিশ্ব ব্যাংকের গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত তার কার্যপদ্ধতি এবং বিষয়সমূহের প্রতিও আমাদের গভীর দৃষ্টিপাত করতে হবে।
যেসব অনুমানের ভিত্তিতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া ঋণের বোঝায় ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ সমূহের অভ্যন্তরীণ ঋণ সমস্যা সমাধানের জন্য এবং পাশাপাশি বিগত বছরসমূহে নানা দেশে ঋণ বহুপাক্ষিক পুনঃতফসিলিকরণ প্রক্রিয়ার অভিজ্ঞতার আলোকে যে কাজ করা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করার জন্য আমরা ব্যাংক কর্মকর্তাদের স্বাগত জানিয়েছি। যদিও এখন অত্যাধিক ঋণের বোঝা সৃষ্টির পেছনে যেসব জটিল কারণ বিদ্যমান সে সম্পর্কে আমাদের ভালোই ধারনা আছে , তবে এখনো পর্যন্ত পিয়ারসন কমিশন এবং জাতিসঙ্ঘের অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দলকর্তৃক প্রদত্ত সুপারিশসমূহের বাস্তবসম্মত দীর্ঘমেয়াদী প্রায়োগগিপ্রক্রিয়া নিয়ে কোন কাজ হয়নি। এ বিষয়ে তাদের কাজের ধারাবাহিকতায় , আমরা আশা করছি যে আমাদেরত প্রতিষ্ঠান এই ক্ষেত্রে জরুরী ভিত্তিতে আর্থিক এবং সাংগঠনিক উভয় দিকেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য ঋণ পাবার যোগ্য রাষ্ট্রসমূহকে ঋণ প্রদান সংক্রান্ত যে বিদ্যমান ধারণা সেটি বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত হচ্ছে। এখন বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশসমূহ এমন একটি অবস্থায় উপনীত হয়েছে যে , ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ যেখানে অসম্ভব এবং এখনই ব্যাংকসমূহের লোন কার্যক্রম সংক্রান্ত নিয়মাবলী স্থিতিশীল করার শ্রেষ্ঠ সময়। একটি স্থিতিশীল পোর্টফোলিও এটাই নিশ্চিত করে এসব দেশসমুহ থেকে সম্পদ বিশ্ব ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাহিত হবে। স্পষ্টত এটি এক্ট অগ্রহণযোগ্য অবস্থা এবং যা কিছু কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন করে যে ঠিক কতদিন পর্যন্ত ব্যাংক নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে ঋণদানে নমনীয়তা প্রদর্শন করবে।
ব্যাংক এবং তার সদস্যসমূহ বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের IDA অন্তর্ভুক্ত “ The Soft Window”- প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্রে দেশগুলোর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এতে অস্থিরতার নতুন ধরনের কিছু উপাদান যুক্ত হয়েছে, কারণ প্রতিবছর IDA তার ঋণ শোধ করার জন্য তাগাদা দিতে থাকে। এটি এমন একটি চর্চা যাকে বেষ্টন করে আছে নানা রাজনৈতিক সমস্যা এবং ফলশ্রুতিতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অনিশ্চয়তার পুনরাবৃত্তি ঘটছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থনীতিতে। আমাদের অবশ্যই আরো সুনিশ্চিত এবং সমাধানের উজ্জ্বল পথ খুঁজে বের করতে হবে। যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে , বিশেষ অধিকার সংরক্ষন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এ যাবতকালে একটি অন্যতম আশাপ্রদ উদ্যোগ। আন্তর্জাতিক আর্থিক /মুদ্রা ব্যবস্থার জন্য SDR সক্রিয়ভাবে যে ভুমিকা রেখেছে সেরূপ এটিও গৌরবের সাথে কাজ করবে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে। আমরা আশা করছি যে , দ্বিতীয় মেয়াদের SDR- এ সিদ্ধান্ত গ্রহনের পূর্বেই এই বিষয়ে তহবিল বিষয়ক সকল আলোচনা সঠিক সময়ের মধ্যে সুচারুভাবে সম্পন্ন হবে।
আরেকটা নতুন সমস্যা সম্মুখে উঠে এসেছে যেহেতু বিশ্ব ব্যাংকের গ্রুপের গুরুত্ব এবং সম্মান ক্রমশ বাড়ছে যা এর সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও এর রাজনৈতিক পরিণতির মধ্যে বিরোধের সূচনা করবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এই পৃথিবী একটি অশান্ত স্থান এবং আমরা যতোই এতে সমন্বয়ের মাধ্যমে শৃঙ্খলা আনতে চাইনা কেন, সেখানে অনিবার্যভাবে এমন কিছু সময় এবং পরিস্থিতি আসবে যখন মতপার্থক্য থাকবে। বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপ এই ধরনের সমস্যাবহুল কাঠামো নিয়ে যেভাবে কাজ করছে , এবং সেইসাথে তাদের কর্মপ্রক্রিয়াকে, অবশ্যই সতর্কতার সাথে যেকোন বিশ্বাস বা আস্থাভঙ্গের সম্ভাবনা থেকে রক্ষা করতে হবে। সম্ভবত কর্মকর্তাদের প্রণীত সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক পরিণতি সম্পর্কে আরও সংবেদনশীলতা প্রয়োজন যারা শুধু একটি নির্দিষ্ট বিষয়েই দক্ষতা থাকবে না, বরং প্রতিষ্ঠানের কর্মপদ্ধতি এবং ব্যবস্থাপনাকে যথাযথভাবে রক্ষা করাও তার উদ্দেশ্য থাকবে।। বোর্ডের উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা তথা, সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যসমূহের সাথে এবং আমাদের ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তাদের মাঝে বিদ্যমান সম্পর্কের পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
আমরা আগ্রহের সাথে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সভাপতির ভাষণে শুনেছি যে তিনি বৃহত্তর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে উন্নয়ন নীতিমালার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। যদি উন্নয়নশীল দেশসমূহ এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় মনোযোগ না দেয় , তবে এই ধরনের বৃহত্তর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে যে ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় তা হলো, আভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সম্পদ এবং সাংগঠনিক দক্ষতার অভাব। দেশীয় জনশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অবকাঠামোগত সুযোগসুবিধা সৃষ্টির প্রেক্ষিতে আভ্যন্তরীণ মূলধনের স্বল্পতা অন্যতম প্রধান কারণ। এটি সম্ভবত অস্বীকার করার উপায় নেই যে উন্নয়নশীল দেশসমূহ বৈদেশিক প্রযুক্তি এবং সহায়তার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল যা তাদের নিজস্ব সম্পদের বিলিবন্টনের সাথে সংগতিপূর্ন নয়। কারন, সাধারণত , বৈদেশিক সঞ্চয় মূলত প্রকল্প ঋণ থেকে পাওয়া যায়। তাছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ মূলত বেশ বিস্তৃত, যেখানে অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের যার উৎপাদনকে আর্থিক মানদণ্ডে বিচার করা কঠিন। এই ধরণের ঋন প্রকল্পের কার্যক্রম একটি নির্দিস্ট কাঠামোতে ফেলা বেশ কঠিন। এই ধরনের সাধারণ খাত বা প্রকল্পে ঋণ সুবিধা প্রদান বিষয়ে ব্যাংক নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে এবং এর ব্যাংকের অর্থায়ন এবং প্রকল্পের উপাদান হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হতে উদ্ভুত সমস্যাসমূহ থেকে পরিত্রাণ উপায় পাওয়া যায় স্থানীয় মুদ্রার বিনিয়োগ সংক্রান্ত নির্দেশাবলীতে। এখন যা প্রয়োজন তা হলো প্রকল্পের ঋণ সুবিধা প্রদান প্রসঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যা ব্যাপকহারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য শ্রমঘন বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরো দৃঢ় করবে । আমি সুপারিশ করবো যে , সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা মূল্যায়নের মাধ্যমে অর্জিত বিশাল সাফল্য এই নিশ্চয়তা দেয় যে, ব্যাঙ্ক কর্তৃক নিয়োজিত সম্পদসমূহ প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত না হলেও শ্রমবাজারে তা গুরত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এছাড়াও ঋণ প্রদান সংক্রান্ত শর্তসমূহ এবং ব্যাংকের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া পুনর্গঠন করা অতি-আবশ্যিক যার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী বিনিয়োগের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং উৎপাদনের আরও সুষম পরিবেশ তৈরি হবে। আমরা অনুমান করতে পারি যে উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য গৃহিত সুবিশাল উদ্যোগ প্রয়োগ সময়সাপেক্ষ এবং এর জন্য প্রয়োজন এ বিষয়ে সম্যক গবেষণা এবং এই ক্ষেত্রে অন্যান্যদের মতো ব্যাংক অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে বলে আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করছি।